[সংকলন: ডা. শাহীন মাহমুদ]
১৭৯৯ সালে ডা. স্যামুয়েল হ্যানিমান কর্তৃক আবিষ্কৃত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাপদ্ধতিটির মহামারী রোগের চিকিৎসা-সক্ষমতা এবং আরোগ্যকারী-ক্ষমতা উভয়টিই আছে। ডা. হ্যানিমান তার সময়ে স্কারলেট ফিভারে উপযুক্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রোগ প্রতিরোধক হিসাবে ব্যবহার করেন। বলা চলে, হোমিওপ্যাথির কার্যক্ষমতার পরিচয় ও সুনামটির সর্বপ্রথম ব্যাপকমাত্রায় প্রসার শুরু হয়- এপিডেমিকে এর প্রয়োগের পর।
এরপর বেশ দ্রুতই এই পদ্ধতিটি অন্যান্য হোমিওপ্যাথগণ ব্যবহার করতে শুরু করেন এবং পরবর্তীতে পৃথিবীতে দেখা দেয়া বহু মহামারীতে তা সফলতার সাথে ব্যবহার করা হয়। যে সমস্ত মানুষ, দেশ, সম্পদ্রায়, রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ এ সম্বন্ধে জ্ঞান রাখেন এবং ব্যবহার করতে ইচ্ছুক হন- সেখানে এটি তার সাফল্যের প্রমাণ এখনো একইভাবে প্রদর্শন করতে সক্ষম হচ্ছে- চলমান কভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবেও বহুস্থানে যার প্রমাণ আমরা পাবো। নিচে এরকম কিছু ঐতিহাসিক ও সাম্প্রতিক উদাহরণের সংকলন প্রকাশ করছি।
Chikungunya
২০০৬ সাল: ইন্ডিয়ার কেরালা, একদল চিকিৎসক চিকনগুনিয়ার প্রতিরোধক হিসাবে একটি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ বিতরণ করেন। ফলাফলে যা পাওয়া যায়, যাদেরকে এই প্রতিরোধক ঔষধ দেয়া হয়েছিলো, তাদের মাত্র ১৭% মানুষ চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়, কিন্তু যাদের ঔষধটি দেয়া হয়নি- তাদের মাঝে আক্রান্ত হয় ৭৩%। [১]
Cholera
১৮৩১ সাল: ১৮৩১ সালে স্যামুয়েল হ্যানিমান নিজে এশিয়াটিক কলেরা মহামারীকে মূলত তিনটি ঔষধ দ্বারা আরোগ্য করেন ও প্রতিরোধ করেন। [২]
১৮৪৯ সাল: ডা. ক্লিমেনস ভন বাউনিংহাউসেন ১৮৪৯ সালে ইউরোপিয়ান এপিডেমিকে হ্যানিমানের সুপারিশকৃত ঔষধগুলোর দ্বারা ‘অজ্ঞাত’ সংখ্যক কলেরা সংক্রমিত ব্যক্তিকে চিকিৎসা করেন ও প্রতিরোধ করেন। প্রচলিত চিকিৎসায় যেখানে মৃত্যুহার ছিলো ৫৪-৯০%, বাউনিংহাউসেনের রোগীদের মাঝে এই মৃত্যুহারটি ছিলো মাত্র ৫-১০%।[৩]
১৮৪১–১৮৫৪ সাল: Marseilles এর Convent Refuge-তে চিকিৎসাকৃত কলেরা আক্রান্ত ব্যক্তিদের হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় হওয়া মৃত্যুহারটি Dr. Charge একটি পরিসংখ্যান-ছকের মাধ্যমে প্রদর্শন করেন। সেখানে দেখা যায়, যেখানে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রোগ-প্রতিরোধক হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে কোন আক্রান্ত কেইস পাওয়া যায়নি। [৪]
Dengue Fever
১৯৯৬ সাল: ‘ডেঙ্গু হেমরোজিক ফিভার’ মহামারীর সময় দিল্লীর অন্তত ৩৯,২০০ জন লোকের মাঝে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রোগ-প্রতিরোধকল্পে বিতরণ করা হয়েছিলো বলে ইন্ডিয়ার Central Council of Research in Homoeopathy প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ১০ দিন পর ২৩,৫২০ জন লোকের ফলো আপ থেকে জানা যায়, এর মধ্যে ৫জন লোক (০.১২৫%) মাত্র মৃদু উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছে, অন্যদের এই রোগটি আক্রমণ করেনি বা কোন উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারেনি [৫]। ডেঙ্গু মহামারীর সময়টিতে লোকদের মাঝে সাধারণভাবে এর আক্রমণের হার ছিলো সর্বনিম্ন ৪০-৫০%, কিন্তু কোথাও কোথাও তা ৮০-৯০% পর্যন্তও হতে দেখা গেছে (World Health Organisation) [৬]
২০০১ সাল: ২০০১ সালের মে মাসে ব্রাজিলের সান পাওলোতে, ডেঙ্গু মহামারী চলাকালীন একটি ঔষধের একটি মাত্র ডোজ প্রতিরোধক হিসাবে সর্বোচ্চ আক্রান্ত এলাকার আশেপাশের বসবাসকারীদের ৪০% অধিবাসীর মাঝে দেয়া হয়। ফলাফলস্বরূপ, আশে পাশের অন্য যে এলাকাগুলোতে ঔষধটি প্রদান করা হয়নি তার তুলনায়, ঔষধপ্রদত্ত এলাকাগুলোতে আক্রান্তের হার ৮১.৫% কমে যায় (p<0.0001)। [৭]
২০০৬ সাল: কিউবা সরকার হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ব্যবহার করে ডেঙ্গু মহামারীটি- প্রতিরোধক ও আরোগ্যকারী চিকিৎসা পরিচালনার মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করে। ডেঙ্গু হেমোরজিক ফিভারের হার ব্যাপক মাত্রায় কমে যাওয়ায়, সেখানে বহু কম পরিমাণ ইন্টেনসিভ কেয়ার বেড ব্যবহারের প্রয়োজন হয়। [৮]
২০০৭ সাল: ২০০৭ সালের এপ্রিল ও সেপ্টেম্বর, ব্রাজিলের সান পাওলো এলাকায় বসবাসকারী ২০,০০০ নাগরিকের মাঝে একটি হোমিওপ্যাথিক কমপ্লেক্স (হোমিওপ্যাথিক কয়েকটি ঔষধের মিশ্রিত প্রয়োগ) প্রয়োগ করা হয়। দুঃখজনকভাবে, জাতীয় রাজনৈতিক ঘোরপ্যাচের দরুণ ট্রায়ালটি সম্পন্ন হবার আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়; কিন্তু তারপরও প্রাথমিক ফাইন্ডিংস ডেঙ্গু এপিডেমিকে প্রতিরোধকারী ও আরোগ্যকারী চিকিৎসা হিসাবে এর ফলপ্রসূতার সুস্পষ্ট ইতিবাচক ইঙ্গিত প্রদান করে। [৯]
২০০৮ সাল: ২০০৭ সালের শুরুর দিকে ডেঙ্গু মহামারীর কবলে পড়ার পর, ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওর ম্যাকে কাউন্টির স্বাস্থ্য-সচিব সেখানে “Homeopathy Campaign against Dengue” পরিচালনা করে। একটি রোগ প্রতিরোধক হোমিওপ্যাথিক মিশ্রণ-ঔষধের ১,৫৬,০০০ টি ডোজ উপসর্গবিহীন রোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় এবং আউট-প্যাশেন্ট ক্লিনিকে উপসর্গযুক্ত রোগীদের মাঝে ১২৯ ডোজ ‘জেনাস এপিডেমিকাস’ প্রয়োগ করা হয়। ২০০৭ সালের একই সময়ের তুলনায় ২০০৮ সালের প্রথম তিন মাসে, রোগের প্রাদুর্ভাব ৯৩% কমে যায়; অন্যদিকে যেখানে ঔষধগুলো প্রয়োগ করা হয়নি সেখানে এর প্রকোপ ১২৮% বেড়ে যায়। [১০]
২০০৮–২০১০ সাল: আগের রেফারেন্সে উল্লেখকৃত (ম্যাকে কাউন্টির) ব্রাজিলে ইন্টেগ্রেটিভ হোমিওপ্যাথি প্রোগ্রাম পরিচালনাকারী স্বাস্থ্যসচিবের একটি ইন্টারভিউ নেয়া হয়, তাতে উল্লেখ করা হয়: ২০০৭ সালে ডেঙ্গুর কবলে পড়া রিও ডি জেনেরিওর ম্যাকে শহরে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগ করার একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়, যার দরুণ ২০০৭ সালের তুলনায় ২০০৮ সালে ম্যাকেতে রোগের প্রাদুর্ভাব মোট ৭১% কমে যায়। উত্তর ফ্লুমিনসেন অঞ্চলে, যেখানে এই রোগ-প্রতিরোধকারী ঔষধটি ব্যবহার করা হয়নি- সেখানে এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পায় ২৭৩% এবং রিও ডি জেনেরিও প্রদেশে, এর প্রকোপের বৃদ্ধি হয় ৩১৫%। ২০১১ সালে, একই অঞ্চলে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রোগ প্রতিরোধক হিসাবে দেবার পর আক্রান্ত রোগীর কনফার্মড কেইস ২০১০ সালের তুলনায় ৮৯% হ্রাস পায়। ম্যাকে হেল্থ ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক যে পরিমাণ হোমিওপ্যাথিক রোগ-প্রতিরোধকারী ঔষধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়: ২০০৭ সাল: ২,১৬,০০০ ডোজ; ২০০৮ সাল: ২,০৩,৮৭৮ ডোজ; ২০০৯ সাল: ২,১১,০৫৯ ডোজ; ২০১০ সাল: ১,৭৮,৬৭৭ ডোজ। প্রাণঘাতী ও তীব্র উপসর্গযুক্ত ডেঙ্গু কেইসের মাত্রা ছিলো ২০০৭ সালে ০.২, ২০০৮ সালে ০.০, ২০০৯ সালে ০.১, এবং ২০১০ সালে ০.২। স্বীকার করা হয়, ২০১০ সালে তীব্র মাত্রার এই সংক্রমণে ম্যাকেতে এর প্রাণঘাতী প্রকোপ দেখা দেবার কথা ছিলো, যার মাত্রা হবার কথা ২.৫৮; কিন্তু তা কেবল ০.৬৮ পর্যন্ত পৌঁছায়, অন্যান্য শহর ও স্টেটের তুলনায় যা নিতান্তই কম। [১১]
২০১০ সাল: Colombo Municipal Council (CMC) এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণ কলম্বো শহর ও এর আশে পাশের শহরতলী এলাকার ডেঙ্গু মশার প্রজনন ও সংখ্যাবৃদ্ধি প্রবণ এলাকাতে একটি হোমিওপ্যাথিক প্রতিরোধক ঔষধ প্রয়োগ করে ডেঙ্গু রোধ করতে সমর্থ হন।[১২]
২০১২ সাল: ইন্ডিয়ার মুদুরাই এলাকায়, সরকারী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকগণ একটি হোমিওপ্যাথিক রোগ প্রতিরোধক ঔষধ ডেঙ্গু ফিভার মহামারী কবলিত হাজার হাজার ব্যক্তিকে বিতরণ করেন। প্রথমে চিকিৎসক, নার্স, হাসপাতাল কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদেরকে দেয়া হয়, এরপর শহরের নাগরিকদের প্রদান করা হয়। [১৩]
২০১২ সাল: ইন্ডিয়ার তিরুমানাগালামের সরকারী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ডেঙ্গু ফিভার প্রতিরোধের জন্য মহামারীকালীন সময়ে দুইটি ফ্রি ক্যাম্প করে এর প্রতিরোধক হোমিওপ্যাথিক ঔষধ বিতরণ করে।[১৪]
২০১২: ইন্ডিয়ার চিতোরের মেডিক্যাল এন্ড হেল্থ ডিপার্টমেন্ট, কুর্ণলে সোয়াইন ফ্লু এপিডেমিকে রোগ প্রতিরোধক হিসাবে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের সফলতার পর, ডেঙ্গু মহামারীতে ২.৫ মিলিয়ন মানুষের মাঝে হোমিওপ্যাথিক রোগ প্রতিরোধক ঔষধ বিতরণ করে। [১৫]
২০১২ সাল: ইন্ডিয়ার পুনাতে ডেঙ্গুর প্রতিরোধ ও প্রতিকারমূলক চিকিৎসাকল্পে KEM hospital এর গবেষকবৃন্দ ও চিকিৎসকগণ একটি হোমিওপ্যাথিক রোগ-প্রতিরোধককে জেনাস এপিডেমিকাস হিসাবে ব্যবহার করেন। [১৬]
২০১২ সাল: ইন্ডিয়ার তিরুমানাগালামে সরকারী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল- তদঞ্চলে ডেঙ্গু মহামারী চলাকালীন সময়ে ৩০টিরও বেশি ক্যাম্প করে, একটি হোমিওপ্যাথিক রোগ-প্রতিরোধক ঔষধ বিতরণ করে। [১৭]
২০১৩ সাল: ইন্ডিয়ার গোহাটির আয়ুশের চিকিৎসকবৃন্দ, তদঞ্চলের ডেঙ্গু মহামারীর প্রতিরোধ ও প্রতিকারকল্পে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগ করেন। স্বাস্থ্যসেবার প্রাক্তন ডেপুটি ডিরেকটর এবং আয়ুশের স্টেট প্রোগ্রাম অফিসার রোগটির সবচেয়ে ভালো প্রতিরোধক ঔষধ হিসাবে কন্সটিটিউশনাল ঔষধ ও নোসোড গ্রহণের পরামর্শ দেন।[১৮]
২০১৪ সাল: থাই সরকার কর্তৃক থাইল্যান্ডের সিংবুরি প্রভিন্সে হোমিওপ্যাথিক রোগ প্রতিরোধক বিতরণের পর সেখানে অন্য সমস্ত প্রভিন্সের তুলনায় সবচেয়ে কমমাত্রার ডেঙ্গু সংক্রমণ হতে দেখা যায় বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এরপর আরো ৭টি প্রদেশকে এই গবেষণার আওতায় আনা হয় এবং সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, সেখানেও একই রকম সফলতার পর সারা দেশ জুড়ে প্রোগ্রামটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে পরিকল্পনা প্রদান করা হয়। [১৯] চলবে….
References
- Dr R Rejikumar, Dr R S Dinesh etal. A Study on the Prophylactic Efficacy of Homoeopathic Preventive Medicine Against Chikungunya Fever. http://www.similima.com/pdf/efficacy-chiunguna-kerala.pdf
- Hahnemann S. 1801. Cure and Prevention of Asiatic Cholera, p.755, The Lesser Writings of Samuel Hahnemann, republished by B. Jain Publishers, 1993, New Dehli.
- Von Boenninghausen, C. Baron.1984. Bönninghausens Kleine medizinische Schriften [Lesser Medical Writings] (ed. Klaus H. Gypser), Heidelberg, 1984.
- Bradford, T. L., (Compiled by) 1900. The Logic of Figures or Comparative Results of Homeopathic and Other Treatments. p.130. Philadephia: Boericke and Tafel. Reprinted by Nabu Public Domain Reprints. 2010. (Original Bradford source: North American Journal of Homeopathy, volume 4, p.298.)
- Central Council of Research in Homoeopathy. CCRH News 1996-1997.
- WHO Fact Sheet: Dengue and Dengue Haemorrhagic Fever http://www.who.int/inffs/en/fact117.html
- Marino R (2008). Homeopathy and collective health: The case of dengue epidemics. International Journal of High Dilution Research; 7(25): 179-185.
- Secretaria Municipal de Saúde e Higiene da Prefeitura de São José do Rio Preto. Informe Técnico – 21/03/2007. 2007.
- Marino R (2008). Homeopathy and collective health: The case of dengue epidemics. International Journal of High Dilution Research; 7(25): 179-185. (http://www.feg.unesp.br/~ojs/index.php/ijhdr/article/viewFile/312/373)
- de Souza Nunes LA (2008). Contribution of homeopathy to the control of an outbreak of dengue in Macaé, Rio de Janeiro. International Journal of High Dilution Research; 7(25): 186-192.
- Dengue and Homeopathy: a successful experience from Macae http://www.ecomedicina.com.br/site/conteudo/entrevista22.asp
- Sri Lanka Daily News: Homeopathy to Treat Dengue http://archives.dailynews.lk/2010/08/04/news52.asp
- The Hindu: Keep Dengue at Bay with Homeopathy http://www.thehindu.com/news/cities/Madurai/article3531685.ece
- The Hindu: Homeopathy Camp for Dengue http://www.thehindu.com/todays-paper/tp-national/tp-tamilnadu/article3553076.ece
- The Hindu: Homeopathy to fight dengue fever http://www.thehindu.com/todays-paper/tp-national/tp-andhrapradesh/homeop…
- Homeopathy is new challenger for Dengue http://www.punemirror.in/article/2/20121110201211100842483927ea199fd/Hom…
- The Hindu: Dengue fever- homoeopathy camps evoke good response http://www.thehindu.com/todays-paper/tp-national/tp-tamilnadu/dengue-fever-homoeopathy-camps-evoke-good response/article4155839.ece
- The Times of India: Dengue menace – Homeopathic remedy explored http://articles.timesofindia.indiatimes.com/2013-09-12/guwahati/42007941…
- Ministry to try homeopathy in Sing Buri to fight dengue http://www.nationmultimedia.com/national/Ministry-to-try-homeopathy-in-S…30229320.html
[© Fran Sheffield 2005 – 2014]
Discussion about this post