[মূল: ‘The Case for Letting Fevers Run Their Course’ Paul A. Offit, MD, is a professor of pediatrics and director of the Vaccine Education Center at the Children’s Hospital of Philadelphia. Pennsylvania, USA.]
বিগত কয়েক বছরে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে জ্বর পূর্ণমাত্রায় সম্পন্ন হতে না দিয়ে বার বার কমিয়ে দিলে- আমাদের শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা রোগারোগ্য হবার ক্ষমতা ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়।
আমাদের আধুনিক ব্যস্ত জীবনে জ্বর হওয়াকে আমরা রোগ বা অসুস্থতা বলে বিবেচনা করি। আসলে জ্বর আসা মানেই কি অসুস্থতা, জ্বর মানেই কি রোগ? আপাতদৃষ্টিতে জ্বরকে রোগ বলে মনে হলেও জ্বর মূলত কোন রোগ নয়। এটা যে কোনো সংক্রমণ, বা প্রদাহ, বা রোগ জীবাণুর বিরুদ্ধে আমাদের শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সংগ্রাম করার একেবারে প্রাথমিক একটি প্রয়াস বা প্রচেষ্টা। সুতরাং আমরা যখন Acetaminophen (Tylenol) বা Ibuprofen নামক Antipyretics দ্বারা জ্বরের চিকিৎসা করি, তখন বাস্তবিক পক্ষেই আমরা আমাদের শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে হাতকড়া পরিয়ে তার ক্ষমতাকে দূর্বল বা সীমিত করে রাখি। আপাতদৃষ্টিতে এটা অসঙ্গত বলেই মনে হতে পারে, কিন্তু এটাই স্বাভাবিক-সত্য। বর্তমানে বিভিন্ন গবেষণায় এটা দেখা যায় যে, এই ধরনের Antipyretics দ্বারা জ্বরের চিকিৎসা করে জ্বরকে চাপা দিলে বা দমিয়ে রাখলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। তাই এখন সময় এসেছে এই জ্বর ভীতিকে প্রশ্রয় না দিয়ে এই ভীতি থেকে বের হয়ে আসার।
জীবদেহে জ্বরের প্রয়োজনীয়তা বা উপকারিতা কতটুকু এই বিষয় নিয়ে প্রাণিদের উপর নানাবিধ গবেষণা করা হয়েছে। প্রাণিজগৎকে সাধারণত প্রধান দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথা-
১. Ectotherms (শীতল রক্তবিশিষ্ট অস্তন্যপায়ী প্রাণী, যারা পরিবেশ থেকে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় তাপ শোষণ করে বেঁচে থাকে।
২. Endotherms (উষ্ণ রক্তবিশিষ্ট স্তন্যপায়ী প্রাণী, যাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় তাপ দেহের অভ্যন্তরেই তৈরি হয়।
Ectotherms গ্রুপের প্রাণীরা তাদের দেহের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা পরিবেশ থেকে গ্রহণ ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। উদাহরণ স্বরূপঃ Lizards (গিরগিটি) দের যখন দেহে অতিরিক্ত তাপের দরকার হয় তখন তারা পাহাড় বা উচু গাছের উপর উঠে যায় এবং সূর্যালোক থেকে তাপ গ্রহণ করে -তাদের দেহের প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে। আবার যখন তাদের তাপমাত্রা কমানোর দরকার হয় তখন কোন গর্তে ঢুকে পড়ে।
অপরপক্ষে Mammals বা স্তন্যপায়ী প্রাণী হলো Endotherms গ্রুপের। তাই যখনই আমাদের শরীরে অতিরিক্ত তাপের প্রয়োজন হয় তখন আমাদের মস্তিষ্ক Cytokines (যেমনঃ Interleukin-1, Interleukin-2, Interleukin-6, Interleukin-8, Tumor Necrosis Factor, and Others) নামক এক প্রকার জৈব রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করে থাকে, যা আমাদের মস্তিষ্কের Hypothalamus নামক স্থান থেকে তৈরি হয় এবং আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা তৈরি করে। তাপমাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠলে আমরা কাঁপতে থাকি, চাদরের নিচে ঢুকে পড়ি, গরম কাপড় পরিধান করি, কারণ শরীরের রক্তের প্রবাহ হাত-পা থেকে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের দিকে (Core) (কেন্দ্রের) ধাবিত হয়।
Matthew Kluger, যিনি আমেরিকান Michigan University এর Physiology বিভাগের একজন Scientist ছিলেন, ১৯৭০ সালের মাঝামাঝি সময়ে কয়েকটি Lizards (গিরগিটি)- এর উপর একটি যুগান্তকারী পরীক্ষা করেছিলেন। তিনি কিছু গিরগিটিকে Aeromonas Hydrophila নামক ব্যাকটেরিয়ার জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত করেন। তারপর গিরিগিটি গুলিকে ভিন্ন ভিন্ন তাপমাত্রার চেম্বারে রাখেন, কিছু গিরগিটিকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (গিরগিটির জন্য নরমাল তাপমাত্রা) যুক্ত চেম্বারে রাখেন। কিছু গিরগিটিকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (গিরগিটির জন্য সামান্য জ্বর low fever) যুক্ত চেম্বারে রাখেন। আবার কিছু গিরগিটিকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (গিরগিটির জন্য উচ্চ জ্বর High fever) যুক্ত চেম্বারে রাখেন। ফলাফল ছিল চমকপ্রদ, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে ৩৮ ডিগ্রি অর্থাৎ নরমাল তাপমাত্রায় রাখা প্রায় ৭৫% গিরগিটি মারা যায়। ৪০ ডিগ্রি অর্থাৎ সামান্য উষ্ণ তাপমাত্রায় (low fever) রাখা প্রায় ৩৩% গিরগিটি মারা যায় এবং ৪২ ডিগ্রি অর্থাৎ তীব্র তাপমাত্রায় (High fever) রাখা কোন গিরগিটিই মারা যায় নি। পরবর্তিতে এই গবেষণাটি আরো অন্যান্য প্রজাতির উপর, যেমনঃ গোল্ডফিস মাছকে Aeromonas দ্বারা সংক্রমিত করে, ইঁদুরকে Coxsackie B virus বা Klebsiella দ্বারা সংক্রমিত করে, খরগোশকে Pasteurella দ্বারা ও কুকুরকে Herpes Virus দ্বারা সংক্রমিত করে আরো ব্যাপক ভাবে করা হয়। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই যে সমস্ত প্রাণিদের তাপমাত্রা বা জ্বরকে কমিয়ে দেয়া হয়েছে বা দমিয়ে দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই মারা গেছে। Matthew Kluger এর দাবি অনুযায়ী- এটাই প্রমান করে যে, জ্বর বা উচ্চ তাপমাত্রা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার (Immune response) একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া।
জ্বর আমাদের শরীরের জন্য যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ- এই বিষয়টি Matthew Kluger এর পরীক্ষার আরো অনেক আগে থেকেই আমাদের সামনে উঠে এসেছে। ১৯০০ সালের শুরুরদিকে, তখনো Antibiotics দ্বারা Bacterial infection এর চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি, Wagner von Jauregg নামক একজন Austrian Physician সিফিলিসে (Syphilis) আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তে Malaria জীবাণু অনুপ্রবেশ করান। Malaria জীবাণু সিফিলিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে প্রবল জ্বর তৈরি করে। Wagner von Jauregg তাদের কাঁপুনি দিয়ে তীব্র জ্বর আসতে দেন এবং তাদের এই অবস্থায় কিছুদিন ফেলে রাখেন। তারপর তাদের কুইনাইন (Quinine – an anti-parasitic drug, যা ১৮০০ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে আবিষ্কৃত হয়েছিল) দ্বারা চিকিৎসা করেন। তিনি দেখতে পান Malaria জীবাণু যা তীব্র জ্বর সৃষ্টি করেছিল সেই জ্বরের কারণে সিফিলিস (Syphilis) রোগ ভাল হয়ে গেলো। এই অর্জনের জন্য তিনি পরবর্তিতে ১৯২৭ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। পরে গনোরিয়া (Gonorrhea) রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও তার এই পর্যবেক্ষণলব্ধ জ্ঞান প্রয়োগ করে সফলতা লাভ করেছিলেন।
Wagner von Jauregg আমাদের কাছে প্রমাণ করেছিলেন যে, জ্বর যে কোন ধরনের ইনফেকশান বা সংক্রমণ বা প্রদাহ সারিয়ে তোলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সাথে এই প্রশ্নটিও আমাদের সামনে চলে আসে জ্বর কমিয়ে দেওয়া অর্থই কি যে কোন ইনফেকশান বা সংক্রমণকে আরো খারাপ এর দিকে নিয়ে যাওয়া? বর্তমানে ছোট বড় অনেক মানুষের উপর গবেষণা করা হয়েছে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবার জন্য। উত্তরগুলি ছিল প্রায় একই রকমঃ
• Antipyretics ঔষধ, Salmonella Bacteria এর নিঃসরণের ফলে Intestinal Infection ভুগতে থাকা মানুষজনের আরোগ্য আরো দীর্ঘায়িত করে দেয়।
• বাচ্চাদের Pneumonia বা রক্তের সংক্রমণের (Sepsis) ক্ষেত্রে জ্বর কমিয়ে দেয়া হলে তারা মারাও যেতে পারে।
• Influenza এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের Antipyretics এর মাধ্যমে জ্বর কমিয়ে দিলে আরোগ্য দীর্ঘায়িত হয়, রোগীর অবস্থা আরো বেশী জটিল হয়ে যেতে পারে।
• কিছু স্বেচ্ছাসেবীকে পরীক্ষামূলক ভাবে Rhinovirus নামক এক Common Cold virus দ্বারা সংক্রমিত করে দেখা যায় যে Antipyretics দিয়ে চিকিৎসা করা হলে তাদের আরোগ্য দীর্ঘায়িত হয় এবং তাদের সার্বিক অবস্থা আরো খারাপের দিকে চলে যায়।
• Chickenpox এ আক্রান্ত বাচ্চাদের Antipyretics দ্বারা চিকিৎসা করা হলে সুস্থ হতে অনেক সময় লাগে।
এই ধরনের ক্লিনিক্যাল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায় যে, জ্বর আসা আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং কখনোই সেই জ্বর চিকিৎসার নামে জোরপূর্বক চাপা দেয়া উচিৎ নয়। উচ্চ জ্বরে অর্থাৎ উচ্চ তাপমাত্রায় আমাদের শরীরের রক্তের WBC (White blood cells- neutrophils), B cells, এবং T cells পূর্ণমাত্রায় ভালোভাবে কাজ করতে পারে। এই প্রতিটা উপাদান (যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ) যে কোন ইনফেকশান বা সংক্রমণ বা প্রদাহকে সারিয়ে তোলার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমনঃ Neutrophils আমাদের শরীরের আভ্যন্তরীণ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া গুলিকে মেরে ফেলে। B cells আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে এন্টিবডি তৈরি করে- যা ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণকে প্রতিহত করে। আর T cells আমাদের শরীরে ভাইরাস আক্রান্ত কোষগুলিকে মেরে ফেলে আমাদের সুস্থ রাখে।
এই সমস্ত তথ্যগুলি জানার পরেও কেন আমরা জ্বর হলেই, জ্বর কমানোর জন্য এত উদগ্রীব হয়ে পড়ি? কেন আমরা জ্বর নিয়ে এত ভীত-সন্ত্রস্ত (Fever-phobic)? এর একটা কারণ হতে পারে- আমরা জ্বরকেই রোগ বলে মনে করে বিভ্রান্ত হই। আমরা মনে করি আমাদের জ্বর যত কম আসবে ততই আমরা সুস্থ থাকবো, অথবা জ্বর এলেই তা কমিয়ে দিলে আমরা সুস্থ হয়ে গেলাম। যদিও বাস্তবিক পক্ষে এর বিপরীত অবস্থাটাই সত্য এবং সেই অবস্থাটাই আমাদের কাম্য হওয়া উচিৎ। জ্বর নিয়ে আমাদের এই উদ্বেগ-উৎকন্ঠার অন্য আর একটি কারণ হয়ত আমরা মনে করি, উচ্চ জ্বর হলে আমাদের Brain damage হতে পারে, যদিও এই তত্বের কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ এখনো পাওয়া যায় নি। অন্য আর একটি মতবাদ হল, জ্বর না কমালে রোগীর Febrile Seizures (প্রচন্ড জ্বরে খিঁচুনি) হতে পারে, তাই আমাদের জ্বর হলে জ্বর কমানো উচিৎ। এটা যদিও ভয়ের কারণ বলে মনে হতে পারে, তবুও এই Febrile Seizures কোন Permanent ক্ষতি করে না। আর Antipyretics দিয়ে জ্বর কমিয়ে দিলেও Antipyretics কখনোই Febrile Seizures রোধ করতে পারে না।
সম্ভবত জ্বর কমানোর পিছনে সবচেয়ে যে কারণটি বেশী কাজ করে তা হল- যখন আমাদের জ্বর হয়, তখন আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, ফলে সাময়িক কষ্ট অনুভূত হয় আর আমাদের শরীরের তাপমাত্রা যখন স্বাভাবিক থাকে তখন আমরা বেশী স্বাচ্ছন্দ (Comfort) বোধ করি। যখন আমাদের শরীরে কোন ইনফেকশান বা প্রদাহ ঘটে বা রোগ জীবাণু আমাদের শরীরে আক্রমণ করে- তখন আমাদের শরীর জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে জ্বর নিয়ে আসে, জ্বর আমাদের শরীরের বেসিক Metabolic rate বৃদ্ধি করে দেয়- ফলে আমাদের হৃদপিন্ড দ্রুত গতিতে রক্ত পাম্প করতে থাকে, আমরা দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেই। যখন আমাদের জ্বর আসে, তখন আমরা সবাই বিছানায় শুয়ে থাকতে চাই, তরল পানীয় পান করতে চাই। জ্বর এলে স্কুল কলেজে বা কাজে না যেয়ে আমাদের আসলে ঠিক এই কাজই করা উচিৎ, কারণ এ অবস্থায় অন্য কেউ সংক্রমিত হতে পারে। তাহলে আমরা দেখতে পাই সংক্রমণ রোধে সামাজিক ভাবেও জ্বর আমাদের শরীরকে একটা ইঙ্গিত দেয়- যেন আমরা লোক সমাগমের স্থান ত্যাগ করে নিজেদের আলাদা করে (Isolate ourselves) রাখতে পারি।
Pharmaceutical companies গুলি এ ব্যাপারে একেবারেই নিশ্চুপ। বরং তাদের “জ্বর ভালো নয়, এই জ্বর না কমালে সর্বনাশ হয়ে যাবে” “ডাক্তার যা বলেছে তা শুনে চলতে হবে।” অথবা “যখনই জ্বর ও ব্যাথা তখনই-Tylenol” এই জাতীয় বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ হয়ে বা “জ্বর হওয়া মানেই অসুস্থ হওয়া তাই এই জ্বর অবশ্যই কমাতে বা বন্ধ করতে হবে”- এই জাতীয় মতবাদে বিশ্বাসী হয়ে আমরা বুঝে না বুঝেই আমাদের শরীরের ন্যাচারাল Immune system কে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে চলেছি।
আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রের জনক Hippocrates, অনেক আগে প্রায় 400 B.C. সময়কালের মানুষ ছিলেন। তিনি জ্বরের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে আমাদের শরীরের চারটি উপাদান বা ধাতু (Humors), যথাঃ কালো পিত্ত, হলুদ পিত্ত, রক্ত ও শ্লেষ্মা বা কফ (Black bile, Yellow bile, Blood, and Phlegm) যদি অতিরিক্ত তৈরি হয় তাহলে আমরা রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ি। Hippocrates এর মত অনুযায়ী- জ্বর এই অপরিশোধিত Humors গুলিকে পরিশোধন করে আমাদের সুস্থ করে। পরে জার্মান কোম্পানি Bayer ১৮৯৯ সালে Aspirin আবিষ্কার করে।
চিকিৎসা শাস্ত্রের দীর্ঘ ইতিহাসে জ্বর আশীর্বাদ হয়েই ছিল, কিন্তু এখন হঠাৎ করেই কেন যেন জ্বর হলে আমরা জ্বরের চিকিৎসা করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠি। এখন কেন যেন “আজ জ্বর এলে দুটি Aspirin ট্যাবলেট খাও, আর কাল সকালেই সুস্থ হয়ে হাসি খুশি জীবনে ফিরে যাও” –এই মতবাদ খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
অবশেষে এটাই বলা চলে, শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ধ্বংস করে, চারিপাশে এত এত ব্যাকটেরিয়া আর ভাইরাসের সমুদ্রের মধ্যে বাস করে এত Aspirin, Antibiotic, Antipyretics ট্যাবলেট দিয়ে কতদিন আমাদের জীবাণু বিরোধী যুদ্ধ চলতে থাকবে, যেখানে জীবাণু প্রতিনিয়ত তাদের Mutation করে বা ধরন পরিবর্তন করে নতুন ভাবে আমাদের আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে? এবার অন্তত আমাদের Hippocrates এর কথা হয়ত মেনে চলার সময় এসেছে……।
Discussion about this post