[সংকলন: ডা. শাহীন মাহমুদ]
১৭৯৯ সালে ডা. স্যামুয়েল হ্যানিমান কর্তৃক আবিষ্কৃত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাপদ্ধতিটির মহামারী রোগের চিকিৎসা-সক্ষমতা এবং আরোগ্যকারী-ক্ষমতা উভয়টিই আছে। ডা. হ্যানিমান তার সময়ে স্কারলেট ফিভারে উপযুক্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রোগ প্রতিরোধক হিসাবে ব্যবহার করেন। বলা চলে, হোমিওপ্যাথির কার্যক্ষমতার পরিচয় ও সুনামটির সর্বপ্রথম ব্যাপকমাত্রায় প্রসার শুরু হয়- এপিডেমিকে এর প্রয়োগের পর।
এরপর বেশ দ্রুতই এই পদ্ধতিটি অন্যান্য হোমিওপ্যাথগণ ব্যবহার করতে শুরু করেন এবং পরবর্তীতে পৃথিবীতে দেখা দেয়া বহু মহামারীতে তা সফলতার সাথে ব্যবহার করা হয়। যে সমস্ত মানুষ, দেশ, সম্পদ্রায়, রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ এ সম্বন্ধে জ্ঞান রাখেন এবং ব্যবহার করতে ইচ্ছুক হন- সেখানে এটি তার সাফল্যের প্রমাণ এখনো একইভাবে প্রদর্শন করতে সক্ষম হচ্ছে- চলমান কভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবেও বহুস্থানে যার প্রমাণ আমরা পাবো। নিচে এরকম কিছু ঐতিহাসিক ও সাম্প্রতিক উদাহরণের সংকলন প্রকাশ করছি।
Diphtheria
১৯৩২ সাল: Dr. Chavanon কর্তৃক পরিচালিত ল্যাবরেটরি এক্সপেরিমেন্টের প্রকাশের পর দেখা যায় যে, হোমিওপ্যাথিক ঔষধের দ্বারা চিকিৎসা করার পর ৪৫ জন শিশুর Schick test নেগেটিভ এসেছে। [ ১ ]
১৯৪১ সাল: Dr. Patterson ও Dr. Boyd কর্তৃক পরীক্ষাটি আবার পুনরায় সম্পন্ন করা হয় এবং তাদের নিকটও হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগের পর ৩৩ জন শিশুর ২৩ জনের Schick test নেগেটিভ আসে।[২]
১৯৪৭ সাল: Dr. Roux পরীক্ষাটি পুনরায় পরিচালনা করেন এবং একই রকম ফলাফল প্রাপ্ত হন। [ ৩ ]
Epidemic Fever
২০০৭ সাল: ইন্ডিয়ার কেরালার সর্বত্র শরীর ব্যথা, জয়েন্ট ব্যথা, মাথাব্যথা, পিঠব্যথা, শীতবোধ, কম্পন, শোথ, বমি, কাশি ও সর্দি এবং চর্মোদ্ভেদযুক্ত একটি এপিডেমিক ফিভার ছড়িয়ে পড়ে। সরকারের Rapid Action Epidemic Control Cell – Homeopathy (RAECH) দ্রুতগতিতে একটি জেনাস এপিডেমিকাস নির্বাচন করে রোগ-প্রতিরোধক হিসাবে বিতরণ করে। দুইমাস পর, গবেষণাকার্যের ফলো আপে দেখা যায়, সর্বোচ্চ ঔষধটির রোগ প্রতিরোধের হার ছিলো মোট ৭৬.২% এবং গড়ে এই রোগ প্রতিরোধের হার ছিলো ৭৩.৮৩%। যারা জেনাস এপিডেমিকাস ঔষধটি ঠিকঠাকভাবে গ্রহণ করেছেন এবং যারা এর সাথে অন্য কোন ঔষধ গ্রহণ করেননি, তাদের মাঝে রোগপ্রতিরোধের হার ছিলো সর্বোচ্চ; যদিও জেনাস এপিডেমিকাস ঔষধটি রোগ প্রতিরোধকল্পে দেয়া হয়েছিলো কিন্তু যারা এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়ে গিয়েছিলো- তাদের ক্ষেত্রে তা প্রতিকারকারী ঔষধ হিসাবে কাজ করেছে; বহু লক্ষণ লক্ষণীয় রকমে, অতি অল্প সময়ে হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া এপিডেমিকের পরে, সাধারণভাবে যে সিকুইলিগুলো থেকে যায়, তার তুলনায় খুব অল্প কিছু উপসর্গের সিকুইলি ছিলো, খরচ অনেক কম হয়েছে এবং কর্মদিবস বা পাঠ্যদিবসের খুব কমই অপচয় হয়েছে। [ ৪ ]
Hepatitis
১৯৯১ সাল: ব্রাজিলের Dr. Eizayaga লক্ষ করেন যে, ভাইরাল হেপাটাইটিস প্রতিরোধকল্পে বহুবছর ধরে তার সচরাচর ব্যবহারকৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধটি একই সাথে প্রতিকারক ও প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করতে সক্ষম। হেপাটাইটিসে তার চিকিৎসা করা ব্যক্তিদের পরিবারবর্গ ও স্কুলের সহপাঠীদের তিনি রোগ প্রতিরোধক হিসাবে ঔষধটি প্রদান করতেন। ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে থাকা সত্ত্বেও তাদের কেউ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়নি। [ ৫ ]
Influenza and Respiratory Tract Infections
১৯৬৮ সাল: ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৭০ সালের মাঝের সময়টিতে, ইন্ডিয়ার ফ্যাক্টরি ও অফিসগুলোতে ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক ও এলোপ্যাথিক ঔষধের ফলাফলকে তুলনা করে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। এই জরিপের উদ্দেশ্য ছিলো, হোমিওপ্যাথিক রোগ প্রতিরোধক হিসাবে একটি নোসোডের কার্যকারিতা সুস্পষ্ট করা। প্রচলিত ধারার চিকিৎসকদের দ্বারা চিকিৎসাকৃত রোগীদের প্রায় ২০% ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়েছিলো। অন্যদিকে, হোমিওপ্যাথিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা রোগীদের ক্ষেত্রে তা নেমে এসেছিলো মাত্র ৬.৫%-এ। এলোপ্যাথিক্যালি চিকিৎসাকৃত রোগীদের তুলনায় হোমিওপ্যাথিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা আক্রান্ত রোগীগণ বেশ দ্রুত আরোগ্য লাভ করেছিলো। এলোপ্যাথিক চিকিৎসা করা রোগীদের কর্মদিবস অপচয় হয়েছিলো প্রায় আট দিন যা ছিলো হোমিওপ্যাথিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা রোগীদের দ্বিগুণ। [ ৬ ]
২০০৭ সাল: Human herpesvirus 1, human adenovirus C serotype 5, influenza A virus, human respiratory syncytial virus, human parainfluenza virus 3, human rhinovirus B serotype 14, ও human coxsackievirus serotype A9 অন্যান্য উপসর্গগুলোর সাথে সর্দি, গলাব্যথা, নাক-দিয়ে পানি পড়া, জ্বরঠুটো উঠা, ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়া, হ্যান্ড-ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ (HFM disease) এবং চোখ-উঠা (Conjuctivitis) সৃষ্টি করে। এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে একটি হোমিওপ্যাথিক কম্বিনেশন ঔষধ Gripp-Heel এর ইন-ভিট্রো পরীক্ষণের দ্বারা দেখা যায়- ভাইরাসের সক্রিয়তা উল্লেখযোগ্য গতিতে ২০% থেকে ৪০% হ্রাস পেয়েছে। [ ৭ ]
২০১০ সাল: Human rhinovirus B serotype 14, influenza A virus , H1N1 virus, herpes simplex virus 1, vesicular stomatitis virus, respiratory syncytial virus, parainfluenza type 3, ও adenovirus অন্যান্য উপসর্গগুলোর সাথে ঠান্ডা-সর্দি, গলাব্যথা, গ্ল্যান্ড ফোলা, মুখে ফুস্কুড়ি, নাক দিয়ে পানি পড়া, জ্বরঠুটো, ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়া হ্যান্ড-ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ (HFM disease) এবং চোখ-উঠা (Conjuctivitis) সৃষ্টি করে। হোমিওপ্যাথিক কম্বিনেশন ঔষধ Engystol ও Gripp-Heel এর ইন-ভিট্রো পরীক্ষণে সেটি এই ভাইরাসের বিরূদ্ধে কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়। ইন-ভিট্রো পরীক্ষণের দ্বারা দেখা যায়- ভাইরাসের সক্রিয়তা উল্লেখযোগ্য গতিতে ২০% থেকে ৪০% হ্রাস পেয়েছে। [ ৮ ]
২০১১ সাল: ফ্লু এবং একিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশনে হোমিওপ্যাথিক নোসোডের কার্যকারিতা পরীক্ষার লক্ষ্যে, ব্রাজিলের ৪৫০ জন শিশুর মাঝে দুইটি গ্রুপ করে, ৩০ দিন ধরে নোসোড এবং প্লাসিবো প্রয়োগ করা হয়। পরবর্তী ১২ মাসে প্লাসিবো প্রয়োগকৃত গ্রুপে ফ্লু এবং একিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন নির্ণয়ের হার- রোগ প্রতিরোধক ঔষধ প্রয়োগকৃত গ্রুপের তুলনায় তিনগুণ বেশি ছিলো। গবেষকদের মন্তব্য ছিলো, “চিকিৎসার স্বল্প খরচ এবং কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অনুপস্থিতি এই নোসোডগুলোকে Brazilian Public Health Service এর একটি কার্যকরী থেরাপিউটিক অপশন হিসাবে নিশ্চিত করে।” [ ৯ ]
Japanese Encephalitis
১৯৯৯ সাল – ২০০৩ সাল: কয়েক দশক ধরে অন্ধ্রপ্রদেশ স্টেটে Japanese encephalitis একটি উল্লেখযোগ্য রোগাক্রমণ ও মৃত্যুহার সৃষ্টি করেছে। ১৯৮৬ সালে, ২০৩৮ টি কেইসের মধ্যে ৬৩৮ টি মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়। এতে আক্রান্ত হয়- বিশেষ করে, শিশুরা। কিছু এলাকায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধ বেলেডোনাকে একটি রোগ-প্রতিরোধক হিসাবে প্রদান করার পর এই প্রাদুর্ভাব কিছুটা হ্রাস পায়। ইন্ডিয়ান মেডিসিন এন্ড হোমিওপ্যাথির সরকারী দপ্তর ১৯৯৯ সালে যখন পাবলিক হেল্থ সার্ভিস, সরকারী হোমিওপ্যাথিক ডিসপেনসারি, হোমিওপ্যাথিক ফার্মাসি ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের সহায়তায় পরিকল্পিতভাবে ঔষধটি রোগপ্রতিরোধক হিসাবে বিতরণ করেন- লক্ষ করা যায়, তখন থেকে এর প্রকোপ কমতে কমতে ২০০৩ সালে তা শূণ্যে এসে দাঁড়ায়। রোগ-প্রতিরোধক ঔষধটি ১৫ বৎসরের নিচের প্রায় ২০ মিলিয়ন শিশুকে প্রদান করা হয়। [ ১০, ১১ ]
২০১০ সাল: Central Council for Research in Homoeopathy এর সাথে সমন্বিতভাবে কলকাতার School of Tropical Medicine এর গবেষণায় দেখা যায়, মুরগীর আক্রান্ত ভ্রুণে ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে একটি নির্দিষ্ট পরিসরের শক্তির হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রোগপ্রতিরোধক হিসাবে সফল, যেখানে প্লাসিবো কোন ক্রিয়াই প্রদর্শন করেনি। [১২ ]
Leptospirosis
২০০৭ সাল – ২০০৮ সাল: বার্ষিক লেপ্টোস্পাইরোসিস মহামারীর চরম সংক্রমণের সময়কালে কিউবার সরকার চারটি লেপ্টোস্পাইরোসিস প্রজাতির বিরুদ্ধে ২.৩ মিলিয়ন জনগণের মাঝে একটি হোমিওপ্যাথিক নোসোড বিতরণ করে। বাদবাকী ৮.৮ মিলিয়ন জনসংখ্যা এই চিকিৎসা পরিকল্পনার বাইরে ছিলো। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে, চিকিৎসাকৃত এলাকাতে রোগটির প্রাদুর্ভাব ৮৪% হ্রাস পায়, যেখানে চিকিৎসা পরিকল্পনা বহির্ভূত এলাকার মানুষের মাঝে এর সংক্রমণ অব্যাহত ধারায় চলমান থাকে। এই কর্মপরিকল্পনাটির দরুণ প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়- “রোগের প্রাদুর্ভাবের ব্যাপক মাত্রায় হ্রাসকরণের সাথে দৃঢ়ভাবে সংশ্লিষ্ট (এই কর্মপরিকল্পনাটির) ফলাফল হচ্ছে- মহামারীর সম্পূর্ণ নিরসন”। এর রোগ-প্রতিরোধক ক্রিয়া লেপ্টোস্পাইরোসিস কেইসগুলোর ৮৪% হ্রাসকরণের মাধ্যমে ২০০৮ সাল পর্যন্ত চলতে থাকে, যেখানে একবার সেই ঔষধপ্রদত্ত অঞ্চলে আর কোন ঔষধ প্রদান করা হয়নি। চিকিৎসা-বহির্ভূত এলাকাতে লেপ্টোস্পাইরোসিস ইনফেকশন ২২% বৃদ্ধি পায়। [ ১৩]
২০১৪ সাল: ২০০৭-২০০৮ সালে করা কিউবার লেপ্টোসাইরোসিস প্রতিরোধ কর্মপরিকল্পনার পূণর্মূল্যায়ন ২০১৪-তে প্রকাশ করা হয়। প্রথমবারের পরীক্ষণের সম্ভাব্য ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো বিবেচনা করে, ও তাকে পূনর্মূল্যায়ন করার পর ফলাফল আগের সিদ্ধান্তকেই সমর্থন করে; নতুন বিশ্লেষণ অনুযায়ী, হোমিওপ্যাথিক রোগ-প্রতিরোধক ঔষধের দ্বারা নির্দিষ্ট-প্রকারের সংক্রামক রোগ যেমন, লেপ্টোস্পাইরোসিসের বিরুদ্ধে মানুষকে কার্যকরভাবে ইমিউনাইজ করা যেতে পারে। [ ১৪ ]
References
- Chavanon, P. 1952. La Dipterie, 4th Ed, St Denis, Niort: Imprimerie.
- Patterson, J. and Boyd, W.E. Potency Action: A Preliminary Study of the Alternation of the Schick Test by a Homeopathic Potency. British Homeopathic Journal. 1941; 31: pp.301-309.
- Eizayaga. F. Tratamiento Homeopatico de las Enfermedades Agudas y Su Prevension. Homeopatia. 1985; 51(324): pp. 352-362.
- Protective Efficacy of “Genus Epidemicus” (Homeopathic Preventative) Administered During Epidemic Fever in Kerala http://www.homoeopathy.kerala.gov.in/docs/jan2011/raech_report.pdf
- Treatise on Homeopathic Medicine by Francisco Eizayaga, MD, published by Ediciones Maracel, Buenos Aires, Brazil, 1991.
- Krishnamurty, Report on the use of Influenzinum during the outbreak of epidemic in India in 1968. Hahnemannian Gleanings 1970;37:225-6.
- Glatthaar-Saalmuller B (2007). In vitro evaluation of the antiviral effects of the homeopathic preparation Gripp-Heel on selected respiratory viruses. Canadian Journal of Physiology and Pharmacology; 85(11): 1084-1090.
- Roeska, K and Seilheimer, B. Journal of Immune Based Therapies and Vaccines 2010, 8:6 http://www.jibtherapies.com/content/8/1/6
- Lyrio C, Siqueira CM, Veiga VF, Homsani F, Marques AL, Biolchini J, Dantas F, de Matos HJ, Passos SRL, Couceiro JN, Holandino C (2011). The use of homeopathy to prevent symptoms of human flu and acute respiratory infections: A double-blind, randomized, placebo-controlled clinical trial with 600 children from Brazilian public health service. International Journal of High Dilution Research; 10(36): 174-176. http://www.feg.unesp.br/~ojs/index.php/ijhdr/article/view/499/513
- The Hindu: Japanese Encephalitis on the decline in State http://www.hindu.com/2003/04/02/stories/2003040204970400.htm
- Golden, I. 2010. Vaccination and Homeoprophylaxis: A Review of the Risks and Alternatives. 7th Edition. Isaac Golden Publications.
- Bandyopadhyay B, Das S, Sengupta M, Saha C, Das KC, Sarkar D, Nayak C (2010). Decreased intensity of Japanese encephalitis virus infection in chick chorioallantoic membrane under influence of ultradiluted belladonna extract. American Journal of Infectious Diseases; 6(2): 24-28.
- Bracho G, Varela E, Fernández R, et al. Large-scale application of highly-diluted bacteria for Leptospirosis epidemic control. Homeopathy 2010; 99: 156-166.
- A Reevaluation of the Effectiveness of Homoeoprophylaxis Against Leptospirosis in Cuba in 2007 and 2008 http://chp.sagepub.com/content/19/3/155
Discussion about this post