নিউজ ডেস্ক:
ভারতের কেরালা রাজ্যে চলমান করোনা মহামারী প্রতিরোধে প্রায় ৪৫ লক্ষ মানুষের মাঝে সরাকারীভাবে হোমিওপ্যাথি ঔষধ বিতরণের খবর পাওয়া গেছে। সূত্র গালফ নিউজ।
আন্তর্জাতিক এই সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, কেরালা সরকার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা-প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘিরে একটি ব্যাপক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। ইমিউনিটি বৃদ্ধিকারক হিসাবে রাজ্যের ৪৫ লক্ষ জনগণের মাঝে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। করোনা ভাইরাসের আক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যটি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
থিরুভানানথাপুরাম কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে, স্থানীয় এমএলএ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতায় ৭ লক্ষ মানুষের মাঝে ইতোমধ্যে ঔষধ বিতরণ করার প্রোগ্রামটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। হোমিওপ্যাথিক ডিপার্টমেন্ট ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে রোগটিকে প্রতিরোধ করার জন্যে Arsenicum Album 30C ঔষধটি প্রদান করে, যা কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।
হোমিওপ্যাথিক ডিপার্টমেন্টের জেলা মেডিক্যাল অফিসার সি. এস. প্রদীপ জানান, “ঔষধটি বাসায় বাসায় বিতরণ করার জন্য থিরুভানানথাপুরামে চারটি ভ্রাম্যমাণ ইউনিট পরিচালনা করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, গণমানুষের কাছে ঔষধটির ব্যাপক চাহিদা বর্তমান এবং সম্প্রতি হোমিওপ্যাথি ডিপার্টমেন্ট সবার কাছে ঔষধ পৌঁছানোর ব্যাপারটা নিশ্চিত করছে। তিনি আরো বলেন, “আজ অব্দি আমরা রাজ্যজুড়ে ৪৫ লাখ (৪.৫ মিলিয়ন) মানুষের কাছে ব্যবস্থাপত্রকৃত ঔষধ সরবরাহ করার বন্দোবস্ত করেছি।”
ইন্ডিয়ান হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের (IHMA) রাজ্য-পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য ডা. বি. বিজয়কুমার জানান, হোমিওপ্যাথির যাত্রার প্রারম্ভ থেকে এ পর্যন্ত এপিডেমিকগুলোকে প্রতিরোধ করার ও চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে, তার একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এটি সফলতার সাথে রাজ্যের ডেঙ্গু জ্বর, চিকনগুনিয়া, টাইফয়েড, চিকেন-পক্স ও অন্য আরো এপিডেমিকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। ভাইরাল রোগগুলিতে এর কর্মক্ষমতা বহুবার সন্দেহাতীতরূপে প্রমাণিত হয়েছে। হোমিওপ্যাথি পৃথিবীজুড়ে চিকিৎসাব্যবস্থার সবচেয়ে প্রার্থিত বিকল্প চিকিৎসাব্যবস্থাগুলোর অন্যতম- এমনকি যার দিকে কভিড-১৯ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ইন্ডিয়া সরকারসহ বহু সরকার তাকিয়ে আছে।”
তিনি বলেন যে, কেরালার ডিপার্টমেন্ট অব হোমিওপ্যাথি RAECH (Rapid Action Epidemic Control Cell, Homoeopathy) এর মাধ্যমে তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করছে- যারা কেরালাতে অফিসিয়ালি সমস্ত এপিডেমিকের প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার ব্যাপারে দায়িত্ব পালন করে।
তিনি আরো জানান, “ইন্ডিয়ান হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল এসোসিয়েশন, ভিন্ন পর্যায়ে RAECH এর কাজে অংশগ্রহণ করে পুরো কেরালাতে এই ঔষধগুলো বিতরণে হোমিওপ্যাথিক ডিপার্টমেন্টকে সহযোগিতা করছে।”
প্রথম এম.এল.এ., যিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকায় প্রথম হোমিওপ্যাথিক ঔষধ বিতরণ শুরু করেন, সেই ভি. কে. প্রশান্ত- বিগত ডেঙ্গু জ্বর ও নিপা ভাইরাসের মহামারীর সময় থাকা থিরুভানানথাপুরামের মেয়র থাকাকালীন সময়ের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে জানান, অতীতে এই মহামারীগুলোতে যথাসময়ে হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদানে ব্যাপক সহযোগিতা হয়েছে।
তিনি বলেন, “হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ইমিউনিটিকে বৃদ্ধি করে বলে কেন্দ্র থেকে স্বীকৃত হয়েছে এবং রোগ প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করছে। প্রথম যখন আমি এ ব্যাপারে কথা বলি, ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলাম কিন্তু এখন রাজ্যজুড়ে চিকিৎসাটির ব্যাপক চাহিদা বর্তমান।”
Source: Kerala government distributes homeopathy medicine to boost immunity