অনুবাদ: ডা. শাহীন মাহমুদ:
জর্জ ভিথোলকাস:
পৃথিবীখ্যাত হোমিওপ্যাথদের একজন, যাকে হোমিওপ্যাথির সর্বকালের সবচেয়ে ভালো শিক্ষক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ‘হোমিওপ্যাথিক শিক্ষার পুনরূদ্ধার ও হোমিওপ্যাথদের সর্বোচ্চ মানের প্রশিক্ষণপ্রদানের অবদানের জন্য’ ১৯৯৬ সালে তিনি ‘Right Livelihood Award’ (‘বিকল্প নোবেল পুরস্কার’ নামে খ্যাত) সম্মানে ভূষিত হন। ১৯৯৫ সালে তিনি গ্রিসের এলোনিসসে ‘International Academy of Classical Homeopathy’ প্রতিষ্ঠা করেন- যেখানে তিনি ‘Educational Department’ এর প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এই একাডেমিটিতে তিনি তার ৪০ বৎসরের অভিজ্ঞতাপ্রসূত জ্ঞান থেকে শিক্ষা প্রদান করেন এবং ‘Levels of health’ প্রসঙ্গে তার সর্বসাম্প্রতিক তত্ত্বের শিক্ষা প্রদান করেন। হোমিওপ্যাথিক শিক্ষাপদ্ধতি সম্বন্ধে ডা. জর্জ ভিথোলকাসের এই সাক্ষাৎকারটি Hpathy Ezine –এর সম্পাদকদের একজন ডা. মণীষ ভাটিয়া নিজেই গ্রহণ করেন এবং তা ২০১৩ সালের আগস্ট মাসের সংখ্যায় তাতে প্রকাশ করেন।
মণীষ ভাটিয়া: প্রফেসর ভিথোলকাস, আপনাকে Hpathy এর আলোচনায় স্বাগতম। এই মাসে, আমরা আমাদের লেখক ও হোমিওপ্যাথিক শিক্ষার ব্যাপারে আলোকপাত করছি। আপনাকে হোমিওপ্যাথির শিক্ষকদের শিক্ষক বলা হয়, কাজেই হোমিওপ্যাথিক শিক্ষা নিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে আপনার চেয়ে উপযুক্ত আর কেউ নেই। আপনি কয়েক দশক ধরে পৃথিবীর সর্বপ্রান্তের হোমিওপ্যাথদের শিক্ষাপ্রদান করে আসছেন। বিশ্বজুড়ে হোমিওপ্যাথিক শিক্ষার মানের ব্যাপারে আপনার সাধারণ অভিব্যক্তি কি?
জর্জ ভিথোলকাস: শিক্ষা বর্তমান সময়ে হোমিওপ্যাথির সবচেয়ে উত্তপ্ত ইস্যু। আমি যা বলতে চাচ্ছি: হয় আমরা হ্যানিমানিয়ান ধারায় সঠিক শিক্ষাকে তার বিস্ময়কর ফলপ্রসূতা নিয়ে অনুসরণ করবো- অথবা আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো এবং সেই জায়গাটিতে আসন গাড়বে চালিয়াতি, কল্পনা ও উন্মত্ততার কালো ছায়া। হোমিওপ্যাথি ফলপ্রসূ হতে তাকে যথাযথভাবে পড়তে হবে এবং গভীরভাবে বুঝতে হবে।
আমি এ ব্যাপারে সতর্ক যে, বর্তমানে পৃথিবীজুড়ে বেশ কয়েকটি নিষ্ঠাবান শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে যারা পড়াশুনার জন্য সুবিস্তৃত প্রোগ্রাম তৈরি করে হোমিওপ্যাথিক শিক্ষার পূর্ণতার জন্য প্রয়োজনীয় আদর্শ মানকে নির্দিষ্ট করার চেষ্টা করছে। সেই সব শিক্ষাক্ষেন্দ্রগুলো যা বুঝতে পারেনি তা হচ্ছে- কারো শেখানোর অধিকার অর্জনের আগে শিক্ষার্থীদের সামনে চিকিৎসার মাধ্যমে তার রোগী আরোগ্য করতে পারা উচিৎ- যাতে তার জ্ঞান ও শিক্ষা সঠিক হিসাবে প্রমাণিত হয়। যদি এই নিয়মটির বাস্তব প্রয়োগ না হয়, তাহলে সর্বধরণের শিক্ষকগণ যা শেখাবে তা হোমিওপ্যাথি নয়, সেটা তাদের নিজ নিজ খেয়াল ও বাতিক। যদি কেউ তার প্র্যাকটিসের কিছু সফল কেইস বেছে নেয় এবং তা জনসাধারণের সামনে তুলে ধরে- তার শিক্ষাপ্রদান করার যোগ্যতার ব্যাপারে এই প্রমাণটি যথেষ্ঠ নয়। একাধিক ঔষধ ব্যবহার না করে, সঠিক ঔষধ অনুসন্ধানে তার লাগাতার সফলতা এবং সদৃশবিধানের প্রয়োগই হচ্ছে একমাত্র প্রমাণ।
আজ প্রকৃত জ্ঞানের কদর করা হয় না- কারণ তা বাস্তবায়ন করতে একটি উঁচুমাত্রার নিষ্ঠা এবং পূর্ণরূপে দখলদারিত্ব আনতে পড়াশুনার প্রয়োজন হয়। অপরদিকে, একজন ‘শিক্ষক’ শিক্ষার্থীদের যতবেশি ‘মজাদার’ আবর্জনা দিয়ে বিনোদন দিয়ে যাচ্ছে, সে তত বেশি মারাত্মক একটি ব্যর্থতার পথ তাদের অনুসরণ করতে প্রলোভিত করছে। আমি ‘মারাত্মক’ শব্দটি বুঝে-শুনেই ব্যবহার করেছি, কারণ প্রকৃত শিক্ষার অজ্ঞতা তার রোগীদের মৃত্যু ও তার প্র্যাকটিসকে একটি কানাগলির দিকে নিয়ে যাবে।

মণীষ ভাটিয়া: হ্যা, তত্ত্ব ও বাস্তব অনুশীলন একইভাবে মিলেমিশে চলা উচিৎ। এবং এটিও সত্য, সঠিক পথে হোমিওপ্যাথিক প্র্যাকটিস করা সহজ নয়। ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা তাকে আরো কঠিন করে তোলে। হোমিওপ্যাথিক শিক্ষার মান এক দেশ থেকে আরেক দেশে ভিন্ন হয় এবং হোমিওপ্যাথির ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে অভিন্ন আদর্শ মান গৃহীত হতে আরো বহু সময় লাগবে। সে পর্যন্ত একজন হোমিওপ্যাথির শিক্ষার্থী, তার উন্নত শিক্ষা- যা তাদের ভালো হোমিওপ্যাথ হতে সাহায্য করবে – তা নিশ্চিত করার জন্য কি করতে পারে?
জর্জ ভিথোলকাস: প্রিয় মণিষ, একটি অভিন্ন হোমিওপ্যাথিক শিক্ষাব্যবস্থার স্বপ্ন বাস্তবতা থেকে বহু দূরে। কারণটি হচ্ছে- আদর্শবাদ, যা আত্মিকতার দিকে প্রবণতাযুক্ত সমাজগুলোকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে পারতো তার বদলে সেখানে আমাদের বর্তমান আধুনিক সমাজ বস্তুবাদ ও শক্তিপ্রয়োগের নীতির দ্বারা চালিত হচ্ছে। কেবলমাত্র ওরকম সমাজগুলোই ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথির মতো মেডিক্যাল কেয়ার সিস্টেমগুলোকে গ্রহণ করে নিয়ে তার অগ্রগতির প্রচেষ্টা করতে পারতো।
তারপরও এরকম সঠিক জ্ঞানের শিক্ষাকেন্দ্র এখনো আছে, কিন্তু শিক্ষার্থীদেরকে প্রকৃত হোমিওপ্যাথিক শিক্ষার জন্য সেইসব উৎসগুলোর অনুসন্ধান করা উচিৎ- যেগুলো বিশাল সব ডিগ্রির আড়ম্বরে জনসাধারণের চোখের আড়ালে পড়ে আছে কিন্তু বাস্তব প্রয়োগ, পরীক্ষামূলক কাজ ও গবেষণার উন্নয়নে ও অগ্রগতিতে ভিত্তিমূলক কাজ করে যাচ্ছে।
এই রকম ইন্সটিটিউশন এবং একাডেমি বর্তমান কিন্তু সেগুলো খুঁজে পাবার জন্য এই পরম নিয়মটিকে মনে রেখে শিক্ষার্থীদের সতর্ক অনুসন্ধান চালানো উচিৎ যে, সেইসব শিক্ষালয় যা প্রতিজ্ঞা করেছে তা তারা প্রদান করতে পারবে: রোগীর আরোগ্য! তারা যদি ভুল শিক্ষাদর্শকে বিশ্বাস করে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক হবে- কারণ ভুল শিক্ষাটি সবসময়ই তার নিজের পথে এগিয়ে যাবে এবং পরবর্তীতে তা থেকে বেরিয়ে আসা সাংঘাতিক মুশকিল হয়ে যাবে।
মণীষ ভাটিয়া: আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপারটিকে সহজ করার লক্ষ্যে, বিশ্বজুড়ে হোমিওপ্যাথিক শিক্ষাকে অভিন্ন মানে উন্নীত করতে হোমিওপ্যাথিক কম্যুনিটি কি করতে পারে? এই দুঃসাধ্য কাজটি কিভাবে সম্পন্ন করা যেতে পারে?
জর্জ ভিথোলকাস: বেশ! এটি একটি চমৎকার প্রশ্ন; আমি নিজে এটা নিয়ে বহু ভেবেছি কিন্তু কোন সন্তোষজনক উত্তর পাইনি। একটি সমাধান হতে পারে যে ইউনিভার্সিটি, একাডেমি এবং কলেজগুলো ও হোমিওপ্যাথির স্বীকৃত মাস্টার্স প্রোগ্রামগুলোর জন্য হোমিওপ্যাথিক শিক্ষাপ্রদানের বর্তমান কাঠামোতেই তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষা দেয়া যেতে পারে এবং তা করা উচিৎ। আসলে, এক্সপার্টদের এই ধরণের দূর-শিক্ষনের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রদানের পদ্ধতি ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে এবং আমি এর সাথে একমত। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে বৈরিতা। প্রতিটি ইউনিভার্সিটি, কলেজ ও একাডেমির শিক্ষাপ্রদানে তাদের নিজেদের পথ ও পদ্ধতি রয়েছে এবং যদি এক্সপার্টদের মতামত এবং শিক্ষা, যা ইতোমধ্যে কলেজে শেখানো হয়েছে- তার সাথে কারো সাথে না মেলে, দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষগণ এই সাংঘর্ষিক প্রোগ্রামের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সমস্যায় পড়ে যাবে।
এই সমস্যার জন্য আমার কাছে একটা সমাধান আছে কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছি, তা হয়তো বাস্তবমূখী বলে মনে হবে না।
মণীষ ভাটিয়া: সমাধানটি কি?
জর্জ ভিথোলকাস: ৫ জন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথ নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা উচিৎ এবং সমস্ত হোমিওপ্যাথিক ইন্সটিটিউশন, যারা তাদের মূল্যায়নের জন্য কমিটিটিকে আমন্ত্রণ প্রদান করার মতো যথেষ্ঠ আত্মবিশ্বাসী- তাদের সেই ইন্সটিটিউশনগুলোতে কমিটিটি পরিদর্শন করবে এবং দুই বছরের অনুসন্ধানের শেষে, সেই সমস্ত হোমিওপ্যাথিক শিক্ষাদান কেন্দ্রগুলোকে মূল্যায়ন করে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে। এই রিপোর্টটিকে বিশেষজ্ঞদের করা এক্সপার্ট মতামত হিসাবে বিবেচনা করা হবে। এভাবে একপ্রকারের ঐক্যমত্য গঠন করার প্রস্তুতি শুরু করা যেতে পারে- যা সর্বোচ্চ সিরিয়াস শিক্ষাকেন্দ্রগুলো দ্বারা গৃহীত হবে।
এজন্য অবশ্য ব্যাপক পরিমাণ অর্থনৈতিক সাপোর্টও প্রয়োজন হতে পারে- যেখানে লোকজনকে দুই বছর ধরে বেতন দিয়ে যেতে হবে। LIGA Medicorum Homeopatica Internationalis এই খরচ বহন করতে পারে এবং লোকদেরও নির্বাচন করতে পারে।
আমার বিশ্বাস, মূল্যায়নের জন্য খুব বেশি ইন্সটিটিউশন আবেদন করবে না কিন্তু এই বাস্তবতাটিই সেই সব শিক্ষাকেন্দ্রগুলোর অধিকাংশকেই অপসারিত করবে, যারা হোমিওপ্যাথি শিক্ষা দিচ্ছে বলে দাবি করে (অথচ বাস্তবে তার বিপরীত)।

মণীষ ভাটিয়া: আপনার দুটো আইডিয়াই আমার চমৎকার লেগেছে! হোমিওপ্যাথির উন্নত শিক্ষাকেন্দ্রগুলোকে চিহ্নিত করতে লিগার মতো একটি আন্তর্জাতিক হোমিওপ্যাথিক প্রতিষ্ঠান-স্বীকৃত হোমিওপ্যাথিক কলেজগুলোর সাথে এক্সপার্টদের একটি দলের সহযোগিতার ধারণা- শিক্ষার্থীগণ যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন তার একটি বাস্তব সমাধান।
আন্তর্জাতিক শিক্ষাগুরুদের নিকট থেকে শিক্ষাগ্রহণের জন্য অনলাইন মাধ্যমকে ব্যবহারও যথেষ্ঠ অর্থ বহন করে। পৃথিবীর বৃহত্তর অংশে থাকা দ্রুতগতির ইন্টারনেট ও যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে ভৌগোলিক অবস্থান আজ অধর্তব্যে পরিণত হয়েছে। আমেরিকা ও ইউরোপের বেশিরভাগ ইউনিভার্সিটি বর্তমানে অনলাইন স্টাডি প্রোগ্রামগুলোকে অনুমোদন করে। আপনার একাডেমিও হোমিওপ্যাথিক শিক্ষার্থী ও প্র্যাকটিশনারদের জন্য দূরশিক্ষণ কোর্স সুলভ করেছে, যার মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের মানুষ আপনার কাছ থেকে শিখতে পারবে। এই কোর্সের যাত্রা শুরু হলো কিভাবে? অনুগ্রহ করে যদি বিস্তারিত বলতেন!
জর্জ ভিথোলকাস: এই কোর্সটি প্রাণ পেয়েছে একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব Maria Chorianopoulou PhD এবং গ্রিসের ই-লার্নিংয়ের অন্যতম অভিজ্ঞ গুরুদের একজন Mr. Christos Aposkitis এর অনুপ্রেরণায়। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শিক্ষাজগৎটি একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে, যেখানে শিক্ষার্থীগণ তাদের নিজেদের গৃহত্যাগ না করেও সরাসরি এক্সপার্টদের কথা শোনার সুযোগটি পেতে পারে। ইন্টারনেট বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির যে ক্ষতিটা করে যাচ্ছে এবং নীতি ও নৈতিকতার যে পদস্খলন ঘটাচ্ছে- ইন্টারনেটের এই আশির্বাদটি তার ক্ষতিপূরণ বলা যেতে পারে। যে পরীক্ষাটি আমরা শুরু করেছি- আমরা যা আশা করেছিলাম সেটা তার চেয়ে বহুগুণ ভালোভাবে চলছে এবং নিজেদের ঘরে থাকা বা তাদের নিজেদের শহরে থাকা ছোট ছোট দলবদ্ধ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে সাড়া পাচ্ছি- তা চমকপ্রদ।
আমি জার্মান শিক্ষার্থীদলকে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ৪ বৎসরে- বৎসরে দুইবার করে যা দিচ্ছিলাম, সেগুলোই শিক্ষাদানের বিষয়বস্তুগুলোর অন্তর্ভুক্ত। মূল কোর্সের বাইরে, শিক্ষার্থীগণ তাদের পোস্টগ্রাজুয়েট কোর্স চালিয়ে যেতে পারে- যার মধ্যে, আজ পর্যন্ত আমি যা শিখিয়েছি তা অন্তর্ভুক্ত, এবং প্রধানত তা লাইভ কেইস এনালাইসিস এবং ফলো-আপ। আমরা সেই কোর্সগুলো তৈরি করছি যা ক্ল্যাসিকাল হোমিওপ্যাথি অনুশীলনের জন্য অত্যন্ত দিক-নির্দেশক হবে। অর্গাননের উপর লেকচারও যোগ করা হবে।
শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে যে মন্তব্যগুলো পাচ্ছি তা এত উৎসাহব্যঞ্জক যে, আমরা সবাই ফলাফল নিয়ে খুবই আনন্দিত।
আমার বিশ্বাস, এই কোর্সগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে সঠিকভাবে ক্ল্যাসিকাল হোমিওপ্যাথি অনুশীলন করার একটি জোর তাগাদা ও শক্তিশালী উদ্দীপনা বয়ে আনবে এবং এই সত্যিকারের পবিত্র আরোগ্যকারী কলার ব্যাপারে তাদের একটি উচ্চতর দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করবে।
মণীষ ভাটিয়া: অনলাইনে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রদানের প্রতিবন্ধকতাগুলো কি? সামনা-সামনি শিক্ষাপ্রদানের সাথে এই প্রক্রিয়াটি কতটা ভিন্ন?
জর্জ ভিথোলকাস: শুরুতে এটা ভিন্ন বলে মনে হতে পারে, এবং যারা আমার শিক্ষাগুলোর ক্রমোন্নতিকে ঘৃণা করে তাদের দ্বারা প্রচুর নেতিবাচক মন্তব্যও করা হয়। কিন্তু যখন শিক্ষার্থীদের মন্তব্যগুলো এসে পৌঁছে, এটি সুস্পষ্ট হয় যে- এই শিক্ষাপ্রদান পদ্ধতিটি লাইভ সেসনের মতো একইভাবে ফলপ্রসূ। আসলে বরঞ্চ এটা আরো উন্নত- কারণ এতে টেক্সটগুলো এডিট করা হয়েছে এবং এটিতে সময়ের কোন অপচয় হয় না- লাইভ সেসনগুলোতে সাধারণত যা হয়ে থাকে।

মণীষ ভাটিয়া: ইন্টারনেট পৃথিবীকে বিশ্বপল্লীতে পরিণত করেছে এবং জাতিগুলোর ভৌগোলিক সীমাকে তুচ্ছ করে কারো জ্ঞানের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভবপর করেছে। কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থা ও চিকিৎসাচর্চার আইনগত ভিত্তি প্রতিটি দেশে ভিন্ন। আপনি অনলাইন কোর্স প্রদানের আইনগত দিকটির কি ব্যবস্থা করবেন?
জর্জ ভিথোলকাস: আজকের দিনের যে কেউ জানে, ইন্টারনেট একটি মাধ্যম- যাকে গঠনমূলক অথবা বিধ্বংসীরূপে বিবেচনা করা যেতে পারে। আমি মনে করি যে, এর ব্যাপক সৃষ্টিশীল সম্ভাবনাগুলোর মধ্যে একটি- “বিশেষায়িত জ্ঞান”-কে সময়ের কোন বাঁধা ছাড়াই পৃথিবীজুড়ে মানুষের কাছে পৌঁছানোর মধ্যে নিহিত।
যদি একটি প্রোগ্রাম ভালোরকমে সংগঠিত হয়, সঠিক ও ফলপ্রসূভাবে প্র্যাকটিস করতে যে জ্ঞানগুলো মানুষের প্রয়োজন- তার সমস্তকিছু পেতে আদৌ কোন সমস্যা হবে না। আমাদের প্রোগ্রাম সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ ও সবচেয়ে সম্পূর্ণ প্রোগ্রাম যা শিক্ষার্থীকে হোমিওপ্যাথির সর্বদিকের জ্ঞান প্রদান করবে। যদি নিজেদের দেশে প্র্যাকটিস করার আইনগত বৈধতা তাদের থেকে থাকে, এই জ্ঞানগুলো তাহলে একিউট ও ক্রনিক কেইসগুলো চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে তাদের অস্ত্রভাণ্ডারে যোগ করতে পারবে। ইতোমধ্যে আমরা যে সাড়া পেয়েছি তা আসলেই দারুন।
মণীষ ভাটিয়া: এ ব্যাপারটি যথেষ্ঠ অর্থবহন করে। জ্ঞানকে ভৌগলিক সীমার মাঝে আবদ্ধ করা উচিৎ নয় কিন্তু শিক্ষার্থীদের কেবল যদি তাদের নিজেদের দেশের আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য যোগ্যতা থেকে থাকে, তবে সেই আইন অনুসরণ করেই এই জ্ঞানকে তাদের প্র্যাকটিসে ব্যবহার করা উচিৎ। আপনার কোর্সগুলো সত্যিই চমৎকার এবং এটি আরো বৃহত্তর ব্যাপার যে, পৃথিবীজুড়ে থাকা শিক্ষার্থীগণ আপনার কাছ থেকে বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারবে। আমি আপনার কোর্সের লিংকটি শিক্ষার্থী ও হোমিওপ্যাথদের দিতে চাচ্ছি-
- E-Learning Program by International Academy of Classical Homeopathy, Greece
- E-course on Levels of Health by George Vithoulkas
ধন্যবাদ প্রফেসর ভিথোলকাস, আপনার মূল্যবান সময় আমাদের দেবার জন্য এবং হোমিওপ্যাথিক শিক্ষার ব্যাপারে আপনার অন্তর্দৃষ্টি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।