অনুবাদ: ডা. পি. গুপ্ত:
প্রতিটি ব্যক্তির একটি কন্সটিটিউশনাল ঔষধ আছে কিনা সেই প্রশ্নটি হোমিওপ্যাথিক শাস্ত্রটির উদ্ভবের বেশ শুরুতেই স্বয়ং হ্যানিমান দ্বারাই উত্থাপিত হয়েছে, যেখানে তিনি বলেছেন- পূর্ণরূপে ও স্থায়ীভাবে আরোগ্যের জন্য আপনাদের ক্রনিক মায়াজমের তত্ত্ব অনুযায়ী নির্দেশিত “গভীর” ঔষধ প্রয়োজন হবে। [1]
হোমিওপ্যাথির দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরণের অভিব্যক্তির অর্থ কখনো পরিষ্কার করা হয়নি এবং কন্সটিটিউশনাল ঔষধ নিয়ে কথা বলার আগে, আমরা- হোমিওপ্যাথিতে – এই প্রকাশভঙ্গিটি দিয়ে সত্যিকারে কি বোঝাচ্ছি তা সুনির্দিষ্ট করা উচিৎ।
বহুসময় হোমিওপ্যাথিক সমাবেশে আমরা একটি প্রশ্ন শুনতে পাই, “আপনার কন্সটিটিউশনাল ঔষধ কোনটি?”, এমনকি আরো বাজে ব্যাপার যখন কেউ কোন ব্যক্তি তথাকথিত বিশেষজ্ঞকে জিজ্ঞেস করে, “কোনটি আমার কন্সটিটিউশনাল ঔষধ বলে আপনি মনে করেন?”। এ ধরণের আইডিয়া হোমিওপ্যাথিকে অবমূল্যায়িত করেছে এবং তাতে যাদুটোনা বা অগভীরতার একটি আবহ সৃষ্টি করেছে, যা আমাদের বিজ্ঞানটি প্রাপ্য নয়।
হ্যানিমানের আগে ও পরে বেশ কিছু লেখকবৃন্দ এই শব্দটির অর্থের ব্যাপারে যে বিভিন্ন রকমের প্রকারভেদ ও বর্ণনাগুলি প্রদান করেছেন, আমি তার মধ্যে ঢুকছি না বরঞ্চ দৈনন্দিন প্র্যাকটিসে এর সর্বোচ্চ বাস্তবমূখী ও প্রয়োগযোগ্য অর্থের ব্যাপারেটিতেই থাকছি।
এই বোধ অনুসারে, একটি ঔষধকে – এর লক্ষণতাত্ত্বিক হিসাব অনুসারে – তখনই কন্সটিটিউশনাল হিসাবে নির্দিষ্ট করা যায়, যেখানে ব্যক্তির সারাজীবনের মূল ক্রনিক ও একিউট লক্ষণাবলীকে এটি ধারণ করবে; এই বাস্তবতা সত্ত্বেও যে, এ প্রকারের ব্যক্তি তার জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে, বিভিন্ন নামকরণকৃত উপসর্গ, যেমন – otitis media, lumbago, sciatica, bronchitis, or psoriasis এ ভুগবে, তথাপি সর্বক্ষেত্রে নির্দেশিত ঔষধ একই থাকবে।
আমরা যদি এই সংজ্ঞায়নকে সঠিক বলে মেনে নিই, তাহলে প্রতিদিনকার প্র্যাকটিসের অভিজ্ঞতায় নিম্নোক্ত ব্যাপাগুরি দেখতে পাবো-
- বর্তমান সময়ের প্রায় এইসব কেইসের প্রায় কোনটিতেই, এই প্রকারের রোগী পাওয়া যাবে না অথবা বড়জোর অতি অতি অল্পসংখ্যক কেইসে এরকম দেখতে পাবো। এরা অত্যন্ত বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত খুব অল্প সমস্যা নিয়ে বেঁচে থাকা অত্যন্ত স্বাস্থ্যবান মানুষ। আজকের দিনে তাদেরকে প্রকৃত-বাস্তবে গ্রাম্য এলাকাগুলোতে ও পরিচ্ছন্ন আবহাওয়াযুক্ত পার্বত্য-অঞ্চলগুলোতে পাওয়া যাবে- যারা সভ্যতা থেকে দূরে একদম প্রশান্ত জীবনযাপন করছেন এবং ভীড়-কোলাহলময় শহরগুলোতে প্রায় কখনোই তাদের পাওয়া যাবে না।
- আগেরকার দিনে হয়তো এ ধরণের কেইসগুলো আরো ঘন ঘন দেখতে পাওয়া যেতো; মানুষজনকে আজকের দৈনন্দিন প্র্যাকটিসে আমরা যে-রকম পদস্খলিত স্বাস্থ্যজনিত অবস্থায় পাই- তার তুলনায় সে সময় তারা অনেক বেশি স্বাস্থ্যবান ছিলো।
- আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, আমাদেরকে যে বাস্তবতাটি বিবেচনা করতে হবে- আমাদের তত্ত্ব অনুসারে কোন ব্যক্তি যদি তার সঠিক ঔষধটি সেবন করে বা তার কন্সটিটিউশনাল ঔষধটি গ্রহণ করে- এরপর, অন্তত তত্ত্বগতভাবে, সে আরোগ্য হবে এবং তদনুযায়ী ব্যক্তিত্বের ধরণটিও পরিবর্তিত হবে। এখানে আবার যে প্রশ্নটি থেকে যায়- অন্য কোন ঔষধ কি রোগীটিকে (ভবিষ্যতে) এ ধরণের সহায়তা করতে পারবে, নাকি আমাদের প্রত্যাশা করতে হবে যে- এই ঔষধটিই তার ভবিষ্যতের সমস্ত সমস্যা দূর করবে?
কন্সটিটিউশনাল ঔষধ প্রয়োগ করার পর রোগী বাদবাকি জীবন ভালো থাকবে ধরলে, যেখানে মানুষ তাদের চমৎকার স্বাস্থ্যের লেভেলে থাকা সত্ত্বেও, প্রত্যেকেই অবক্ষয় ও মৃত্যুর অধীন- সেখানে আবারও তত্ত্বগতভাবে কথাটি তাহলে যথার্থ থাকে না। আরো বাজে ব্যাপার হয়, যদি ব্যক্তিটি কারো কাছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণের জন্য যাবার সময়ে ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্যের একটি বাজে অবস্থায় উপনীত হয়ে থাকে।
কাজেই, আমরা সহজেই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, আমরা প্রতিদিনই যে গভীর ক্রনিক রোগগুলোর মুখোমুখি হই, তাদের ক্ষেত্রে এ সংজ্ঞায়ন কোন অর্থবহন করে না।
যে কেইসগুলোতে, রোগী সত্যিই আগের চেয়ে ভালো হয়েছে বলতে পারার আগে আপনার দুইটি, তিনটি, চারটি এমনকি আরো বেশিসংখ্যক ঔষধ প্রয়োজন হয়- সেগুলোর ব্যাপারে তাহলে কি বলবেন?
এই তিনটি, চারটি বা পাঁচটি ঔষধ, যা হয়তো তিন, চার বা পাঁচ বৎসর ধরে চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে প্রেসক্রাইব করা হয়েছে, এদের কোনটিকে ‘কন্সটিটিউশনাল ঔষধ’ বলে বিবেচনা করা হবে?
স্পষ্টতই, এদের মধ্যে কোনটা কন্সটিটিউশনাল ঔষধ কিনা তা নিশ্চয়তার সাথে বলা সম্ভব নয়।
কিন্তু এই ঔষধগুলোর মধ্য থেকে যেটি সবচেয়ে ভালোভাবে সহায়তা করে, সেই বিশেষ ঔষধটিকে কি রোগীর কন্সটিটিউশনাল ঔষধ বলা যেতে পারে বলে আমরা ঘোষণা করতে পারি? তাকে ‘কন্সটিটিউশনাল’ ঔষধ বলার তাৎপর্য কি?
আবার, প্রশ্নটিকে ভিন্নভাবেও প্রকাশ করা যেতে পারে:
যদি কেউ একটি ক্রনিক কেইস শুরু করার জন্য একটি পরিচ্ছন্ন ঔষধ খূঁজে পেতে পারে, সেই ঔষধটিকে কি কন্সটিটিউশনাল ঔষধ বলা যেতে পারে?
এই প্রশ্নের উত্তরটিও জটিল, কারণ আমরা তাতে নিচের দ্বিধা-দ্বন্দগুলোর মুখোমুখি হচ্ছি-
যদি তথাকথিত কন্সটিটিউশনাল ঔষধটি দেবার পরে লক্ষণ পুনরায় ফিরে আসে, সেখানে বিভিন্ন সম্ভাবনা থাকে:
ক) যদি আগের ঔষধটিই নির্দেশিত হয়, এবং প্রত্যাবর্তিত লক্ষণযুক্ত কেইসের রোগীর তাতে উপকার হয় ও এই ব্যাপারটি যদি তৃতীয় বারের মতো ঘটে- আমরা কি তাহলে বলতে পারবো যে, এটা তার কন্সটিটিউশনাল ঔষধ?
খ) এ প্রকারের ঔষধ প্রয়োগের পরে, লক্ষণের প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রটিতে একটি সম্ভাবনা থাকে যে- প্রথম ঔষধটি ভালো কাজ করা সত্ত্বেও, রোগীর লাগাতার উন্নতির লক্ষ্যে সেই ঔষধটির কাজকে সম্পূর্ণ বা সম্পূরক করার জন্য পরবর্তী ঔষধ হিসাবে- একটি ভিন্ন ঔষধ প্রয়োজন হবে। এ ধরণের একটি কেইসে কি আমরা প্রথম ঔষধটিকে কন্সটিটিউশনাল ঔষধ বলতে পারি?
গ) এমন একটি সম্ভাবনা থাকে যে, দ্বিতীয় ঔষধটি কিছু উপশম প্রদান করেছে কিন্তু তৃতীয় ঔষধটি যেন রোগীর সত্যিকারের উপকার করেছে। আমরা কি বলতে পারি, তাদের কন্সটিটিউশনাল ঔষধ ছিলো তৃতীয়টি?
ঘ) আজকের দিনের কেইসগুলোতে আমরা বারংবার দেখতে পাই যে, একটি ঔষধ একটি কেইসের শুরুতে পরিচ্ছন্নভাবে নির্দেশিত হওয়া সত্ত্বেও সেই ঔষধটি দেয়ায় কোন উন্নতি আসে না, অতঃপর তার লক্ষণাবলীর নাটকীয় পরিবর্তন হয়ে পরবর্তীতে অন্য একটি ঔষধের প্রয়োজন পড়ে। এ ধরণের একটি কেইসে, আমরা কি প্রথম বা দ্বিতীয় ঔষধটিকে কন্সটিটিউশনাল বলতে পারি?
সবশেষে আমরা বলতে পারি, যে ঔষধটি রোগীর প্রধান ঔষধ হিসাবে সবচেয়ে বেশি উপকার করবে- তাকে আমরা কন্সটিটিউশনাল ঔষধ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারি।
কিন্তু একটি ঔষধ প্রতিটি রোগীর প্যাথলজির নির্দিষ্ট পর্যায়গুলোতে, প্রতিটি সময়ই নির্দেশিত না হলে এবং সেই ঔষধটির প্রয়োগে, রোগীটির সর্বোচ্চ উপকার সাধন না হলে- এ ধরণের বক্তব্যের কোন মানে নেই। অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, প্রতিটি জটিল কেইসে ঔষধ প্রয়োগের একটি নিঁখূত ধারাবাহিকতা থাকে; কেইসটি স্টাডি করে এবং এর লক্ষণাবলীর একটি যথার্থ মূল্যায়ন করে যাকে উৎঘাটন করা উচিৎ; এবং আজকের জটিল কেইসগুলোতে কোন আরোগ্য সম্পাদনে সক্ষম হতে চাইলে, সেই ধারাবাহিকতা অনুসরণ করে- ঔষধটি সঠিক সময়ে, সঠিক শক্তিতে প্রয়োগ করতে হয়।
এখানে এই প্রক্রিয়াটির পুরো ব্যাখ্যা প্রদান করা অসম্ভব এবং এর মূলকথাগুলো আমার বই ‘A New Model for Health and Disease’ এ পাওয়া যাবে। এটিও সম্ভব নয় যে, আলোচ্য বিষয়টির সমস্ত জটিল দিকেগুলো এই সংক্ষিপ্ত আলোচনায় প্রদান করি।
ইতোমধ্যে ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথির শিক্ষার্থীগণ বুঝতে পেরেছেন যে, একটি ঔষধের অনন্য একটি চিত্র-গঠনে কিছু লক্ষণ ও চিহ্ন সমন্বিতরূপে থাকে। আবার এধরণের বর্ণনাগুলোকেও সাধারণত “বিশুদ্ধ” টাইপ বা, ইচ্ছেমাফিক ‘কন্সটিটিউশনাল’ টাইপ বলে উল্লেখ করা হয়। এটি ঔষধটির সাইকো-প্যাথলজির ‘মৌলিক চিত্র’ (Essential picture)।
আমাদের জন্য এটিও উপলব্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ যে, প্রতিটি ব্যক্তি কিছু নির্দিষ্ট প্যাথলজির প্রতি একটি প্রবণতা প্রদর্শন করতে পারে কিন্তু কখনোই হয়তো প্যাথলজিটির বিকাশ ঘটাবে না; অন্যভাবে আমরা বলতে পারি, যতক্ষণ না সে লক্ষণাবলী প্রকাশ করছে, ততক্ষণ সে অসুস্থ নয়। তথাপি তার মানসিকতা ও অনুভূতিগত গঠন-কাঠামো ও তার সাথে কিছু রোগের পূর্বলক্ষণস্বরূপ থাকা শারীরিক লক্ষণগুলো যোগ করে ঔষধ নির্ণয় করা যেতে পারে- যে ঔষধটি এগুলোকে ধারণ করতে পারে।
কাজেই, একটি কন্সটিটিউশনাল ঔষধ হচ্ছে- যা আসলে প্যাথলজি প্রকাশ করাকে রোধ করবে। উদাহরণস্বরূপ, কারো কারো মিষ্টির প্রতি অস্বাভাবিক আকাঙ্ক্ষা, বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠে দুর্বলতা, পানির তীব্র পিপাসা থাকা সত্ত্বেও বার বার সামান্য পরিমাণ পানি পান করা এবং বিকেলের কয়েক ঘণ্টা সামান্য উদ্বেগের আগমন লাইকোপোডিয়ামের ব্যবস্থাপত্রের ইঙ্গিত প্রকাশ করে- যদিও বাস্তবে ল্যাবরেটরি পরীক্ষাগুলোতে এখনো প্রকৃত ডায়াবেটিস মেলিটাস ধরা পড়েনি।
কিন্তু খোদ হ্যানিমানের তত্ত্বানুসারে, দশ বৎসর পর এ ধরণের একটি ব্যক্তি অবশেষে হয়তো দ্বিতীয় পর্যায়ের প্যাথলজি হিসাবে মেডোরিনামের ইঙ্গিতবাহী লক্ষণাবলী যুক্ত একটি ভিন্ন প্যাথলজির বিকাশ ঘটাতে পারে; তাহলে আবারও এখানে লাইকোপোডিয়াম নাকি মেডোরিনাম – কোনটি কন্সটিটিউশনাল ঔষধ হবে, সেই প্রশ্নটি উত্থাপিত হয়।
সুতরাং উপর্যুক্ত সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ থেকে এটি স্পষ্ট যে, ‘কন্সটিটিউশনাল’ ঔষধের অর্থটি ঘোলাটে; বরঞ্চ এটা বলাই ভালো যে, এ পর্যন্ত কয়েক জেনারেশনের হোমিওপ্যাথগণ ব্যাপারটিকে সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন এবং আমার বিশ্বাস ভবিষ্যতেও এই কাজটি চলতে থাকবে।
পাবলিক কোর্স থেকে দেয়া এখানে কিছু উদাহরণ। কেইসগুলো ভিডিওতে ধারণ করা।
৩ বৎসর বয়সের এক শিশুর কেইস ভিডিও আকারে ১৯৯০ সালে জার্মানির সেলেতে প্রদর্শন করা হয়, যেখানে একটি তীব্র জেনেরালাইজড নিউরোডার্মাটাইটিসের সাথে কলিয়াক ডিজিজের ক্ষেত্রে, কোন রকমের প্রতিক্রিয়া ছাড়াই কয়েকটি ঔষধ প্রদান করা হয়, যার মাধ্যে পালসেটিলাও ছিলো। আমি যখন তাকে দেখলাম, টিউবারকুলিনাম প্রেসক্রাইব করলাম, যা তার পরিপাকের ক্ষেত্রে সামান্য উপশম সাধন করে, ডার্মাটাইটিসে একটি তীব্র বৃদ্ধি সঞ্চার করলো। ছয়মাস পরে যখন আবার আমি কেইসটি দেখলাম- চিকিৎসা চলমান সময়টিতে তার লক্ষণাবলীর পরিবর্তন হয়েছে এবং বর্তমানে সে পরিচ্ছন্নরূপে পালসেটিলা। এটি প্রয়োগে তার নিউরোডার্মাটাইটিসের লক্ষণাবলীতে অতিদ্রুত একটি উপশম প্রদান করলো এবং তার পরিপাকসংক্রান্ত সমস্যাগুলোতেও আরো উপশম সাধন করলো।
অভিজ্ঞতা বলে যে, এই শিশু, বড় হবার সাথে সাথে তার মাঝে মাঝে দেখা দেয়া সমস্যাগুলোর ক্ষেত্রে আরো কিছু ঔষধ প্রয়োজন হবে। তার কনস্টিটিউশনাল ঔষধ কোনটি? টিউবারকুলিনাম? কিন্তু এটি আরোগ্য নয়- একটি উপচয় সৃষ্টি করেছিলো; কিন্তু তারপরও সেটি ছিলো পালসেটিলার ক্রিয়াশীল হবার জন্য অপরিহার্য অন্তবর্তীকালীন ঔষধ।
অন্য আরেকজন, তীব্র ক্রনিক মাথাব্যথায় ভোগা ৪০ বৎসর বয়স্ক মহিলার কেইস, যেখানে কয়েকটি ঔষধ কোন প্রতিক্রিয়া ছাড়াই প্রয়োগ করা হয়েছিলো- যার মধ্যে লাইকোপোডিয়াম ও ন্যাট্রাম মিউরিয়াটিকাম ছিলো। আমার প্রথম কনসালটেশনে তাকে চেলিডোনিয়াম প্রদান করা হয়েছিলো- যা থেকে তেমন কোন উপশম ছাড়াই তার তীব্র উপচয় দেখা দেয়; পাঁচ মাস পরেও সেখানে আপাতদৃষ্ট কোন উপশম ছিলো না কিন্তু লক্ষণগুলি পরিবর্তিত হয়ে আরো সুস্পষ্টরূপে লাইকোপোডিয়ামের দিকে নির্দেশ করে- এবং যার প্রয়োগ তাকে একটি লক্ষণীয় উপশম দান করে; সবশেষে সে নেট্রাম মিউরিয়াটিকাম গ্রহণ করে, যা দেড় বৎসরব্যাপী চলমান এই কেইসটির চিকিৎসাটিকে সমাপ্ত করে। কোনটি কনস্টিটিউশনাল ঔষধ ছিলো? চেলিডোনিয়াম? তাহলে সেটি কেন আরোগ্য করলো না এবং কেন তাকে লাইকোপোডিয়াম ও নেট্রাম মিউরিয়াটিকাম দিয়ে সম্পন্ন করতে হলো? এটা কি নেট্রাম মিউর অথবা লাইকোপোডিয়াম ছিলো? তাহলে কেন সেগুলো প্রথমবার দেবার পর আরোগ্য করেনি?
সুতরাং যে সমস্ত রোগী কয়েক বৎসর ধরে হোমিওপ্যাথিতে নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন, তাদের জীবন থেকে আমরা দেখতে পাই- একটি ঔষধ হয়তো সবথেকে বেশি সহযোগিতা করতে পারে কিন্তু তার অন্য ঔষধগুলোর সহায়তাও দরকার হয়।
References:
- Hahnemann SC. Organon of Medicine 81 – Constitution
- Vithoulkas G. A New Model for Health & Disease – Page 142, aph. 41
Discussion about this post