অনুবাদ: ডা. শাহীন মাহমুদ
[ইন্ডিয়ার বিশিষ্ট শিশু-বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একজন ডা. মেহেরবান সিং, তার “Pediatric Clinical Matters” বইতে শিশু-চিকিৎসার ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথদের গুনাবলীর একটা সুন্দর চিত্র তুলে ধরেছেন। ভালো লাগলো বলে, এই অংশটা অনুবাদ করলাম। আশা করি, আপনাদেরও ভালো লাগবে]
শিশুদের চিকিৎসা করতে গেলে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের কিছু সক্ষমতা এবং গুনাবলী অপরিহার্য:
⦿ যদিও হোমিওপ্যাথি এক ধরণের চিকিৎসাপদ্ধতি এবং একটি পেশা হিসাবে অনুশীলন করা হয়, তথাপি প্রত্যেকটি শিশুর মধ্যে এবং তাদের অভিভাবকগণের মধ্যে ঈশ্বর-দর্শন করে, এটাকে ঈশ্বরের উপাসনা বিবেচনায় চর্চা করা উচিৎ। জীবন অপরিসীম মূল্যবান। এবং শিশুর জীবনটাকে কখনোই অর্থের মূ্ল্যে মূল্যায়ন করা উচিৎ নয়।
⦿ একজন চিকিৎসকের অবশ্যই একটি বৈজ্ঞানিকতাসুলভ মানসিকতা এবং যুক্তির উপর ভিত্তি করা অনুসন্ধান পদ্ধতিগুলোতে দখল থাকতে হবে, কিন্তু শুধু অনুসন্ধানের খাতিরে তার দাসে পরিণত হওয়া যাবে না। তাকে সবসময় শিক্ষার্থী হিসাবে থাকতে হবে- সত্যকে এবং অজানা ভুল-ধারণাগুলোকে জানার চেষ্টায় বিরামহীন নিবৃত থাকতে হবে, যাতে তার জ্ঞানকে সে প্রজ্ঞায় পরিণত করতে পারে।
⦿ শিশুদের প্রত্যেকটা বিষয় এবং অভিভাবকদের আচরণ ও মনোভাবকে লক্ষ্য রেখে, তার অত্যন্ত সতর্ক পর্যবেক্ষণকারী হওয়া উচিৎ। তার পর্যবেক্ষণগুলো কোন আনুমানিক তত্ত্বের উপর না হয়ে, সুষম নীতির উপর হওয়া উচিৎ।
⦿ যেহেতু বেশিরভাগ অভিভাবকগণই শিশুদের বিভিন্ন রোগে হোমিওপ্যাথির সক্ষমতার ব্যাপারে ভুল ধারণা এবং প্রচলিত মিথেই ভারাক্রান্ত- কাজেই (হোমিওপ্যাথির) ক্ষমতার উপর অভিভাবকগণের আস্থা তৈরি করার মতো সামর্থ্য তার থাকা উচিৎ।
⦿ তার মধ্য থেকে আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য্য এবং নম্রতা নির্ঝরিত হওয়া উচিৎ।
⦿ তার মানবতাবোধ থাকতে হবে।
⦿ তার মনোরম ব্যক্তিত্ব এবং স্নেহাদৃত দৃষ্টি থাকতে হবে, যাতে শিশু তাকে ভয় পাওয়ার বদলে তার সাথে স্বচ্ছন্দ অনুভব করতে পারে।
⦿ শিশুদের প্রতি তার নিখাদ ভালোবাসা থাকতে হবে।
⦿ নিজের জ্ঞান ও হোমিওপ্যাথির সীমাবদ্ধতা উপলব্ধি করে তার উদ্ধত হওয়া উচিৎ নয়। সিনিয়র হোমিওপ্যাথ বা শিশু-বিশেষজ্ঞের কাছে কোন কেইস রেফার করতে তার কখনোই দ্বিধা করা উচিৎ নয়।
⦿ নিজের অহংবোধ এবং আর্থিক লাভসহ, সমস্ত কিছুর উপরে- তার চূড়ান্ত মিশন হওয়া উচিৎ, শিশুর কল্যাণ।
⦿ হাসপাতাল বা OPD এর মতো ক্লিনিক্যাল ক্ষেত্রগুলোতে, হোমিওপ্যাথের তার সহকর্মীদের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক থাকা উচিৎ। ছাত্রদেরকে মৃত্যুশয্যাগ্রস্থ রোগীর ক্ষেত্রে করণীয় ব্যাপারে সর্বোৎকৃষ্ট নির্দেশনা প্রদান এবং নিজেকে তার আদর্শ পথিকৃৎ হিসাবে তুলে ধরা হোমিওপ্যাথদের কর্তব্য।
Discussion about this post