ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভাবে প্রায় সকলের জানা হয়ে গেছে নোভেল করোনা ভাইরাস কী এবং এর দ্বারা সৃষ্ট কোভিড-১৯ রোগের লক্ষণ সম্পর্কে। এবার এই কোভিড-১৯ রোগের কিছু নতুন নতুন লক্ষণ ও এর পুনঃ পুনঃ পরিবর্তিত রূপ নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। যেমন-কোনও স্বাদ বা গন্ধ না পাওয়া, এটা এখন করোনার লক্ষণ। এমন ও হতে পারে সাধারণ সময়ে অনেক বেশি জ্বরে ভুগেছেন কিন্তু এখন ১০০ ডিগ্রী ফারেনহাইটের নিচে জ্বরে ভুগছেন সেটাও কোভিড পজিটিভ বলে শনাক্ত হতে পারে। অর্থাৎ বিশ্বকে প্রায় থামিয়ে দেওয়া নভেল করোনা ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট কোভিড-১৯ এভাবেই নতুন নতুন উপসর্গ নিয়ে হাজির হচ্ছে যত দিন যাচ্ছে। এদিকে, করোনাতে আক্রান্ত হওয়ার কোনও উপসর্গই নেই এমন মানুষের সংখ্যাও ধীরে ধীরে বাড়ছে। আপনারা এতদিন জেনেছেন তীব্র জ্বর, সর্দি-কাশি, শুকনো কাশি ও শ্বাসকষ্টকে শুরুতে কোভিড-১৯ এর লক্ষণ বা উপসর্গ বলে ধরে নেওয়া হলেও যতই দিন যাচ্ছে করোনার নতুন নতুন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কাঁপুনি, পেশীর যন্ত্রণা, মাথা ব্যথা, কিছুতে স্বাদ না পাওয়া এবং কোনও কিছুতে গন্ধ না পাওয়ার মতো লক্ষণ যোগ হচ্ছে করোনা ভাইরাসের উপসর্গের তালিকাতে। এ যেমন করোনার এক বিচিত্র খেলা বা গত প্রকৃতি । যদি ও করোনার এই গতি প্রকৃতি ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে বলে ভ্যাক্সিন বিশেষজ্ঞদের দাবী ।
আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল ও প্রিভেনশন এর মতে করোনা ভাইরাসের নতুন উপসর্গ হিসেবে পেশী ও গিঁটে গিঁটে ব্যথা দেখা দিয়েছে, তবে সেটা সবার ক্ষেত্রে নয়। ব্যথা যত মারাত্মক হয় ততই ফুসফুসের জটিলতম সমস্যা অ্যাকিউট রেসপিরেটর ডিসট্রেস সিনড্রোম (ARDS) এর আশঙ্কা বেড়ে যায়। কোভিড-১৯ রোগীর শ্বাসকষ্ট যে কেবল ফুসফুসের সমস্যার কারণেই হয় তা নয়, রক্ত জমাট বেঁধেও হতে পারে, আর এটা কোভিড আক্রান্ত মৃত্যুর অন্যতম কারণ। একই সঙ্গে ডায়রিয়া শুরুর দিকে কোভিড এর লক্ষণ না থাকলেও এখন প্রচুর কোভিড আক্রান্ত রোগীর অন্যতম উপসর্গ ডায়রিয়া। আমরা শুরুর দিকে তীব্র জ্বরের কথা বললেও এখন অনেকের ক্ষেত্রেই জ্বর কম হতে পারে। আবার অনেকেই আছেন যাদের জ্বর নেই। ডায়রিয়া সবার হয় না, আবার কারও কারও হয়, আবার পেটব্যথা নিয়ে করোনা আক্রান্ত রোগীও পাওয়া গেছে। তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে করোনার লক্ষণ হিসেবে হাত পা অবশ হয়ে যাওয়ার মতো রোগী পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত এ দেশে সেরকম রোগী পাওয়া যায় নি।
আর একটি কথা না বললেই নয় অতিরিক্ত দুর্বল বোধ হওয়া, এটা অন্য ভাইরাল ডিজিজেও হয়, কিন্তু এই অতিরিক্ত দুর্বল বোধ করা- আগে কোভিড-১৯ এর লক্ষ্মণ হিসেবে ছিল না। চোখ লাল হয়ে যাওয়াকেও American academy of Opthalmology এখন করোনার লক্ষণ হিসেবে যোগ করেছে। আবার ইতালিতে কোভিড আক্রান্ত শিশুদের পায়ের পাতা ফুলে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছে , যার নাম দেওয়া হয়েছে “কোভিড টো”। আবার পায়ের চামড়ার রঙ পরিবর্তন এবং শরীরে লালচে র্যাশ পাওয়া গিয়েছে কিছু কিছু শিশু রোগীর ক্ষেত্রে ।আরও কিছু মানসিক লক্ষণ যেমন-অস্থিরতা, মৃত্যু-ভয়, আতঙ্ক তো আছেই।
অর্থাৎ করোনার এই সময়ে এত সব বিচিত্র লক্ষণ এর কারণে প্রচলিত এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় চিকিৎসকরা যেমন সঠিক গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে পারছেন না, ঠিক একইভাবে ভ্যাক্সিন বিশেষজ্ঞরাও এখন পর্যন্ত প্রতিষেধক তৈরিতে তেমন কোন গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছেন না। আর সিদ্ধান্তে পৌঁছবেই বা কি করে? কারণ করোনা ভাইরাস মিউটেশন এর মাধ্যমে তার স্ট্রেইন বদলায়, আর স্ট্রেইন অনুসারে উপসর্গ বদলায়। করোনা ভাইরাসের আরএনএ-পরিবর্তিত হওয়ার ক্ষমতা বেশি বলে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভাইরাসের বিভিন্ন স্ট্রেইন পাওয়া গেছে। উপসর্গের বৈচিত্র নির্ভর করে ভাইরাসের স্ট্রেইনের ওপরে, ভাইরাসের স্ট্রেইন বদলের ফলে সংক্রমিত হওয়ার প্রবণতাও বদলাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ আগে শিশুদের বেলায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা একেবারেই কম ছিল এবং বাংলাদেশে বৃদ্ধ ও অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্তদের (কো-মরবিডিটি) মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকলেও, পরে দেখা গেল কোনও বয়সেই একে আটকে রাখা যায় নি। অর্থাৎ বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৪৯ বছরের মধ্যে বেশি আক্রান্ত হয়েছে, তার কারণ স্ট্রেইন বদলিয়েছে। আবার কোনও দেশভেদে মৃত্যুহার কমছে বাড়ছে। তাই ভাইরাসের চরিত্রের ওপর সংক্রমিত হওয়ার প্রবণতা যেমন বদলায়, তেমনি এর সিভিয়ারিটি বা মৃত্যুর ঝুঁকিও বদলায়।
তাহলে এখন করণীয় কি?
ইতিমধ্যে জেনেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালক বলেছেন- করোনার প্রাদুর্ভাব ২/৩ বছরও থাকতে পারে। আবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলেছেন- ২/৩ দশকও থাকতে পারে। তাহলে এই অবস্থায় বাংলাদেশ তথা আমরা বিশ্ববাসীরা কীভাবে জীবন যাপন করবো তার একটা বিকল্প পথ অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। আর এই বিকল্প পথটির অধিকারী হতে পারে প্রচলিত এলোপ্যাথিক চিকিৎসার পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি । নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রকোপের পর থেকেই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, সিডিসিসহ অন্যান্য আন্তজার্তিক স্বাস্থ্য-গবেষণা প্রতিষ্ঠান ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন যে, করোনা ভাইরাসের এখন পর্যন্ত কোন টীকা বা চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার হয় নি, তবে আক্রান্ত রোগীদেরকে লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে এবং সেভাবেই এখন পর্যন্ত এলোপ্যাথিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সে সময়কাল থেকেই আমার একটা ভাবনা ছিল যে, যেহেতু হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পূর্ণ লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি, সেহেতু নোভেল করোনা ভাইরাসের আক্রমণে সৃষ্ট কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসাও হোমিওপ্যাথিক মতে সফল হবে। ইতিমধ্যে আমরা অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ইত্যাদির মাধ্যমে কিছু ক্ষেত্রে অফিসিয়ালি বা নন অফিসিয়ালি রোগ প্রতিরোধক বা (Vital Force) বা immunity improving booster হিসেবে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ Arsenic album 30 এর কথা শুনে এসেছি।

ক্ষেত্র বিশেষে এর সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে আশানুরূপ ফলাফলও এসেছে। যেমন করোনা ভাইরাসে ১০০% কিউর হয়েছে ইসকন মন্দিরে ৩৬ জন রোগী এবং রাজারবাগ পুলিশ সেন্ট্রাল হাসপাতালে ৪২ জন রোগী। প্রতিদিন সরকারি হোমিপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ৫ টি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল সেন্টারসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা লেবেলে প্রায় ৬২ টি ডিপ্লোমা হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসা যেমন নিচ্ছেন; তেমনি কোভিড-১৯ এর প্রতিরোধক Arsenic Album 30 ওষুধটিও পরিবার পরিজনের রোগ প্রতিরোধকের জন্য নিচ্ছেন ও সেবন করছেন। তাছাড়া দেশে বিএইচএমএস ও ডিএইচএমএস ডিগ্রিধারী প্রায় ৪০ হাজার চিকিৎসক দেশের আনাচে কানাচে প্রতিদিন তাদের প্রাইভেট চেম্বারে সাধারণ রোগী যেমন দেখছেন, তদ্রুপ কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীও দেখছেন এবং রোগ প্রতিরোধক ওষুধ Arsenic Album 30 ও প্রয়োগ করছেন। যেহেতু এসব ক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা এসেছে হোমিওপ্যাথগণ দাবী করে আসছেন। এমতাবস্থায় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ও মৃত্যু হার কমানোর ক্ষেত্রে ২ টি পথ বেছে নেওয়া যায়- একটি রোগ প্রতিরোধক বা vital force বা immunity improving Booster হিসেবে ব্যাপক ভাবে উপযুক্ত ঔষধ প্রয়োগ করা, অন্যটি আক্রান্ত হলে লক্ষণ অনুযায়ী হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা করা । যদিও অনানুষ্ঠানিক ভাবে বিভিন্ন দেশ তথা বাংলাদেশে অলরেডি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
আপনারা হয়তো কম বেশি হার্ড ইমিউনিটির কথা শুনে থাকবেন। আমরা এ পর্যন্ত বিভিন্ন ভাবে হার্ড ইমিউনিটির কথা জেনেও এসেছি। দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় ভাইরোলজিস্ট প্রফেসর নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, সংক্রমণের যে প্যাটার্ন বা গ্রাফ দেখা যাচ্ছে তাতে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। আবার তিনি এও মনে করেন, বাংলাদেশে কার্যকর একটি কঠোর লকডাউন আরোপ করাও সম্ভব নয়। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারী যখন শুরু হয়, তখন অনেক দেশেই হার্ড ইমিউনিটির ব্যাপারে কথাবার্তা হয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত কোন দেশই সেই পথে না হেঁটে বরং লকডাউনের পথে গেছে। কারণ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগে প্রাকৃতিকভাবে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তুলতে যে পরিমাণ মানুষ আক্রান্ত হবে, আর যত মানুষ মারা যাবে, তার সংখ্যা হবে বিরাট। অর্থাৎ ভেক্সিন না আসা পর্যন্ত হার্ড ইমিউনিটিও সম্ভব না- আবার লক ডাউনও সম্ভব না। তাহলে করণীয় কী? হ্যা, আমি বলব করণীয় একমাত্র বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি হোমিওপ্যাথি দ্বারায় সম্ভব হার্ড ইমিঊনিটি অর্জন করা ।
এবার জানা যাক হার্ড ইমিউনিটি কী?ইমিউনিটি হচ্ছে ব্যক্তি বিশেষের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। আর ‘হার্ড ইমিউনিটি’ মানুষের ক্ষেত্রে বলা যায়, যখন একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে যদি নির্দিষ্ট অনুপাতে ভ্যাকসিন বা টিকা দেয়া যায়, কিংবা একটি নির্দিষ্ট অনুপাতের লোকসংখ্যার মাঝে যদি সংক্রমণ সংঘটনের মাধ্যমে তাদের শরীরে মহামারীটির বিরূদ্ধে এন্টিবডি সৃষ্টি হয়- তাহলে ওই কমিউনিটিতে আর সংক্রমণ হয় না। একে বলে হার্ড ইমিউনিটি। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, একটি সম্প্রদায়ের কারো মধ্যে যদি গুটি বসন্ত দেখা দেয়, আর বেশিরভাগ মানুষের যদি টিকা দেয়া থাকে তাহলে ওই রোগটি আর কারো মধ্যে ছড়াতে পারে না। এটাই হার্ড ইমিউনিটি বা কমিউনিটি ইমিউনিটি। এর কারণে নবজাতক শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি এবং অসুস্থ মানুষ যাদেরকে টিকা দেয়া সম্ভব নয় তারাও রোগমুক্ত থাকেন।
এখন আসা যাক কীভাবে হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করা যায় ? প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় করোনা ভাইরাসের এখনো কোন প্রতিষেধক বা টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। তাহলে এটি মোকাবেলায় হার্ড ইমিউনিটি কাজ করাটা কঠিন। আর করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তুলতে হলে ৯০ ভাগের বেশি সংখ্যক মানুষ এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হতে হবে। অর্থাৎ প্রতি ১০ জনে ৯ জন আক্রান্ত হতে হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে হার্ড ইমিউনিটি হতে হলে যদি এখানে ১৮ কোটি মানুষ থাকে তাহলে প্রায় ১৭ কোটি মানুষকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে হবে। কারণ ১৭কোটি মানুষ আক্রান্ত হলে এদের মধ্যে যদি ০.০০১ ভাগ মানুষেরও হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, তাহলে যে বিশাল সংখ্যক মানুষের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার হবে বাংলাদেশের বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বাস্তবতায় সেটা করা সম্ভব নয় । আর এ কারণেই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে মারাত্মক হারে। দেশের বিশেষজ্ঞ ভাইরলজিস্টরা হার্ড ইমিউনিটি তত্ত্বের একেবারেই বিরোধী । তাহলে আমাদের পথ একটাই । দেশের প্রায় সব মানুষকে বা কমপক্ষে ৮০% জন গোষ্ঠীকে হোমিওপ্যাথিক রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধির স্বীকৃত ঔষধটি সেবন করা। আর তাতেই আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে, আমাদের দেশের সকল স্তরের জনগণ হোমিওপ্যাথিক ঔষধ আর্সেনিকাম এলবাম নামের একটি ঔষধকে এই উদ্দেশ্যে বিতরণ করা হয়েছে বলে সবাই শুনেছেন।
এখন বলি হার্ড ইমিউনিটি অর্জনে কী দরকার? এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হোমিও ও দেশজ শাখার মাধ্যমে সরকারী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বিভিন্ন জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়োগকৃত হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল অফিসারদের সর্বাগ্রে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে । স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত বিএইচএমএস ডিগ্রীদারী সকল চিকিৎসকদের কোভিড-১৯ সময়ের জন্য অনারারি ভিত্তিক কাজে লাগানো যেতে পারে। বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের অধীনস্থ সকল ডিপ্লোমা হোমিওপ্যাথিক কলেজ হাসপাতালকেও এগিয়ে আসতে হবে। দেশে প্রায় ৪০ হাজারের ও বেশি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক রয়েছেন তাদেরকে দেশের ৬২ টি ডিপ্লোমা কলেজ হাসপাতালের মাধ্যমে কোভিড-১৯ সময়ের জন্য অনারারি ভিত্তিক কাজে লাগানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ কর্তৃক জাতীয় কমিটি গঠন করা যেতে পারে। এই কমিটিতে স্বাস্থ্য সচিবকে আহবায়ক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে সদস্য সচিব এবং হোমিও দেশজ এর লাইন ডাইরেক্টর, সরকারী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রারকে নিয়ে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে যারা সার্বিক বিষয়টি তদারকি করবেন।
কীভাবে হার্ড ইমিউনিটি অর্জন হবে? “রোগ নয় রোগীর চিকিৎসা কর” এই নিয়মে প্রায় ২০০ বছরের ও অধিক সময় ধরে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে অজস্র হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক এই বিশ্বের অতীতের বিভিন্ন সময়ের মহামারী রোগ ও রোগের বিস্তার রোধকল্পে অত্যন্ত সফলতার সহিত চিকিৎসা সেবা দিয়ে এসেছেন। সম্প্রতি ভারতীয় সরকার হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন Arsenic Album 30 কে প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন। করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধক হিসেবে এবং মানব শরীরের Body Immunity System কে রোগ প্রতিরোধক হিসেবে তৈরি করতে পুরো রাজ্যের মানুষকে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে দিল্লি, আসাম, কেরালা, অন্ধ্প্রদেশ, জন্মু ও কাশ্মীর এর সরকার । কিউবার সরকার সারা দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ দিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুহার ব্যাপকভাবে কমিয়ে এনেছে। আশা করি আমাদের দেশের সরকার ও পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আমরাও তা করতে পারবো। তাই একযোগে সারাদেশে সকল জনসাধারণের বাড়িতে হোমিওপ্যাথিক রোগ প্রতিরোধক ঔষধ প্রত্যেক বাড়ির প্রত্যেক সদস্যকে খাওয়ার নিয়ম সহ নিশ্চিত করতে হবে । এভাবে যদি ৮০% মানুষকে এই রোগ প্রতিরোধক ওষুধটি সেবন করানো যায় তাতেই হার্ড ইমিউনিট চলে আসবে।
পরিশেষে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সামাজিক দূরত্বের জন্য আইইডিসিআর এর নিয়মানুযায়ী নির্দেশনাবলী মেনে চলতে হবে এবং যে কোন জটিল বা জরুরী মুহূর্তে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।
Discussion about this post