ডা. শাহীন মাহমুদ :
আজকে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের অনুপ্রবেশের খবর পেলাম এবং চারপাশেই এ নিয়ে বহু প্রকারের প্রতিক্রিয়া দেখতে পাচ্ছি। প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবারই কথা। বহুদিন ধরেই মানুষ এক ধরণের আতঙ্কেই দিন কাটাচ্ছে। এবার সেই আতঙ্কটি বাস্তবতার রূপ নিয়ে এসেছে। ইতোমধ্যে বহু জল্পনা-কল্পনা, আলোচনা-সমালোচনায় এই সংক্রমণ সম্বন্ধে মানুষ এখন বহু কিছু জানে। এমনকি অনেকেই এটি জানে যে, হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও আরোগ্য করা সম্ভব। আমার আগের প্রবন্ধ “করোনা ভাইরাসে হোমিওপ্যাথদের ভূমিকা”-তে আমি এ বিষয়ে বেশ কিছু ব্যাপার তুলে ধরেছি। এর চিকিৎসাপদ্ধতি, করণীয় সম্বন্ধে আমাদের হোমিওপ্যাথিক মূলনীতি অনুযায়ী কি নির্দেশনা আছে, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ কেমন হওয়া উচিৎ, হোমিওপ্যাথদের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিৎ ইত্যাদি ব্যাপারগুলো তুলে ধরেছি। যারা এই প্রবন্ধটি পাঠ করছেন, আগের উক্ত প্রবন্ধটিতে আরেকবার চোখ বুলিয়ে নিলে আমাদের আসলে কি ধরণের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিৎ- তা বুঝতে আরো সহযোগিতা হতে পারে। কিন্তু বিপদ যখন দোরগোড়ায়, তখন এই কর্মপরিকল্পনার প্রশ্নটিতে আরেকটু বিশদ হবার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।
প্রথম কথা হচ্ছে, আল্লাহ না করুন, এই সংক্রমণ যদি এখন ছড়ানোর উপক্রম করে- আমরা হোমিওপ্যাথিক সমাজ কি করবো? আমাদের পদক্ষেপ কি হবে? কেমন হবে? এই দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা কীভাবে ভূমিকা রাখবো? সাধারণভাবে চিন্তা করলে, আমাদের হাতে এ ব্যাপারে করার মতো মূলত প্রধান চারটি বিকল্প আছে-
১. আমরা যার যার মতো চিকিৎসা শুরু করবো এবং ‘যেমন খুশি তেমন করো’ নীতিতে তা চালিয়ে যাবো।
২. সংযত ‘যেমন খুশি তেমন করো’ নীতি অনুসরণ করে, আয়ুশ (AYUSH) বা বিখ্যাত চিকিৎসকগণ যে সমস্ত ঔষধের পরামর্শ প্রদান করেছেন এবং ফেসবুকের কল্যাণে যে বিচিত্র পরামর্শগুলো আমরা এতদিন পেয়েছি- এর মধ্যে যার যেটা ভালো লাগে সেটি চোখ বুঁজে অনুসরণ করে যাবো।
৩. আমরা চুপচাপ বসে থাকবো, কিছুই করবো না এবং সরকার যে পরিকল্পনা প্রদান করেন- সেটিকে অনুসরণ করে যাবো।
৪. আমরা, হোমিওপ্যাথিক কম্যুনিটি ঐক্যবদ্ধভাবে এই দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য নিজস্ব কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
প্রথম দু’টি নীতিকে নিয়ে চিন্তা করার সময়, আমি আমাদের হোমিওপ্যাথিক ভ্রাতাগণকে অনুরোধ করবো- কিছু মুহূর্তের জন্য হলেও, নিজেকে আমাদের মহান গুরু মহাত্মা হ্যানিমানের স্থানটিতে নিজেকে স্থাপন করুন। এবার ভাবুন, এই নীতিগুলোকে তিনি কতটা সমর্থন করতেন! এ ব্যাপারে অর্গাননের ১০০ থেকে ১০৪ নং সূত্রে উল্লেখিত তাঁর নিজের প্রদর্শিত পদ্ধতিটির দিকে তাকালেই আমরা বুঝতে পারবো- তিনি যে কোন মহামারীতেই-
- প্রথমে, প্রাপ্ত প্রতিটি কেইসকে উপযুক্তরূপে ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিচার করে ঔষধ প্রদান করতেন।
- অন্য কে কি বলেছে, কে কোন ঔষধ দিয়েছে, কে আরোগ্য হয়েছে- কে হয়নি এরকম সমস্ত চিন্তা ত্যাগ করে লক্ষণসমষ্টি বিবেচনা করে রোগীর যথাযোগ্য ঔষধ নির্বাচন করে রোগীকে আরোগ্য করতেন।
- বেশ কিছুসংখ্যক রোগী আরোগ্যের পর, তা থেকে যে ঔষধগুলো বার বার প্রয়োগ করতে হচ্ছে- তার তালিকা তৈরি করতেন।
- সেই উপযুক্ত সম্ভাব্য ঔষধগুচ্ছ থেকে কোন কোন লক্ষণের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন রোগীতে, ভিন্ন ভিন্ন কোন ঔষধটি প্রয়োজন হচ্ছে- তা নিশ্চিত করতেন।
- এরপর সেই বিশেষ স্বতন্ত্রকারী লক্ষণগুলো বিবেচনা করে দ্রুত প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে অসংখ্য রোগীর কেবল চিকিৎসাই নয়, আরোগ্য নিশ্চিত করতেন।
প্রকৃতপক্ষে, কোন একটি মহামারীতে, কোন নির্দিষ্ট স্থানে কি ধরণের লক্ষণাবলী ও লক্ষণসমষ্টির উদ্ভব করে, তা জানার আগ পর্যন্ত সেই ঔষধটি নিশ্চিতভাবে নির্ধারণ করা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। তারমধ্যে, এই বিশেষ সংক্রমণে ভাইরাসটি আক্রান্ত পোষকের দেহেই নিজের মিউটেশনের মাধ্যমে প্রকৃতি পরিবর্তন করে ফেলে। স্বাভাবিক যুক্তি যা বলে, এই পরিবর্তনের ক্রিয়াটিরও একটি প্রতিক্রিয়া থাকবে, অর্থাৎ এর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ বহিঃপ্রকাশিত লক্ষণ বা লক্ষসমষ্টিরও পরিবর্তন ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে, কেবল ধারণা ও অনুমানপ্রসূত ঔষধগুলো তো দূরের কথা- এর আগে সফলভাবে প্রয়োগকৃত ঔষধের সন্ধান পাওয়া গেলেও, পুনরায় তাকে প্রয়োগ করতে গেলে পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন হবে। যে বিবেচনা করার কথাটিই মহাত্মা হ্যানিমান প্রায় আড়াইশত বৎসর আগে বলে গেছেন। তবে, এই পুনর্বিবেচনার বড় সুবিধাটি হচ্ছে, এই পরিবর্তিত অবস্থা ও প্রকৃতিও আরোগ্যের গতিকে বিন্দুমাত্র হ্রাস করতে পারবে না। কাজেই, পদ্ধতিগতভাবে একবার সম্ভাব্য ঔষধগুচ্ছ নির্ধারণ হয়ে গেলে তা বিস্ময়কর ফল বয়ে আনবে।
যাই হোক, এবার যদি এই বিকল্পগুলো নিয়ে একটু গভীরভাবে চিন্তা করি- তাহলে তৃতীয় বিকল্পটিও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাব্যবস্থার আরোগ্যকারী ক্ষমতা ও সার্মথ্য অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য কোন কথা নয়। এই হোমিওপ্যাথিক কম্যুনিটির জন্য সম্মানজনক বিকল্পও নয়। সরকার যে কর্মপরিকল্পনা প্রদান করবে- সেটা অবশ্যই সবাইকেই অনুসরণ করতে হবে। কিন্তু এদেশের হোমিওপ্যাথগণ যথাসময়ে এগিয়ে না আসলে সরকারের সেই পরিকল্পনাতে হোমিওপ্যাথির অবস্থানটি নিশ্চিত করবে কে? সরকার হোমিওপ্যাথ নয়- হোমিওপ্যাথির সক্ষমতা, আরোগ্যক্ষমতা তার জানার কথাও নয়। আমাদের কথাগুলো আমাদেরকেই তার কাছে বলতে হবে।
আমি আগের প্রবন্ধেও বলেছি- মানুষের আরোগ্যকারী চিকিৎসাপদ্ধতি, যে কোন মহামারী ও সংক্রমণের বিরূদ্ধে আরোগ্যকারী উপায় এই হোমিওপ্যাথিতে বর্তমান এবং সেটি অতীতে বহুবার বহু মহামারীতে প্রমাণিত হয়েছে। একটি দেশে যখন দুর্যোগ উপস্থিত হয়, তখন সর্বস্তরের সকল মানুষেরই সেই দুর্যোগ মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়া যেমন নৈতিক দায়িত্ব, অন্যদিকে সেটা তার অধিকারও বটে।
হোমিওপ্যাথি নিয়ে সমাজের বিভিন্ন কম্যুনিটিতে ও ব্যক্তিগতভাবে অনেকেরই দ্বিধা-দ্বন্দ থাকতে পারে। অনেকেই এটিকে কেবল প্লাসিবো ভাবেন, পানি-চিনি-এলকোহল ভাবেন- ভাবুন; সমস্যা নেই। অন্তত এটুকু সবাই জানেন যে, হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রোগীর কোন ক্ষতি করে না। প্রুভিং মাত্রায়, অবিরত প্রয়োগ না করলে – পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, বা অন্য কোন উপসর্গও সৃষ্টি করে না। এমনকি এটি অন্য কোন পদ্ধতির ঔষধের সাথে কোন মিথষ্ক্রিয়াও (Inter-action) করে না। অর্থাৎ সরকার চাইলে প্রচলিত চিকিৎসা ও পদ্ধতিগুলোর সাথে অনায়াসে সমন্বিতভাবে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রদান করতে পারেন। আমাদের হোমিওপ্যাথিক সমাজ এই প্রস্তাবটি সরকারের সামনে তুলে ধরতে পারেন। আর তা করার জন্য আমাদের অবলম্বন করতে হবে- চতুর্থ বিকল্প; যে কাজটিই আসলে আমাদের করা উচিৎ।
দক্ষ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসক স্বতন্ত্রভাবে চিকিৎসা করলেও সুফল আসবে। তবে সেটি দুর্যোগ মুহূর্তে করণীয় যৌক্তিক পদক্ষেপ নয়। বাংলাদেশে বর্তমানে বহু সংখ্যক হোমিওপ্যাথিক সংগঠন ও সংস্থা বর্তমান। এসময় একেকজন একেকরকম মতামত, অভিজ্ঞতা, ধারণা, যুক্তি প্রদান করেন যাবেন এবং এ নিয়ে গরম মতানৈক্য, আলোচনা, সমালোচনা হবে- বর্তমান সময়টির জন্য এটিও উপযুক্ত নয়।
প্রকৃতপক্ষে এখন যা করা উচিৎ বলে আমি মনে করি-
১. হোমিওপ্যাথির সামর্থ্য, অতীত ইতিহাসে বিভিন্ন মহামারীতে এর কার্যকরী আরোগ্যের তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণ, এটি প্রয়োগের সুবিধাবলী, চিকিৎসা-পরিকল্পনা, প্রস্তাবিত টিম ইত্যাদির বিশদ বর্ণনাসহ মাননীয় সরকারের নিকট একটি প্রস্তাবনা প্রেরণ করা। বিশেষ করে, মিউটেশন হতে থাকা এই সংক্রমণটিতে কেন হোমিওপ্যাথি অপরিহার্য ও অনন্য- সেটি সরকারের সম্মুখে তুলে ধরা।
২. প্রতিটি সংগঠন ও সংস্থার ঐক্যবদ্ধ সম্মতি, জোর প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় দ্রুতগতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হোমিওপ্যাথিক সেকশনে বা বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের অধীনে বা সমন্বিতভাবে একটি জরুরি কেন্দ্রীয় চিকিৎসা টিম গঠন করা।
৩. একইভাবে সারাদেশের প্রতিটি জেলায় এবং সম্ভব হলে, আরো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইউনিটে, হোমিওপ্যাথিক কলেজ, বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থাগুলোর স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণে- কেন্দ্রীয় চিকিৎসা টিমের অধীনে চিকিৎসক টিম গঠন করা।
৪. হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের নিকট তাদের চিকিৎসা-বিবরণ, প্রাপ্ত ফলাফল, করণীয়, নির্বাচিত ঔষধ, পরিকল্পনা ইত্যাদি বিষয়গুলোতে নিয়মিত আপডেট জানানোর ব্যবস্থা করা- যাতে একই সাথে সমগ্র বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সম্প্রদায় একই ভাবে এই দুর্যোগ মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন।
৫. সেই একই কর্মপরিকল্পনার অধীনে জরুরি অবস্থাটি অতিক্রান্ত হওয়া পর্যন্ত একটি জরুরি হোমিওপ্যাথিক হটলাইনের বন্দোবস্ত করা- যাতে সারাদেশের চিকিৎসকগণ যে কোন প্রয়োজনে যথাযোগ্য পরামর্শ ও সহযোগিতা পেতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন, অনেকেই ভাবতে পারেন- মাত্র তিন-চারজন ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছে, এতেই ব্যাপারটিকে আমি এত সিরিয়াসভাবে নিচ্ছি কেন? এত বিশাল কর্মপরিকল্পনা কেন গ্রহণ করতে অনুরোধ করছি। বলার অপেক্ষা রাখে না, চুড়ান্ত বিচারে কথাটি অযৌক্তিক। আমি কোন আতঙ্ক থেকে এতটা সিরিয়াস হইনি। আমার সিরিয়াস হবার কারণ-
ক) হোমিওপ্যাথির এমন সামর্থ্য আছে যে, যে কোন সংক্রমণের শুরুতেই এর যথাযোগ্য প্রয়োগে সংক্রমণটিকে একদম অঙ্কুরেই স্তব্ধ করে দিতে পারে।
খ) হোমিওপ্যাথিতে এর কার্যকরী প্রতিরোধকারী ও আরোগ্যকারী ঔষধটি নিশ্চিত করতে, শুরুতেই কিছু সংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা করে তার ফলাফল প্রয়োজন হবে। যে ফলাফলের উপর ভিত্তি করে প্রাপ্ত আরোগ্যকারী ঔষধটিকে সমস্ত সংগ্রহে রেখে চিকিৎসক জরুরি মুহূর্তে দ্রুতগতিতে প্রেসক্রিপশন করার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারবেন।
গ) বহু-সংখ্যক ক্ষয়ক্ষতি হবার পরে সচেতন হওয়া কোন কাজের কথা নয়- যেখানে প্রারম্ভিক সচেতনতাই বিশাল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
ঘ) পুরো কর্মপরিকল্পনাটিকে বাস্তব রূপ দিতেও কিছু সময় ব্যয় হয়ে যাবে, এজন্য কালবিলম্ব না করে, যত দ্রুত সম্ভব তার সূচনা করতে হবে। যাতে সত্যিই যদি জরুরি মুহূর্ত উপস্থিত হয়, আমরা যেন প্রস্তুত থাকতে পারি।
এই বিস্তৃত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যে খুব বেশি আলাদা কিছু করতে হবে- ব্যাপারটি কিন্তু এরকমও নয়। জরুরি মুহূর্তের জন্য সরকারকে নিশ্চিতভাবেই একটি অবকাঠামো নির্ধারণ করতে হবে। সরকারের প্রতি প্রদত্ত প্রস্তাবনার প্রত্যুত্তরে, সরকার চাইলে- সেই একই অবকাঠামোতে আগ্রহী রোগীদেরকে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ আলাদাভাবে প্রয়োগ করে তার ফলাফলও নিশ্চিত করা যাবে, কিংবা প্রচলিত চিকিৎসাপ্রয়োগের সাথে সাথে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগ করেও তার ফলাফলের ভিন্নতা যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেবার সুযোগ থাকবে। প্রস্তাবনাতে এই ব্যাপারটিও উল্লেখ করা যায় যে, যেখানে প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থা এই মহামারীর জন্য প্রকৃত আরোগ্যকারী কোন পদক্ষেপ নিতে অক্ষম- সেখানে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ তাদের আরোগ্যের একটি সম্ভাবনাকে ব্যক্ত করে এবং এই বিশেষ সময়টিতে সেই সম্ভাবনাকে যাচাই করে, ভবিষ্যতেও এ প্রকারের পরিস্থিতিতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাব্যবস্থার প্রয়োগযোগ্যতা নিশ্চিত করতে পারেন।
কোন কম্যুনিটিই নিজের প্রচেষ্টা ও সক্ষমতার প্রমাণ না দিয়ে উন্নত স্তরে পৌঁছতে পারে না। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির রোগারোগ্যের সক্ষমতা আছে। আতঙ্কগ্রস্ত মানুষের নিকট প্রকৃত আরোগ্যকারী চিকিৎসা পৌঁছে দিতে সরকারও দায়বদ্ধ। আমার বিশ্বাস, আমরা যদি উপযুক্তরূপে প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ নিয়ে সরকারের নিকট আমাদের সক্ষমতা ও সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে পারি এবং উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে আমাদের সক্ষমতা ও সম্ভাবনাকে প্রকাশ করতে পারি- তাতে সেটি কেবল হোমিপ্যাথিকে দেশের জনগণ ও বিশ্বের দরবারে সমুন্নতই করবে না; মানবজাতির দুর্যোগ মোকাবেলার কর্মকান্ডে একটি ইতিহাস হয়ে থাকবে। আমি নিশ্চিত, আমাদের হোমিওপ্যাথির নেতৃবর্গ ও ভাতৃবর্গ, তথা হোমিওপ্যাথিক কম্যুনিটি এবং সরকার যদি সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা নিয়ে তাকে বাস্তবায়ন করতে পারেন- তবে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তের হার এই বাংলাদেশেই হবে সবচেয়ে কম- যেখানে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল, দূষিত পরিবেশ, নিম্নমানের জীবনযাত্রা ও বাসস্থান-ব্যবস্থাপনার জন্য আমরাই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছি। বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক সমাজের জন্য এটি একটি সম্মানজনক মাইলফলক হয়ে থাকবে এবং হোমিওপ্যাথির কার্যকারিতা প্রমাণে এটি হবে একটি স্মারকচিহ্ন। সেই সাথে আমাদের দেশের জনগণ ভবিষ্যতের যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় নিশ্চিত ও নিরাপদ পথের সন্ধান পেয়ে চিরদিনের জন্য থাকবে আতঙ্কমুক্ত।
Discussion about this post