কেইস আইডেন্টিফিকেশন নং: ০৩-০৫.১১২ মাস্টার----------------ইসলাম বয়স: ৭ বছর গ্রাম: শিমপাড়া, মুন্সীগঞ্জ ওজন: ৪৬ পাউন্ডস শুরুর তারিখ: ১৩/১২/২০১৪ ইং
রোগীকে তার বাবা চেম্বারে নিয়ে আসেন। বাবার অভিযোগ, রোগীর পেটে গ্যাস জমে থাকে। বেশ কয়েকমাস যাবৎ পেট শক্ত হয়ে থাকে সবসময়। পরীক্ষা করেও পেটটা শক্তই পেলাম। পুরো পেটই শক্ত হয়ে আছে, তবে আকারে স্বাভাবিক। মাঝে মাঝে পেটে ব্যথা করে, ব্যাথার কোন নির্দিষ্ট সময় নেই। মৃদু ব্যথা কিন্তু অস্বস্তিকর। পায়খানা কষা, শক্ত। ৩/৪ দিন পর পর পায়খানা হয়। এ কয়দিনে পায়খানার বেগও হয় না। কয়েকমাস যাবৎ হাত ও পায়ে ক্র্যাম্প করে- বিশেষ করে পায়ের কাফে। ক্র্যাম্পিং বিশেষ করে রাত্রে দেখা দেয়। বাচ্চার ঠান্ডার কোন প্রবণতা না থাকলেও নাকে হাইপারট্রফিড নাসাল টারবিনেট পাওয়া গেলো। পেট পরীক্ষা করার সময়ই লক্ষ্য করলাম- বাচ্চার Pigeon chest।
বাবা ক্রনিক আমাশয়ের রোগী, মায়ের বাত ও ডায়াবেটিস আছে। দাদীর পালমোনারি টিউবারকুলোসিসের ইতিহাস আছে। রোগীর ৩/৪ বছর আগে একবার হাম হয় এছাড়া আর অতীতে বিশেষ কোন রোগের ইতিহাস নেই।
প্রস্রাব স্বাভাবিক তবে দুর্গন্ধযুক্ত। সহজেই ঘাম হয়, বিশেষ করে মাথায় ও পিঠে। ঘামেও দুর্গন্ধ আছে। রোগীর পিপাসা বেশি, একসাথে অনেকটুকু পানি খায়, ঠান্ডা পানি পছন্দ। খাবারও ঠান্ডা পছন্দ। দুধ পছন্দ করে এবং সেটাও ঠান্ডা করে খায়। ঘুম গভীর, তবে ঘুমের মধ্যেও যথেষ্ঠ অস্থির, সারারাত নড়াচড়া করে, বার বার পজিশন পরিবর্তন করে, তবে মূলত উপুর হয়ে শোয়া পছন্দ করে। ঘুমের মধ্যে দাঁত কাটে, কথা বলে, মুখ থেকে লালাস্রাব হয়। মিষ্টি ও নোনতা খাবার পছন্দ করে। চর্বি অপছন্দ।
বাবার কাছ থেকে রোগীর নিজের মন-মেজাজ সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হলে, জানালেন- বাচ্চা ভীষণ অস্থির প্রকৃতির। কোন এক জায়গায় স্থির থাকতে পারে না, ঘুরে বেড়াতে ও বেড়াতে যেতে খুব পছন্দ করে। কোন কথাই শুনতে চায় না। প্রচুর জেদি, যা চায় দিতেই হবে এবং বার বার নতুন নতুন পোষাক, বাইরের খাবার দিতে হবে। বাচ্চা নখ কামড়ায়। রোগী কুকুরে ভীষণ ভয় পায়, যদিও এমনিতে পশু-প্রাণী খুব পছন্দ করে।
Tub-10M/1 dose at morning
With enough conciliatory placebo for 3 weeks.
০৭/০১/১৫ তারিখে রোগী পুনরায় আসে। জিজ্ঞাসায় জানা যায়, রোগীর পেটব্যথা কয়েকদিনের মধ্যেই চলে গেছে, পরীক্ষা করে দেখলাম পেট আর আগের মতো শক্ত নেই। কষাও বেশ কম। পায়খানার শক্তভাব কিছুটা আছে, তবে এখন প্রতিদিন একবার পায়খানা হয়। ঘুমের মধ্যে কথা বলা একই রকম আছে। হাত-পায়ের খাল ধরা এ কয়দিনের মধ্যে আর হয়নি। কাজেই প্লাসিবো চালিয়ে যাওয়া হলো।
২৪/০১/১৫ তারিখে আমি চেম্বারে অনুপস্থিত থাকায়, আমার কলিগ চিকিৎসক ডা. উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্নী রোগীর প্রেসক্রিপশন করেন। রিপোর্টে জানা যায়, তিনি রোগীর মায়ের সাথে কথা বলে জানতে পারেন, রোগীর এখন আর কোন সমস্যা নেই, শুধু ঘুমের মধ্যে দাঁত কাটা এখনো একই রকম আছে। তিনি প্রেসক্রিপশন করেন-
Calc.c – 10M/1 dose at morning
With enough placebo for 2 weeks.
০৮/০৪/১৫ তারিখ পর্যন্ত রোগী কয়েকবার চেম্বারে আসে এবং ক্রম উন্নতি চলতে থাকায় এগুলোর বিস্তারিত আর উল্লেখ করছি না। ইতিমধ্যে রোগীর অস্থিরতা বেশ কম, এমনকি ঘুমের মধ্যেও আগের মতো অত নড়াচড়া করছে না। আগের মতো কথায় কথায় রেগেও উঠছে না। তবে কয়েকদিন যাবৎ পেটব্যাথাটা আবার দেখা দিয়েছে, যদিও পেট আর শক্ত হয়নি। ঘুমের মধ্যে লালাস্রাব আর দাঁত কাটা আবার দেখা যাচ্ছে। ঘুমের মধ্যে কথা বলা এখনো হালকা ভাবে আছে।
আগের বার রোগী একটা নতুন সমস্যার কথা জানায়। মাঝে মাঝে সে চোখে ঝাপসা দেখে, বিশেষ করে পড়ার সময়। এজন্য চোখ পরীক্ষা করে নিয়ে আসতে বলা হয়। চোখের লেন্স ঠিক আছে, তবে Vision of left eye- 6/9।
এবার Relapsing এর চিহ্ন দেখে আবার প্রেসক্রিপশন করা হয়—
Tub- 10M/1 dose at morning
With enough Conciliatory placebo for 3 weeks
এরপর রোগী আরো দুইবার আসে, কোন সমস্যাই আর হয়নি। তাই শেষবার ১০/০৬/১৫ ইং তারিখে রোগীকে সেরে গিয়েছে বলে ঘোষণা করি। এবং তারপরও পুনরায় কোন সমস্যা হলে আসতে বলা হয়। কিন্তু রোগীর আর চিকিৎসার জন্য আসার প্রয়োজন হয়নি। রোগীর মা আমার চিকিৎসাধীন আছেন এবং রোগীর বর্তমান অবস্থাও আমরা জ্ঞাত। উল্লেখ্য, রোগীর চোখের সমস্যাও আর হয়নি এবং বাচ্চা আগের চাইতে অনেকটাই সুস্থির।
Discussion about this post