[Dana Ullman, MPH, CCH আমেরিকাতে হোমিওপ্যাথির নেতৃস্থানীয় পৃষ্ঠপোষক এবং ইউনাইটেড স্টেটসে হোমিওপ্যাথির মুখপাত্র হিসাবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তিনি বেশকিছু বই লিখেছেন, যার মধ্যে- The Homeopathic Revolution: Why Famous People and Cultural Heroes Choose Homeopathy, Homeopathy A-Z, Essential Homeopathy, Consumer’s Guide to Homeopathy, Homeopathic Medicines for Children and Infants, Discovering Homeopathy: Medicine for the 21st Century, and Everybody’s Guide to Homeopathic Medicines (with Stephen Cummings, MD, সর্বাধিক বিক্রিত) গুরুত্বপূর্ণ। তিনি How to Use a Homeopathic Medicine Kit শিরোনামে একটি ই-কোর্সও প্রদান করেছেন- যেখানে ৮০টি সংক্ষিপ্ত (গড়ে ১৫ মিনিট) ভিডিও সংযুক্ত করা হয়েছে, সাথে বিভিন্ন পিয়ার-রিভিউড মেডিক্যাল জার্নালগুলোতে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ক্রমবর্ধমান পরীক্ষণ সংক্রান্ত প্রকাশিত ৩০০ এরও বেশি ক্লিনিক্যাল স্টাডির সংযোগ করার মাধ্যমে তাকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর একটি বিশেষ গ্রন্থ ‘Evidence Based Homeopathic Family Medicine’। এই ই-বুকটিতে ১০০ এরও অধিক সাধারণ রোগগুলো সম্বন্ধে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ব্যবহারের উপায় সংক্রান্ত বাস্তব ক্লিনিক্যাল তথ্য প্রদান করা হয়েছে। ডানা উলম্যান ইউনাইটেড স্টেটসের প্রফেসনাল হোমিওপ্যাথদের নেতৃস্থানীয় সংস্থা কর্তৃক ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথিতে সনদ লাভ করেছেন।তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘Homeopathic Educational Services’ আমেরিকাতে হোমিওপ্যাথির বই, সফটওয়্যার, মেডিক্যাল কিটস, ভিডিওর সর্ববৃহৎ প্রকাশনা ও বিপননকারী প্রতিষ্ঠান।]
ডানা, শিশুদের হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যাপারে আপনি একটি বই লিখেছিলেন। আমার অভিজ্ঞতায় যা দেখেছি, অভিভাবকদের এটা বিশ্বাস করানো মুশকিল যে, শিশু–চিকিৎসকদের দ্বারা তাদের শিশুদের যত্ন যতটা ভাবা হয় ঠিক ততটা উপযুক্তরূপে বাস্তবায়ন হচ্ছে না! অভিভাবকদের সাথে হোমিওপ্যাথি নিয়ে কিভাবে আলোচনা করা যায়, সে ব্যাপারে আপনার কোন পরামর্শ আছে?
“প্রথমত, ক্ষতি করবেন না” – এটি ছিলো হিপোক্রিটাসের সুবিখ্যাত পরামর্শ এবং এটি বিশেষ করে নবজাতক ও শিশুদের চিকিৎসা ও যত্নের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ মানুষই এটি জানে না যে, প্রচলিত অধিকাংশ ঔষধই প্রাপ্তবয়স্কদের উপর পরীক্ষা করা হয়েছে, এরপর চিকিৎসক শিশুদের ওজনের সাথে তুলনা করে উপযুক্ত মাত্রা নির্ধারণ করার মতো স্থুল উপায়ে হিসেব-নিকেশ (অনুমানপ্রসূত হিসাব) করেছেন। তারচেয়েও বাজে ব্যাপার, ইউনাইটেড স্টেটসে প্রায় ২০% পেডিয়াট্রিক ভিজিটে শিশুদেরকে এমন ব্যবস্থাপত্রের কবলে ফেলে- যেখানে একই সাথে একটির বেশি ঔষধ প্রেসক্রিপশন করা হয়। যেখানেই একের বেশি ঔষধ শিশুকে প্রদান করা হয়, চিকিৎসক সেখানে কোন গবেষণাপ্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে আদৌ প্রেসক্রিপশন করছেন না, কারণ প্রকৃত গবেষণা একাধিক ঔষধ একসাথে প্রয়োগ করে করা হয়নি। অধিকন্তু চিকিৎসক একত্রে ঔষধগুলোর মিথস্ক্রিয়া সম্বন্ধেও অবগত নন।
বাস্তব সত্য হচ্ছে, বহু সংখ্যক প্রচলিত-ধারার চিকিৎসক আমাদের সন্তানদের নিয়ে এমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন যা সত্যিই আতঙ্কজনক, তথাপি খুব অল্প মানুষ ও অল্প চিকিৎসকই এ ব্যাপারে সতর্কতা প্রদর্শন করছেন।
এটা ব্যাপক বিস্ময়কর যে, বহু সংখ্যক শিশু তাদের চিকিৎসককে ভয় পায় এবং আমি বিশ্বাস করি, চিকিৎসকগণ যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি করছেন, সেটা আমরা বড়রা যতটা বুঝতে পারি- তার চেয়ে এই সকল শিশুগণ সেগুলোর ব্যাপারে বেশি সংবেদনশীল ও সচেতন। একজন হোমিওপ্যাথের অফিসে প্রবেশ করার পর শিশুদের ক্ষেত্রে এই মাত্রায় ভয় পাবার ঘটনাটি একদমই বিরল।
অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের হোমিওপ্যাথের কাছে নিয়ে আসেন তার পয়লা কারণ হচ্ছে- হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রচলিতধারার ঔষধগুলোর চাইতে অনেক বেশি নিরাপদ।
যে দ্বিতীয় প্রধান কারণে অভিভাবকগণ শিশুদেরকে হোমিওপ্যাথের কাছে নিয়ে আসেন- শিশুরা হোমিওপ্যাথিক ঔষধে অত্যন্ত ভালোভাবে সাড়া দেয়। আপনি উপযুক্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে বাস্তবিকই একজন শিশুর জীবন- শারীরিক ও মানসিক, উভয়ভাবেই পরিবর্তন করতে পারবেন। এবং বাবা-মায়ের জীবনকে ব্যাপক সহজতর ও বহু উন্নত হতে আপনি সহযোগিতা করতে পারবেন।
আমার এটাও উল্লেখ করা উচিৎ যে, শিশুদের যত্ন ও চিকিৎসার প্রতি আমার হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। আমার বাবা একজন শিশু-চিকিৎসক ছিলেন এবং আমি নিজেও একজন বাবা। পিতৃত্বের দায়-দায়িত্বের প্রতি প্রস্তুতীকরণে, আমি ‘Homeopathic Medicines for Children and Infants’ (নবজাতক ও শিশুদের হোমিওপ্যাথিক জন্য হোমিওপ্যাথিক ঔষধ) বইটি লিখেছি, যেটি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রদান করে তাদের সন্তানদের কিভাবে চিকিৎসা করতে হবে, সে ব্যাপারে অভিভাবকদের প্রশিক্ষিত করার ক্ষেত্রে আমেরিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় নির্দেশক-গ্রন্থ।
হোমিওপ্যাথিক ঔষধে শিশুরা কি রকম সাড়াপ্রদান করে?
হোমিওপ্যাথিক ঔষধে শিশুরা চরমমাত্রায় ইতিবাচক সাড়া প্রদান করে, এমনকি যেখানে একদম নিঁখূত ঔষধটি সবসময় প্রেসক্রিপশন করা হয় না- সেখানেও। ব্যাপারটি অনেকটা এরকম যে, তাদের শরীর-স্থিত বুদ্ধিমত্তা এতটাই উচ্চস্তরের যে, তাদের ভেতরের রাডারটি যে কোন এনার্জেটিক ঔষধ, এমনকি তা সবচেয়ে উপযুক্ত ঔষধটির কাছাকাছি হলেও তা স্ক্যান করে খুঁজে বের করছে। বিখ্যাত এস্ট্রোনমার জন কেপলার একবার বলেছিলেন, “প্রকৃতি কোন কিছুর যথাসম্ভব স্বল্পপরিমাণকে ব্যবহার করে”। বাস্তবতা হচ্ছে, শিশুদের হোমিওপ্যাথিক ঔষধে এত ভালো প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করাটি এই কথাটির আরো একটা প্রমাণ।
ইস্, একটা পুরো বাটি ফেনাযুক্ত চকোলেট খাবার আগে যদি এটা জানতাম! কি যেন বলছিলাম? হ্যা, ডানা, শিশুদের সাথে হোমিওপ্যাথিক সাক্ষাৎকারটি কি রকম হবে?
আমি হোমিওপ্যাথিকে পঞ্চাশের দশকের জনপ্রিয় আমেরিকান ডিটেকটিভ টেলিভিশন শো’য়ের অনুসরণে “Dragnet medicine” নামে ডাকি: কে, কি, কেন, কোথায়, কখন? – চিফ ডিটেকটিভ সার্জেন্ট জো ফ্রাইডে এই প্রশ্নগুলোই অবিরত জিজ্ঞেস করতেন। “কেবলমাত্র বাস্তব তথ্যগুলোই প্রাণ- যার উপরে তিনি জোর প্রদান করতেন- কেবল বাস্তব তথ্য ব্যতীত তিনি কোন তত্ত্ব, অনুমাণ, ধারণাকে গ্রহণ করতেন না।
আমি শিশুটির সাথে যত বেশি সম্ভব কথা বলি এবং কেবলমাত্র তারপরই আমি অভিভাবকদের সাথে কথা বলি।
আমি শিশুটিকে ওয়েটিং রুমে, কিভাবে সে আমার কাছে আসছে এবং পুরো সাক্ষাৎকার চলাকালে – উভয় সময়েই আমি শিশুটিকে পর্যবেক্ষণ করি। শিশুদের প্রতি আমার যথেষ্ঠ পরিমাণ সম্মানবোধ আছে এবং আমি তাদের সাথে সরাসরি কথা বলে সেই সম্মানটুকু প্রদর্শন করার চেষ্টা করি এবং তা করি- সাধারণত একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে যেভাবে প্রদর্শন করা হয় সেভাবে। যদি তারা অন্তত বছর চারেক বয়সের হয়, আমি তাদের কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারি। যেরকম, আমি তাদের জিজ্ঞেস করি:
- সবচেয়ে বেশি কিসে কষ্ট লাগে?
- কিসে ব্যথা বাড়ে বা কিসে ব্যথা কমে?
- তার আর কোন কষ্ট আছে এবং সেগুলো কিসে বাড়ে বা কমে?
- এরপর আমি তাদের সারা শরীরে একটা ‘স্ক্যান’ করি যেখানে আমি তাদের শরীরের অঙ্গগুলোর তালিকা থেকে নির্দিষ্ট অঙ্গের নাম উল্লেখ করি এবং তারা আমাকে জানায় তার শরীরের সেই অঙ্গটিতে কোন লক্ষণ আছে কিনা।
নিচের প্রশ্নগুলো খোদ শিশুটিকে বুঝতে আমাকে সহায়তা করে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করি-
- কয়েক বছর আগে সে কেমন ছিলো- তা বর্ণনা করতে বলি
- তাদের ভাই ও বোনেরা তার সম্বন্ধে কি বলে
- তাদের বন্ধুদের কেউ তাদের সম্বন্ধে কি বলে
- তাদের অ-মিত্রদের কেউ তাদের সম্বন্ধে কি বলে
- এই প্রশ্নগুলো শিশুটিকে তার দেয়া উত্তর থেকে তার নিজের দূরত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করে, যার দরুন আমি আরো বেশি যথার্থ উত্তর পেতে পারি।
- আমি তাদের জিজ্ঞাসা করি, এ পর্যন্ত তাদের বাবা-মায়ের দেয়া কোন শাস্তিটা তার জীবনে সবচেয়ে বাজে ছিলো?
যে সমস্ত শিশুরা কথা বলতে পারে না, আমি তাদের পর্যবেক্ষণ করি এবং শিশুটির বাবা-মাকে এই একই প্রশ্নগুলো থেকে বেশ কয়েকটি করি। তাছাড়া জিজ্ঞেস করি-
- আপনার সন্তান কোন বিষয়কে সবচেয়ে গুরুত্ব প্রদান করে?
- বাচ্চাটি কি ধরণের আবেগ অনুভব করে বলে মনে হয়, সেটি কিভাবে প্রকাশ পায়?
- আপনার গর্ভ ও প্রসবকালীন সময়টা সম্বন্ধে বলুন।
জ্বর হলে তা ঔষধ দিয়ে থামানোর জন্য শিশু-চিকিৎসক যে পন্থায় তড়িঘড়ি করে, তা দেখে যে কেউ এলোপ্যাথিক শিশু-চিকিৎসক ও হোমিওপ্যাথদের মধ্যে পুরোদস্তুর পার্থক্য করতে পারে, এবং (তাদের কাজের) ফলাফলস্বরূপ অধিকাংশ অভিভাবক তাদের সন্তানদের জ্বর হলে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
প্রায় সময়ই, শিশুর জ্বরের চাইতে অভিভাবকদের উদ্বেগ ও ভয়ের চিকিৎসার প্রয়োজন বেশি হয়ে পড়ে। এই সকল ভয়টিকে কাবু করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, শরীরের সহজাত প্রজ্ঞার ব্যাপারে তাদেরকে জ্ঞান দান করা এবং জ্বর যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা- সে ব্যাপারে জানানো। আমি এটি বলছি কারণ চিকিৎসকগণ ও ফিজিওলজিস্টগণ বর্তমানে বুঝতে পেরেছেন যে, জ্বর সংক্রমণের বিরুদ্ধে ব্যক্তির শরীরের একটি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া। অবশ্য এটা সত্যি যে, কিছু উচ্চমাত্রার ও দীর্ঘস্থায়ী জ্বরের চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে বা কোন ভাবে তাকে থামানোর প্রয়োজন হয়, তথাপি শিশুদের জ্বরগুলোর মধ্যে এ প্রকারের জ্বরগুলো অত্যন্ত বিরল।
জ্বরকে নামানোর জন্য প্রচলিত-ধারার ঔষধগুলোর অপব্যবহারের ব্যাপারে আমি বেশ দুশ্চিন্তিত। হোমিওপ্যাথগণ বলেন যে, আমরা তরুণ রোগগুলোকে অবদমন করে অসংখ্য ক্রনিক রোগের জন্ম দিচ্ছি।
কত ভালোভাবে ও দ্রুত হোমিওপ্যাথিক ঔষধগুলো জ্বরের মধ্যে কাজ করে তা দেখে আমি প্রায় সময়ই বিস্মিত হই। কারণ জ্বর একটি প্রতিরক্ষা, শরীর তার এই প্রতিরক্ষাকে সহায়তা করার মতো অতিরিক্ত উপায়টিকে অত্যন্ত সুচারুরূপে ব্যবহার করে। এটিই প্রচলিত-ধারার ঔষধগুলো থেকে, বিশেষ করে প্রদাহ-রোধী ঔষধগুলো, যা চূড়ান্ত বিবেচনায় আসলে সত্যিকারের আরোগ্যের প্রতিবন্ধক- তার সাথে এর (হোমিওপ্যাথিক ঔষধের) পার্থক্য।
যে নবজাতক (জন্মের ৪ মাসের মধ্যে) দুই ঘণ্টার মধ্যে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় সাড়া না দেয়, অথবা যদি কোন শিশুর জ্বর ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে থাকে এবং ৬ ঘণ্টা পরও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় সাড়া না দেয়, কিংবা যদি কোন শিশুর উচ্চমাত্রার জ্বর ভীষণরকম দুর্বলতা ও ঘাড়ের আড়ষ্টতা সৃষ্টি করে- তাদেরকে আমি জরুরি মেডিক্যাল চিকিৎসায় প্রেরণ করতে পারি এবং করবো।
ডানা, শিশুরা প্রচুর পরিমাণে কর্ণ–প্রদাহে আক্রান্ত হয় বলে দেখা যায় এবং বলা বাহুল্য, তাদেরকে কেবলমাত্র এন্টিবায়োটিক চিকিৎসাই প্রদান করা হয়। এটিতে কি কোন ঝামেলা আছে?
কর্ণ-প্রদাহ চিকিৎসায় এন্টিবায়োটিকের একটি ভূমিকা থাকতে পারে কিন্তু তা প্রথমেই বেছে নেবার মতো অপরিহার্য কোন বিষয় নয়। শিশুদের তরুণ কর্ণপ্রদাহে এন্টিবায়োটিকের ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস যে গাইড-লাইন প্রদান করেছে, বাস্তবে তা হচ্ছে, জন্মের পর প্রথম তিনমাসে এটিকে এড়িয়ে চলা উচিৎ। এটা জেনে হয়তো অনেকেই বিস্মিত হবেন যে, কানের ইনফেকশনগুলোর উপর করা সবচেয়ে উন্নত গবেষণাগুলোর মেটা-এনালাইসিস [British Medical Journal, 1997, 87:pp.466-74] প্লাসিবোর তুলনায় এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে ভিন্ন কোন উপকার দেখতে পাননি।
আরো বাজে ব্যাপার হচ্ছে, কিছু প্রমাণ বরঞ্চ এটি নির্দেশ করছে যে, যে সমস্ত শিশুদের চিকিৎসা না করে এমনি এমনি রাখা হচ্ছে, তাদের তুলনায় এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা শিশুরা কর্ণ-প্রদাহের প্রতি তিনগুণ বেশি প্রবণতাযুক্ত হয়।
আরোগ্যের মূল প্রতিজ্ঞার ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক ব্যবহারজনিত সমস্যার একটি দিককে বরাবর উপেক্ষা করা হয়, তা হচ্ছে- শরীরের জন্য যখনই আপনি কিছু করে দেবেন, শরীর নিজে নিজেই তা করার শিক্ষাটি আর অর্জন করবে না।
ইউনাইটেড স্টেটসে, নবজাতকদের এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করার ঘটনাটি অতিরিক্ত পরিমাণে হতে দেখা যায়, এমনকি তাদের কানটা কোন কারণে লাল হলেও। এর দীর্ঘকালীন পরিণতি অজ্ঞাত ও ভীতিজনক। নবজাতকদের ও যে কোন বয়সের শিশুদের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকের এই অতি-ব্যবস্থাপত্র প্রদানটি, যাকে আমি “Medical child abuse” বলে থাকি, তার একটি দিক। আমি সেই দিনের প্রতিক্ষায় আছি, যেদিন হোমিওপ্যাথি আরো শ্রদ্ধা অর্জন করবে এবং আরো অধিক অভিভাবক ও চিকিৎসকের ঔষধের বাক্সে তার ঠাঁই হবে।
কর্ণ–প্রদাহের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি কি করতে পারে?
শিশুদের কর্ণ প্রদাহের চিকিৎসার ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি ভীষণ চমৎকার কাজ করে। প্রায় সময়ই এটি একদম প্রাথমিক গণিতের মতোই সহজ: Aconitum, Belladonna, Chamomilla, ও Pulsatilla….কিছুটা কম ব্যবহৃত হয় এরকম ঔষধ Mercurius, Mercurius iodatus flavus, Mercurius iodatus ruber, Hepar sulphur, ও Silicea। ফলাফল প্রায়শই দ্রুত, এমনকি যেখানে তা দ্রুত না-ও হয়, সেখানে দেখা যায়- যাদের আগে এন্টিবায়োটিক প্রদান করা হতো তাদের তুলনায় এই সকল শিশুরা- আগে যত বেশি কানের প্রদাহে ভুগতো, এখন আর তা ভুগছে না।
মধ্যকর্ণ প্রদাহের (Otitis Media) ব্যাপারে ৭৫ টি শিশুকে নিয়ে করা সাম্প্রতিক একটি গবেষণা, যা Pediatric Infectious Disease Journal-এ প্রকাশিত হয়েছিলো, তদনুসারে অভিভাকদের ডায়রিতে রাখা রেকর্ডের স্কোর অনুযায়ী, যে সকল শিশুকে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রদান করা হয়েছে তাদের চিকিৎসা প্রদানের ২৪ থেকে ৬৪ ঘন্টার মধ্যে লক্ষণাবলীর একটি তাৎপর্যপূর্ণ হ্রাস প্রদর্শিত হয় (P<.05)। প্লাসিবো প্রদান করা শিশুদের তুলনায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রদান করা শিশুদের মাঝে “চিকিৎসায় ব্যর্থতা”-এর হার ২০% কমও দেখা গেছে। [Reference: J Jacobs, DA Springer, D Crothers, Homeopathic Treatment of Acute Otitis Media in Children: A Preliminary Randomized Placebo-controlled Trial, Pediatric Infectious Disease Journal, 20,2 (February 2001):177-183.]
তীব্রমাত্রার একটি কর্ণ–প্রদাহে অভিভাবকদের হোমিওপ্যাথিক ঔষধপ্রদান করার পরে তার ফলাফলের জন্য কতদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে?
পুরোনো একট প্রবচন আছে “The bigger they are, the harder they fall”। আমি তাকে এভাবে ব্যাখ্যা করি- ব্যথা ও যন্ত্রণা যত বেশি, উপশম তত দ্রত। এটা অনেকটা এরকম, মৃদু লাগাতার যন্ত্রণাগুলোর তুলনায় তাদের প্রতিরক্ষা এত শক্তিশালী যে, হোমিওপ্যাথিক ঔষধ একটি ব্যাপক ও দ্রুততম উপশম প্রদান করে।
সাধারণত, একটি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগ করার পর উপশমটি কয়েক ঘন্টার মাঝেই দেখা যায়- তবে এক রাত্রি বিশ্রামের পর নিশ্চিতভাবেই প্রত্যক্ষ হয়।
আপনি যেমনটি জানেন, আমাদের ঔষধগুলো বহু-প্রকারের শক্তিতে পাওয়া যায় এবং কোনটি কিনতে হবে তা নিয়ে অভিভাবক চিন্তায় পড়তে পারেন।
6X বা 6C থেকে 1,000 পর্যন্ত (“1M” বলে পরিচিত)। আমি যত বেশি নিশ্চিত এবং শিশু যত বেশি জীবনীশক্তিসম্পন্ন- শক্তি হবে তত উচ্চতর। বলা হয়ে থাকে, যে ব্যক্তিগণ হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সম্বন্ধে খুব বেশি অবগত নয়, তাদের 6th, 12th, বা 30th শক্তির ঔষধ কেনা উচিৎ।
তারা কি ঔষধটি একবারই দেবে, নাকি ঘন ঘন পুণঃপ্রয়োগ করবে?
- 12th ও 30th – তীব্র যন্ত্রণার ক্ষেত্রে আমি সচরাচর ২-৪ ঘন্টা পর পর পুনঃপ্রয়োগ করি এবং মৃদু যন্ত্রণাতে প্রতি ৪-৬ ঘন্টা পর পর।
- 200 ও 1M – তীব্র যন্ত্রণার ক্ষেত্রে আমি প্রথম ৩ ডোজ প্রতি ২ ঘন্টা পর পর সুপারিশ করি এবং মৃদু যন্ত্রণাতে প্রতি ৪-৬ ঘন্টা পর পর।
- যদি ২৪ ঘন্টায় কোন পরিবর্তন না আসে, আমি অন্য ঔষধের কথা চিন্তা করি
- একবার নিশ্চিত উন্নতি শুরু হলে ঔষধগ্রহণ বন্ধ করুন
- ব্যথা-যন্ত্রণা ফিরে আসলে আবার শুরু করুন
আর বলার অপেক্ষা রাখে না, যদি অবনতি হয়, ঔষধ গ্রহণ বন্ধ করুন! ডানা, আমি প্রসঙ্গটি পরিবর্তন করতে চাচ্ছি, ফ্লোরাইডের ব্যাপারে আপনি কি বলবেন?
আমি মনে করি, পানিতে নয়- ফ্লোরাইড যুক্ত করা দরকার ক্যান্ডিতে। যদিও এটি শুনতে হাস্যকর লাগবে, কিন্তু পানিতে ফ্লোরাইড প্রদান করার চাইতে এটিই বাস্তবে বেশি অর্থ বহন করে।
ফ্লোরাইডের ক্ষুদ্রমাত্রা দাঁতের উপকার করে কিন্তু এটি বৃহৎমাত্রায় উত্তেজনাও সৃষ্টি করে। মনে রাখা দরকার, একবার পানি-ব্যবস্থাপনায় ফ্লোরাইড প্রবেশ করলে, এটা কেবল পানই করা হয় না- তা দিয়ে খাবার ধোয়া ও রান্না করার দরুন, তা খাওয়ায় হয় এবং পানিতে ফ্লোরাইডের উপযুক্ত পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করা সবসময় সহজও নয়।
ফ্লোরাইড পিল বা ফ্লোরাইডযুক্ত পানি পান করার চাইতে এই পদ্ধতিটি শিশুদের দাঁতকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে অধিকতর নিরাপদ: তবে একটি কন্সটিটিউশনাল হোমিওপ্যাথিক ঔষধ, এমনকি উপযুক্ত ক্যালকেরিয়া সল্টের (তাদের শরীরের গঠন অনুযায়ী) 3rd অথবা 6th শক্তির হোমিওপ্যাথিক ঔষধ মাঝে মাঝে প্রয়োগ করা একটি উন্নত আইডিয়া হতে পারে।
এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন: অতিচঞ্চল শিশু (Hyperactive children)! এই সমস্যাটিতে হোমিওপ্যাথি কি করতে পারে?
হোমিওপ্যাথক ঔষধ হাইপার-এ্যাকটিভ শিশুদের (এবং অতিচঞ্চল প্রাপ্তবয়স্কদের) ক্ষেত্রে চমৎকারভাবে ফলপ্রসূ, যদিও তা বাধ্যগতভাবে এটি বোঝায় না যে, একটি ঔষধ তাদের ‘আরোগ্য’ করবে। কখনো কখনো, ঔষধ তাদেরকে ধীর-স্থির করে এবং তাদের এনার্জির উপরে আরো বেশি নিয়ন্ত্রণ আনতে সহায়তা করে।
হাইপার-এ্যাকটিভিটি থাকা ৪৩ শিশুকে নিয়ে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, যাদেরকে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রতার ভিত্তিতে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রদান করা হয়েছে তারা পরিসংখ্যানগতভাবেই তাৎপর্যপূর্ণরূপে উপকৃত হয়েছে। গবেষণার প্রথম পর্যায়টি অতিক্রান্ত হবার পরে, যে সকল শিশুদেরকে প্লাসিবো দেয়া হয়েছিলো, তাদেরকে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রদান করা হয় এবং আবারও তাদের স্বাস্থ্যে একটি পরিসংখ্যানগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি সাধন হয়।
যাই হোক, এই গবেষণাটিতে সবচেয়ে বেশি যে ঔষধগুলো সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয়েছে Stramonium (thornapple) 35% কেইসে, Cina (wormseed) 19% কেইসে, Hyoscaymus (henbane) 19% কেইসে, Veratrum album (white hellabore), Tarentula (tarentula), এবং অন্যান্য আরো কয়েকটি ঔষধ।
[References: Frei, H, Everts R, von Ammon K, Kaufmann F, Walther D, Hsu-Schmitz SF, Collenberg M, Fuhrer K, Hassink R, Steinlin M, Thurneysen A. Homeopathic treatment of children with attention deficit hyperactivity disorder: a randomised, double blind, placebo controlled crossover trial. Eur J Pediatr., July 27,2005;164:758-767. John Lamont, “Homeopathic Treatment of Attention Deficit Hyperactivity Disorder,” British Homeopathic Journal, Vol. 86, October, 1997, 196-200.]
হোমিওপ্যাথিক ঔষধ একটি গভীর ও শক্তিশালী আরোগ্যকারী ক্রিয়া প্রকাশ করতে পারে, যেটি শিশুর ব্যক্তিত্বকে সত্যিই পরিবর্তন করে। ঘটনাটি এমন, হোমিওপ্যাথিক ঔষধ যেন রোগের একটি আবরণকে টেনে সরিয়ে ফেলতে সহযোগিতা করে- যার ফলে শিশু স্বরূপে প্রকাশ পায়।
হাইপার-এ্যাকটিভিটিতে একটি একিউট ঔষধের চাইতে বরঞ্চ মাঝে মাঝে কন্সটিটিউশনাল ঔষধের প্রয়োজন হয়। মনে রাখবেন, একিউট ঔষধ একটি স্বল্পকালীন উপশম প্রদান করে, কিন্তু এটি সেই প্রকারের উপশম নয়- যা বেশিরভাগ শিশু ও অভিভাবকগণ আকাঙ্ক্ষা করে। তারা দীর্ঘকালীন উন্নতি চায়, যদিও তারা যতটা পেতে পারে ততটাই গ্রহণ করে।
চিকিৎসার প্রক্রিয়াটিতে মায়াজমেটিক ঔষধ এবং শিশুর সমস্যাটির সাথে সম্পর্কিত ‘কারণে’র উপর ভিত্তি করে অন্যান্য ঔষধ প্রয়োজন হতে পারে।
দুজন সহকর্মী, Judyth Reichenberg-Ullman, ND, এবং Robert Ullman, ND (আমার সাথে কোন আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই!), হাইপার-এ্যাকটিভিটি বিষয়টির উপরে দুটো বই লিখেছেন, উভয় গ্রন্থই প্র্যাকটিশনার ও অভিভাবকদের জন্য সহায়তাকরী: Ritalin Free Kids ও Rage Free Kids। এই বইগুলো হাইপার-এ্যাকটিভিটি ও এ সম্পর্কিত অন্যান্য সিনড্রোমগুলোতে প্রধান ঔষধগুলোর অত্যন্ত সহায়তাকারী বর্ণনা প্রদান করে। আমি এই বইগুলোকে ব্যাপকভাবে সুপারিশ করি।
শিশুদের চিকিৎসাজনিত সকল প্রকার প্রয়োজনের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি কি স্বয়ংসম্পূর্ণ?
আমি মনে করি, অন্যান্য আরোগ্যকারী উপায়গুলোর সাথে হোমিওপ্যাথদের পরিচিত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। যখন সবচেয়ে উপযুক্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সম্বন্ধে নিশ্চিত হতে আরো বেশি সময়ের প্রয়োজন পড়বে, তখন এ ধরণের উপায়গুলো সাহায্যকারী হতে পারে- কারণ এ প্রকারের উপায়গুলো তাদের নিজেদের ক্ষেত্রে ও তাদের কাজে ক্ষেত্রে কিছু উপকার সাধন করে।
অন্যান্য উপায়গুলো আয়ত্ত্ব থাকাটি আমাদেরকে ‘হোমিওপ্যাথির উগ্রভক্তে’ (Homeopathic chauvinists) পরিণত হতে, মানে, হোমিওপ্যাথি নিয়ে এত বেশি মগ্ন হতে নিরস্ত করে যে, অন্যান্য সমাধানকে আর বিবেচনাই করা হয় না।
অন্যান্য কায়দাগুলো সম্বন্ধে ধারণা থাকাটি- আপনার সকল ডিমকে একটি হোমিওপ্যাথিক ঝুড়িতে রাখা থেকে নিবৃত করে।
অন্যান্য উপায়গুলো সম্বন্ধে জ্ঞান চিকিৎসাবিদ্যার (বা আরোগ্যবিদ্যার) অনুশীলনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলোর মধ্যে কোনটি কোন প্রকার আরোগ্য সৃষ্টি করে বা কোনটা তাতে বাঁধা প্রদান করে তা পরীক্ষা করে দেখতে আমাদেরকে উৎসাহিত করে। (খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন একটি কার্যকরী ব্যায়াম ও পরীক্ষা)।
শিক্ষার্জনজনিত সমস্যাযুক্ত শিশুদের ব্যাপারে কি বলবেন?
সম্পূর্ণরূপে সহযোগিতা হতে পারে। যখন শিশুদের- তাদের এনার্জির উপর ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়, তারা আরো ভালোভাবে শিখতে ও তাকে গ্রহণ করতে সমর্থ হয়।
আমরা যদি উপলব্ধি করি, দেখতে পাবো আরোগ্যে ও শিক্ষার্জনে বহুরকম সাধারণ মিল আছে। একটি পর্যায়ে কোন কিছু শেখাটাই হচ্ছে আরোগ্য, যদিও হোমিওপ্যাথিতে আমরা সবসময় সচেতন শিক্ষার্জনের মাধ্যমে আরোগ্য করি না। সর্বোত্তম আরোগ্যকারী- শিক্ষার ও আরোগ্যের সচেতনতা সৃষ্টি করতে সহায়তা করে।
আমরা এ ব্যাপারে কোন ঔষধগুলোর কথা বলতে পারি?
বস্তুত সকল হোমিওপ্যাথিক ঔষধই হাইপার-এ্যাকটিভিটি বা লার্নিং সমস্যাগুলোর জন্য সম্ভাব্য ঔষধ, যদিও সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়:
Stramonium, Hyoscyamus, Arsenicum, Medhorrinum, Tuberculinum, Tarentula, Veratrum album, Lycopodium, Natrum mur, Natrum sulphicum, Cina, Argentum nitricum, Zincum, ও Nux vomica.
৪৩ টি ADHD আক্রান্ত শিশু নিয়ে করা ছোটখাটো একটি গবেষণায় পর্যবেক্ষণ করা গেছে যে, Stramonium ছিলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ঔষধ (35%), Cina ও Hyoscyamus প্রত্যেকে ১৯%, এরপর ছিলো Tarentula ও Veratrum album.
যে সকল শিশুদের এরকম তীব্র কোন সমস্যা নেই, তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে হোমিওপ্যাথি কি উপকার আসতে পারে?
শিশু অবস্থায় ভালো হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা উন্নততর স্বাস্থ্যময় বয়োঃসন্ধিকাল সৃষ্টি করতে সহায়তা করতে পারে এবং সেটা সে করে (যদিও একটি উন্নততর স্বাস্থ্যযুক্ত বয়োঃসন্ধিকাল বলে আদৌ আছে কিছু কিনা- তা নিয়ে কিছু অভিভাবক সন্দেহগ্রস্ত)। ভালো হোমওপ্যাথিক চিকিৎসা শারীরিক ও মানসিকভাবে উন্নত স্বাস্থ্যযুক্ত প্রাপ্তবয়স্কে পরিণত হতেও সহযোগিতা করে; যাদের সমস্তটা মিলে একটি উন্নত স্বাস্থ্যময় পৃথিবী সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। এখানেই হোমিওপ্যাথির ক্ষমতা। এবং এটাই হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য!
সর্বশেষ কোন কথা?
এটি আমাকে গভীরভাবে দুঃখিত করে যে, বহু সংখ্যক অভিভাবক ও চিকিৎসক তাদের নবজাতকদের ও শিশুদের শক্তিশালী ঔষধগুলো প্রদান করেন। তারা অজ্ঞাতসারেই সেই কাজটি করছেন, যেটিকে আমি বলি “Medical child abuse”। যদিও এই বর্তমান সময়ের জন্য এটি একটি রূঢ় শব্দগুচ্ছ, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি ইতিহাস তাদের নিকট আমার সঠিকত্বের প্রমাণ প্রদর্শন করবে।
হোমিওপ্যাথিক ঔষধ আমাদের সময়ের প্রচলিত-ধারার শক্তিশালী ঔষধগুলোর একটি টেকসই বিকল্প প্রদান করে এবং আমি অন্তর থেকে আশা করি যে, অভিভাবক ও চিকিৎসকগণ খুব শিঘ্রী এর সম্বন্ধে জেনে নেবেন।
আমাকে আপনার সাথে সহমত পোষণ করতেই হবে; আমি মনে করি না, অভিভাবকগণ এটি উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে, শিশুদের (প্রচলিত-ধারার) স্বাস্থ্যসেবার পুরো এপ্রোচটিই লক্ষণাবলীর অবদমন- যে লক্ষণগুলো একটি সুস্থ ইমিউন সিস্টেমের একমাত্র অভিব্যক্তি! হোমিওপ্যাথি রোগকে শরীর থেকে ছুড়ে ফেলার চেষ্টায় তার উপর কাজ করে; এটি শরীরের কর্মকান্ডকে তার শক্তির দ্বারা ব্যাহত করে, তাকে অসম্মানিত করে না। লক্ষণগুলো রোগ নয়, তারা রোগের বিরূদ্ধে ক্রিয়াশীল থাকা শরীরের ইমিউন সিস্টেম; আমরা কেন আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইবো? এটি একটি ভীতিজনকভাবে সরলীকরণকৃত এপ্রোচ: যদি নাক দিয়ে পানি ঝরে, তাকে শুকিয়ে ফেলো, সবাই খুশি থাকবে! (তাতে সমস্যা কি?) বেশ, সর্দি-ঝরা নাকটি সেখানে আসন গেড়ে বসা জীবাণুদের বাইরে বের করে দিচ্ছিলো- যা নাক দিয়ে প্রবেশ করেছে; এখন নাসাল স্প্রের শুস্ককরণের এই কাজটির প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখানো হয়, যার দরুন সেই একই জীবাণু যেখানে ইচ্ছা প্রবেশ করার অনুমতি পেয়ে যাচ্ছে! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, ডাক্তার!
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ, ডানা!
Discussion about this post