হোমিওপ্যাথিক সমাজে ডা. জর্জ ভিথোলকাসের নাম উল্লেখ করলেই চিনতে পারবেনা এরকম চিকিৎসক বোধহয় নেই। আর তারই শিক্ষায় প্রশিক্ষিত তাঁর সুযোগ্য ছাত্রের একজন হচ্ছেন ডা. রজার মরিসন। ‘Desktop Guide to keynotes and confirmatory symptoms’ বইটি হচ্ছে সেই রজার মরিসনের একটি অনন্য অবদান।
বইটির ভূমিকাতেই তিনি বইটির বিশেষ ব্যবহার-উপযোগিতার কথা উল্লেখ করেন- নিজের একটি অপরিহার্য প্রয়োজনকে প্রকাশ করে। চিকিৎসাক্ষেত্রে আমরা রোগী দেখি এবং এই কাজটি ব্যাপক শ্রমসাপেক্ষ ও গবেষণামূলক বৈশিষ্ট্যসম্বলিত ব্যাপার। উপযুক্ত কেইস টেকিং, রেপার্টরাইজেশন করার পরও যে কাজগুলো একজন সচেতন, সতর্ক, বিচক্ষণ চিকিৎসককে করতেই হবে- তা হচ্ছে, নির্দেশিত ঔষধগুলোর তুলনামূলক আলোচনা। কিন্তু সে কাজটিও করার নিতান্ত সহজ নয়। এ কাজটি সফলভাবে করার জন্য হয় চিকিৎসককে নির্দেশিত ঔষধগুলোকে পুরোটা পড়তে হবে, অথবা হাতের কাছে এমন একটি নোট বা গাইড থাকতে হবে- যেটিতে চোখ বুলিয়ে তিনি ঔষধের সামগ্রিক চিত্রটা অনুধাবন বা স্মরণ করতে পারবেন।
এই অভাবটি রজার মরিসনও বোধ করেছেন এবং অন্য কারো উপর নির্ভর না করে- তার গুরুর প্রদত্ত শিক্ষার উপর ভিত্তি করে সেই গাইডটি রচনাই করে ফেলেছেন। আর এ কারণেই এই গ্রন্থটিকে আমি তাঁর একটি অনন্য রচনা বলে উল্লেখ করেছি।
বহুদিক দিয়েই বইটি অন্য সংক্ষিপ্ত মেটেরিয়া মেডিকাগুলো থেকে ভিন্ন। তিনি ঔষধের বর্ণনাটিকে একটি সংক্ষিপ্ত পরিসরে পূর্ণাঙ্গতা দান করেছেন। ঔষধের বৈশিষ্ট্যগুলোকে সাজিয়েছেন একটি ভিন্ন আঙ্গিকে।
প্রথমে তিনি আলোচ্য ঔষধটির ব্যাপারে একটি সংক্ষিপ্ত সাধারণ আলোচনা করেছেন এবং এই আলোচনাটিতে বলা চলে তিনি ভিথোলকাস প্রশিক্ষিত ঔষধের এসেন্সের রূপরেখাটিকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।
আর তারপরই গুরুত্বের অগ্রাধিকার বজায় রেখে দিয়েছেন- ঔষধের মানসিক বৈশিষ্ট্য ও অবস্থার পরিচয়। এরপর ক্রমান্বয়ে তিনি অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বা অঙ্গ থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো সম্বন্ধে আলোচনা করেছেন। যেমন, Argentum Nitricum অধ্যায়ে বর্ণনার বিন্যাসটি হচ্ছে-
- General Introduction
- Mentals
- Generals
- Neurological
- Head
- Thorat
- Chest
- Stomach
- Abdomen
- Genitalia
- Extremities
এরপর তিনি ‘Clinical’ শিরোনামে ঔষধটি কি কি রোগে ব্যবহার উপযোগিতা দেখা যায় তার নামগুলো উল্লেখ করেছেন। যেমন, আর্জেন্টাম নাইট্রিকামের ক্ষেত্রে উল্লেখ করেছেন-
Angina Pectoris, Anxiety, Arrhythmia, Ataxia, Cerebral Accidents, Chronic Fatigue Syndrome, Colitis, Compulsive Disorders, Conjunctivitis, Connective Tissue Disease, Depression, Gastritis, Headache, Hepatitis, Hypertension, Impotence, Irritable Bowel Syndrome, Laryngeal Polyp, Laryngitis, Multiple Sclerosis, Orchitis, Parkinson’s Disease, Pharyngitis, Phobic Disorder, Reflux Eosphagitis, Seizure Disorders, Tremor, Ulceration In Throat, Vertigo.
আর এরপর উল্লেখ করেছেন, আলোচ্য ঔষধটির Complementary ঔষধগুলোর নাম। Arg.n এর বেলায়-
“Lyc. Phos. (Clear Arg.n Cases rarely need other remedies)”
আর এরপর তুলে ধরেছেন ঔষধের একটি নতুন ধারণাগত বৈশিষ্ট্য “Combined Symptoms”। এটি ঠিক Concomitants Symptoms এর ধারণাটি নয়। এটা বোঝায় একটি ঔষধের মধ্যে কোন কোন লক্ষণ একত্রে দেখতে পেলে- প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, এই ঔষধটিই কাঙ্ক্ষিত ঔষধ। যেমন, Arg.n এর বেলায়, তিনি এই ক্ষেত্রটিতে বলেছেন,
- Intense craving for both salty and sweets.
সর্বশেষ তিনি ‘Comparisons’ অংশে ঔষধটির সাথে যে ঔষধগুলোর তুলনা করা বা এর সাথে স্মরণ করা অপরিহার্য সেগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত সঙ্গতি-অসঙ্গতি তুলে ধরেছেন। এবং বর্ণনা ছাড়াও এরকম কিছু ঔষধের নাম উল্লেখ করে গেছেন।
মোদ্দাকথাটি হচ্ছে- খুবই সংক্ষিপ্ত পরিসরে ও সময়ে- একটি ঔষধের সামগ্রিক চিত্রকে দ্রুত স্মরণ করতে চাইলে, হাতের কাছে বিশেষ করে, এই বইটি থাকা অপরিহার্য। যারা ব্যস্ত প্র্যাকটিস করেন, কিন্তু সেই চর্চাটি সঠিক নিয়মে করতে চান, তার হাতের কাছে বা রোগী দেখার টেবিলে এই বইটি থাকা বোধহয় বাধ্যতামূলক পর্যায়েই পড়ে।
Discussion about this post