নিজস্ব প্রতিবেদক:
মরণঘাতী করোনা ভাইরাস নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ ১৭ মার্চ থেকে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজের ক্লাস বন্ধ থাকার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ড। বোর্ডের কাম রেজিস্ট্রার সেক্রেটারি ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়।

এরআগে সোমবার করোনাভাইরাসের সতর্কতার অংশ হিসেবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখবার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এরআগে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি জানিয়েছিলেন। এ বিষয়ে বিকেলে আদেশ জারি করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন সময়টিতে শিক্ষার্থীরা যেন বাড়িতেই থাকেন সেটি নিশ্চিত করতে অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। বিষয়টি নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়া সব কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি বলেন,”শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা মানে এই নয় যে তারা সর্বত্র ঘুরে বেড়াবে, কোচিংয়ে যাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে যেন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না হয়। এটাকে হালাকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত দেশ করোনা সংক্রমিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন মহলে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি উঠেছিল। তবে শুরুতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল স্কুল-কলেজ বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তবে প্রয়োজন হলে বন্ধ ঘোষণা করা হবে।
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগী দু’জনই পুরুষ। একজনের ডায়াবেটিস ও ব্লাডপ্রেশারের সমস্যা রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এ দু’জনই বর্তমানে ভালো আছেন। শনিবার থেকে এ পর্যন্ত ২৭৫ জনকে বিমানবন্দর থেকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে ও গাজীপুরের পুবাইলে কোয়ারেন্টিনে রেখে পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাদের শরীরে লক্ষণ নেই তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
সারা দেশে ২ হাজার ৪৭১ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের ১ হাজার ৪৮, চট্টগ্রাম বিভাগের ১ হাজার ১৯৭, রাজশাহীতে ১৫, খুলনায় ৪৯, বরিশালে ২৯, ময়মনসিংহে ১৯, রংপুরে ২৫ এবং সিলেটে ৯ জন। যদিও আইইডিসিআরের হিসাব মতে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ২ হাজার ৩১৪ জন।
এছাড়া শনিবার থেকে এ পর্যন্ত ৪১৭ জনকে বিমানবন্দর থেকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে এবং গাজীপুরের পুবাইলে রেখে শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ আছে কিনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে শনিবার ইতালি থেকে আসা ১৪২ জনের শরীরে কোনো লক্ষণ না থাকায় তাদের নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। বাকিদেরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে নিজ বাড়িতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান।