সম্পূর্ণ নাম: এন্টিমনিয়াম টার্টারিকাম
কিংডম: মিনারেল (খনিজ)
মূল বৈশিষ্ট্য: সোরিক, সাইকোটিক, টিউবারকুলার, সিফিলিটিক, গরমকাতর, পলিক্রেস্ট, বাম পাশে বেশি আক্রমণ করে, ক্রনিক রোগে ব্যবহৃত হতে পারে, শিশুরোগে খুব বেশি প্রয়োজন হয়, উপরে ডানপাশে নিচে বামপাশে কিংবা উপরে বামপাশে, নিচে ডানপাশে এরকম আড়াআড়ি লক্ষণ প্রকাশ প্রবণতা আছে।
উপাদান: কার্বন, অক্সিজেন, পটাসিয়াম, এন্টিমনি
সাধারণ গ্রুপ: টার্টারিকামস
প্রথম কথা: রেসপিরেটরি ট্র্যাকের সর্দি ও মিউকাস সঞ্চয়। বুকে ভেজা মিউকাসের ঘরঘর ও কর্কশ শব্দ হয়, মনে হয় অনেক মিউকাস জমে আছে কিন্তু অল্প মিউকাস অনেক কষ্টে উঠাতে পারে কিংবা একেবারে উঠাতে পারে না। দমবন্ধ হয়ে আসে। সায়ানোসিস দেখা দেয়। রুক্ষ, খিটখিটে মেজাজ। তীব্র তন্দ্রাচ্ছন্নতা।

সাধারণ নাম:
-Tartar Emetic
-Tartrate of Antimony and Potash.
উত্তেজক কারণ: রাগ, বিরক্তি, টিকা গ্রহণ, আর্দ্রস্থান, অমিতাচার, খাওয়ার পর।
বৃদ্ধি: সন্ধ্যায়, রাত্রে শোয়ার পর, উষ্ণতায়, ভেজা ঠান্ডা আবহাওয়ায়, টক খাদ্যে ও দুধে, সকালে, বসে থাকলে, বসা থেকে উঠতে গেলে, বসন্তকালে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়।
হ্রাস: সোজা হয়ে বসে থাকলে, শ্লেষ্মা ফেলতে পারলে, ঢেকুর তুললে, বমির পরে, ডান কাতে শুলে, নড়াচড়ায়, ঠান্ডা খোলা বাতাসে।

মন: একা থাকতে ভয়। বাজে মেজাজ, হতাশ। সামান্যতেই ভয় পায়। বিড়বিড় করে প্রলাপ বকে। ঘুম থেকে উঠে কি করবে, কোথায় আছে বুঝতে পারে না। উদাসীনতা; খুব সহজেই বিরক্ত হয়, একা থাকতে চায়। রুক্ষ আচরণ; কোঁকায়, ঘ্যান ঘ্যান করে। আরোগ্যের ব্যাপারে হতাশ।
শিশু সবসময়ই তাকে সোজা করে কোলে রাখতে বায়না করে। তার দিকে কারো তাকানো পছন্দ করে না, কারো স্পর্শ পছন্দ করে না। মা কিংবা তার ঘনিষ্ঠজনের সাথে সবসময় লেগে থাকে; সঙ্গ ছাড়তে চায় না। চোখ বন্ধ করলে অচেতনের মতো হয়ে যায়।
তীব্র বিষণ্নতা, অসংখ্য দুঃখকষ্টের ব্যাপারে অভিযোগ করে। বদমেজাজি, ঘ্যান ঘ্যান করে এবং রোগাক্রমণের আগে কান্না করে। অস্থির বাচ্চা, কোলে নিয়ে থাকলে শান্ত থাকে।

নির্দেশক লক্ষণ:
- গ্রভোগলের হাইড্রোজেনয়েড কন্সটিটিউশনযুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বেশি প্রযোজ্য, জড়তাগ্রস্ত, ফ্ল্যাগমেটিক।
- শিশুদের ও গাউট-আক্রান্ত ও মদ্যপায়ী বৃদ্ধদের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় বেশি প্রয়োগ হয়।
- টিকার পরে যখন সাইলিশিয়া নির্দেশিত হচ্ছে না এবং অন্য ঔষধগুলোও ব্যর্থ হয়।
- সমস্ত সমস্যার সাথে অপ্রতিরোধ্য তন্দ্রাচ্ছন্নতা থাকে।
- একদমই পিপাসা থাকে না।
- বমির ভাব, বমি, শীতলতা ও ঘুম ঘুম ভাব।
- যে কোন অবস্থায়ই ঘামের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়।
- প্রতিক্রিয়াশক্তির অভাবযুক্ত ব্যক্তি।
- মাথা ঘোরানো ঘুম ঘুম ভাব, মনের বিশৃঙ্খল অবস্থা ও জড়তার সাথে পর্যায়ক্রমে দেখা দেয়।
- কপালে মনে হয় ফিতা বা এরকম কোন কিছু দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।
- মাথা গরম ও ঘামযুক্ত।
- চোখ বসে যায়, চারদিকে কালো ছোপ পড়ে, ঠোট ফ্যাকাসে ও কুঁচকানো।
- নাকের পাখা ছড়ানো ও উঠানামা করে, ভেতরে কালচে ঝুলের মতো রং ধারণ করে।
- মুখ দেখে মনে হয়, ভীষণ কষ্টে ভুগছে, উদ্বেগজনক হতাশা।
- মুখমন্ডল – শীতল, কালচে, ফ্যাকাসে, ঠান্ডা ঘামযুক্ত।
- থুতনী ও নিচের চোয়ালের লাগাতার কম্পন।
- জিহ্বা আঠা আঠা, ঘন সরপড়া কিন্তু প্যাপিলাগুলো লাল এবং জিহ্বার প্রান্তও লাল কিংবা জিহ্বায় লাল ডোরাকাটা। জিহ্বার মাঝখানে শুকনো। জিহ্বায় দাঁতের ছাপ পড়ে।
- প্রেগনেন্সিকালীন সময়ে লালা-নিঃসরণ।
- হাই দেবার পরও মুখ খোলাই থাকে।
- আপেল, টক খাবার, টক ফল, টক খাদ্য, ও মদজাতীয় পানীয়ে আকাঙ্ক্ষা।
- দুধ ও তামাকে বিতৃষ্ণা।
- বমির ভাব ও বমি বিশেষ করে খাবারের পরে সাথে মারাত্মক দুর্বলতা ও অবসন্নতা থাকে। থেকে থেকে বমির ভাব। বমির ভাবটি প্রি-করডিয়াল এলাকায় চাপের অনুভূতিসহ একটি ভয়ের অনুভূতি সৃষ্টি করে এবং এরপর মাথাব্যথার সাথে হাই-ওঠা ও চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু হয়। ডান কাত ছাড়া অন্য কোন কাতে শুলে বমি হয়। খুব জোরসে বমি হয়, ছিটকে যায় এরপর ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে যায়। ঢেকুরে পচা ডিমের গন্ধ।
- আক্ষেপযুক্ত পেটব্যথা, প্রচুর বায়ু নিঃসরণ হয়।
- কলেরা মরবাস। উদ্ভেদযুক্ত রোগের সাথে ডায়রিয়া।
- এন্টিম টার্ট বিশেষ করে ব্রঙ্কাই ও ফুসফুসের মিউকাস মেমব্রেনকে আক্রমণ করে।
- বুকে প্রচুর পরিমাণে মিউকাস জমিয়ে কর্কশ ঘরঘর শব্দ তৈরি কর ও বুদবুদের মতো শব্দ হয়; যে কারণে শ্বাসকষ্ট হয় এবং হৃদপিন্ডের ক্রিয়াও স্তিমিত হয়, রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। এসমস্ত কারণে সায়ানোসিস দেখা দেয়, জীবনীশক্তির ব্যাপক ঘাটতি দৃষ্ট হয়।
- বুক ও ব্রঙ্কিয়াল টিউব মনে হয় মিউকাসে বোঝাই হয়ে আছে কিন্তু তা বের করা যায় না।
- দ্রুত, ছোট ছোট, কষ্টকর শ্বাসপ্রশ্বাস, পেট লেগে আসে, যেন শ্বাস কাটতে পারছে না। কাশতে ও শ্বাস নিতে উঠে বসতে হয়।
- কাশির পরে বমি বা ঘুম দেখা দেয়।
- বৃদ্ধব্যক্তিদের এম্ফিসেমা।
- ফুসফুসের প্যারালাইসিস অবস্থা ও শোধ।
- কাশি খাওয়ার পর বৃদ্ধি পায়, সাথে বুকে ও ল্যারিংসে ব্যথা থাকে। ভোর তিনটায় বৃদ্ধি।
- শ্বাসকষ্ট ঢেকুরে কমে, ডান পাশে শুলে কমে।
- নবজাতকের শ্বাসকষ্ট, জন্মের সময়ই ফ্যাকাসে। দুধ টানতে পারে না, মনে হয় শ্বাসের অভাবে কান্না করছে।
- শিশু রাগ করলে কাশি শুরু হয়। কাশির সাথে পেছনের দিকে বেঁকে যায়।
- শ্লেষ্মা ঘন ও সাদা।
- ব্রঙ্কিয়াল টিউবের সকল সমস্যায় পিপাসাহীনতা থাকে, তার সাথে প্রচুর পরিমাণে মিউকাস নিঃসরণ হয় ও বুকে খুব বেশি ঘরঘরে শব্দ থাকে।
- অস্বস্থিকর গরম অনুভূতির সাথে বুক ধরফর করা। পালস দ্রুত, দুর্বল ও কম্পনশীল। মাজায় প্রচণ্ড ব্যথা, ভারী কিছু তুললে বৃদ্ধি হয়। সামান্য নড়াচড়াও বমির ভাব, শীতলতা ও আঠা আঠা ঘাম সৃষ্টি করে।
- ককসিসে ভারী অনুভূতি, সবসময় নিচের দিকে টানছে মনে হয়।
- মনে হয় মেরুদন্ডের হাড় একটি আরেকটির সাথে ঘষা খাচ্ছে।
- সারা শরীরের কম্পন।
- গান শুনলে শীতবোধ, পেশীর সংকোচন ও ব্যথা অনুভব হয়।
- উদ্ভেদ উঠতে না পারায় আক্ষেপ দেখা দেয়।
- পূঁযযুক্ত উদ্ভেদ, সারার পর নীলচে লাল দাগ রেখে যায়।
- স্মলপক্স।
- লিঙ্গের মাথায় আঁচিল।

কি-নোটস:
১. আপেল খাবার দুর্দমনীয় ইচ্ছা।
২. প্রচুর ঘরঘরে শব্দ কিন্তু শ্লেষ্মা উঠে না।
৩. বুকে কর্কশ ঘরঘরে শব্দ মনে হয় মারা যাচ্ছে।
৪. ডান কাত বাদে অন্যভাবে শুলে বমি হয়।
অবশ্য স্মরণযোগ্য: নিউমোগ্যাস্ট্রিক নার্ভের উপর ক্রিয়া করে তা শ্বাসযন্ত্র ও রক্তপরিচলনকে স্তিমিত করে, শ্বাসযন্ত্রে প্রচুর পরিমাণ শ্লেষ্মাসঞ্চয় করে, প্রচুর ঘরঘরে শব্দ সৃষ্টি করে। ভয়ংকর ঘরঘরে শব্দ কিন্তু শ্লেষ্মা উঠে না। বমির ভাব, বমি, শীতলতা, তন্দ্রাচ্ছন্নতা, অবসন্নতা, ঘাম- এগুলো ঔষধির মূল বৈশিষ্ট্য।
নিশ্চিতকারী লক্ষণ:
- সমস্ত রোগলক্ষণের সাথে অপ্রতিরোধ্য তন্দ্রাচ্ছন্নতা থাকে।
- শ্বাসযন্ত্রে প্রচুর শ্লেষ্মা জমে কিন্তু তা উঠে না।
- আপেল খাবার দুর্দমনীয় আকাঙ্ক্ষা।
- জিহ্বার উপর ঘন, সাদা, আঠা আঠা সর কিন্তু প্যাপিলা লালচে, জিহ্বার প্রান্ত লাল বা জিহ্বায় লাল ডোরাকাটা।
- ডানকাত ছাড়া অন্য কোন কাতে শুলে বমির ভাব ও বমি।
- ব্রঙ্কিয়াল টিউবের সমস্যায় একদমই পিপাসাহীনতা।
- মাজায় প্রচণ্ড ব্যথা, ভারী কিছু তুললে বৃদ্ধি, সামান্য নড়াচড়ায় বমির ভাব ও ঠান্ডা আঠা আঠা ঘাম দেখা দেয়।
- স্মল পক্সে পূঁযযুক্ত উদ্ভেদ।
ক্লিনিক্যাল কন্ডিশন: -Bronchitis, Chicken pox, Chronic obstructive pulmonary disease, Congestive heart failure, Cyanosis, Impetigo, Pertussis, Pneumonia, Respiratory infections, Sepsis.
মনে রাখার মতো টিপস
১. ইম্পেটিগোর জন্য Ant-t 30 or 200 প্রায় স্পেসিফিক ঔষধ – Dr. Foubister
২. টিকার দেবার কুফলে থুজা বা সাইলিসিয়া নির্দেশিত না হলে এটির ব্যবহারের ক্ষেত্র পাওয়া যায়।
৩. যেখানে নির্দেশিত হচ্ছে কিন্তু শিশু খুব সহজে বাগে আসছে না খোনে কাশির জন্য হিপার সালফের প্রয়োজন হয়।
সম্পর্কযুক্ত ঔষধ:
তুলনীয় ঔষধ: Aescul, Ammc, Kali-s, Hippoz, Ip, Laur, Lob, Op, Seneg, Stann
ক্রিয়ানাশক: Puls, Sepia
সম্পূরক: Bar-c, Ip, Op
যে ঔষধগুলোর দ্বারা এর ক্রিয়া নষ্ট হয়: Asaf, Chin, Cocc-ind, Con, Merc, Op, Rhus-t, Sep

Discussion about this post