কিংডম: উদ্ভিদ
ক্লাস টাইপ: অ্যালোসিয়াই (Aloaceae)
মূল বৈশিষ্ট্য: গরমকাতর, বামপাশে বেশি আক্রমণ করে- বাম থেকে ডানদিকে রোগের বিস্তার ঘটে, তরুণ ও ক্রনিক রোগে ব্যবহৃত হয়।
ঔষধে ব্যবহৃত হয়: গাছের রস ও আঠা
প্রধান কথা: পায়খানা ধারণক্ষমতা সম্বন্ধে অনিশ্চয়তা, শিরাতে রক্তসঞ্চয় ও শিথিলতা, পায়খানার পর ক্ষুধা
উত্তেজক কারণ:
- অলস ও বিশৃঙ্খল জীবনযাপন, অতিরিক্ত বসে থাকাযুক্ত কাজ ও পেশা।
- ঝিনুক খাওয়া।
- দীর্ঘদিন ধরে মদ্যপানের অভ্যাস।
- গ্রীষ্মকাল।
বৃদ্ধি: গ্রীষ্মকাল, শুকনো-উত্তপ্ত আবহাওয়া, ভোরের সময়, খাওয়া বা পান করার পর, হাঁটলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে।
হ্রাস: ঠাণ্ডা-খোলা বাতাসে, ঠান্ডা প্রয়োগে
মানসিক লক্ষণাবলী:
- মানসিক শ্রমে অনীহা- এতে দুর্বল হয়ে পড়ে।
- শিশুরা বেশ হাসিখুশি, আবেগপ্রবণ কিন্তু ব্যথায় অত্যন্ত কাতর।
- ব্যথার সময় বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে রোগী রেগে থাকে, খিটখিটে থাকে।
- জীবনকে একটা বোঝা মনে হয়- ভাবে, এক সপ্তাহ পর মারা যাবে।
- তার রোগের চিন্তায় মশগুল থাকে। (বিশেষ করে, পায়খানা হয়ে যায় কিনা)
- খিটখিটে, অসন্তুষ্ট, সবসময়ই বিরক্ত। দেখতে শান্ত, উদাসীন ও সন্তুষ্ট মনে হলেও হঠাৎ রাগ প্রকাশ করে।
- মেনে নেয়ার মনোভাবের সাথে সহজেই উত্তেজিত হয়ে যাবার প্রবণতাটি পর্যায়ক্রমিকভাবে দেখা দেয়।
- তার মৃত্যুর সময় সম্বন্ধে আগেই ঘোষণা দেয় (বিশেষ করে তরুণ রোগে)।
- পায়খানার পর দুর্বলতা, উত্তেজিত ও বিরক্তিজনক মনোভাব।
নির্দেশক লক্ষণ:
- মানসিক ও শারীরিকভাবে পরিশ্রম করতে বিতৃষ্ণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
- রোগলক্ষণ ধীরে ধীরে প্রকাশ ও বৃদ্ধি পায়।
- অতিমাত্রায় দুর্বলতা ও ঘাম।
- মলদ্বারের স্ফিংটারের দুর্বলতার দরুন পায়খানার ধারণ-ক্ষমতায় ঘাটতি দেখা দেয়।
- জেলির মতো স্রাব: পায়খানায়, নাকের পেছনের অংশের (Post-nasal) স্রাবে।
- গরমে বৃদ্ধি, ঠান্ডা প্রয়োগে হ্রাস (এমনকি রোগী যদি শীতকাতরও হয়)।
- শরীরের উপরিতলে পূর্ণতাবোধ, রক্তসঞ্চয় (শিরাতে)।
- দলা-মতো কোনকিছুর অনুভূতি।
- শব্দে অনুভূতিপ্রবণ, বিশেষ করে গানে- যা তার মধ্যে কাঁপুনি সৃষ্টি করে।
- মাথাব্যথা, ঠান্ডা প্রয়োগে উপশম হয়।
- মাথার সমস্যাগুলো অন্যান্য সমস্যা, যেমন- পেট ও জরায়ুসংক্রান্ত লক্ষণ, মাজাব্যথা, অর্শ্বের সাথে পর্যায়ক্রমিকভাবে দেখা দেয়।
- কোষ্ঠকাঠিন্যের সময় লক্ষণসমূহের বৃদ্ধি।
- জুসজাতীয় খাদ্য, ফলমূল- বিশেষ করে আপেল এবং লবণাক্ত খাদ্য পছন্দ।
- পায়খানার পরে অত্যন্ত ক্ষুধা- বিশেষ করে ডায়রিয়ার পরে।
- খাবার পরে মলদ্বারে স্পন্দন অনুভব।
- টক খাদ্য ও বিয়ারের পর বদহজম।
- রাগ চেপে রেখে সমস্যার উদ্ভব।
- পায়খানার পুর্বে পেট ফুলে যায়, ভারীবোধ হয় ও পেটে ভুটভাট শব্দ হয়।
- পেট গরম অনুভূত হয়।
- মনে হয়, এই বুঝি পায়খানা হয়ে গেলো। পেটের চামড়ায় স্পর্শ করলে বা পায়খানার সময় কোঁথ দিলে- থেঁতলানো ব্যথা অনুভূত হয়। জ্বালাকর বায়ু নির্গমনের পর পেটব্যথা হ্রাস পায়।
- এনাল স্ফিংটারের দুর্বলতা। বায়ু নির্গমনের সময় বা প্রস্রাব করার সময়, অনিচ্ছাকৃতভাবে পায়খানা হয়ে যায় এবং এজন্য এসময়গুলোতে রোগী ভয়ে ভয়ে থাকে।
- ঝিনুক খাবার পরে, গ্রীষ্মকালে, মদ্যপানের পর ডায়রিয়া- পেটে ভুটভাট ইত্যাদিরকম শব্দ করে, পায়খানার পূর্বে মলদ্বারে ভারীবোধ।
- পায়খানায় কোঁথ দিতে হয়- সময় লাগে।
- পায়খানার পর ক্ষুধার সাথে প্রচণ্ড অবসন্নতা, এমনকি অজ্ঞান পর্যন্ত হয়ে যায়।
- হঠাৎ করে পায়খানার বেগ, পায়খানা ধরে রাখতে পারে না। হঠাৎ করে একসাথে অনেকটুকু পানির মতো তরল পায়খানা হয়ে যায়।
- ভোরে পায়খানার চাপে ঘুম ভাঙ্গে, মনে হয় এই বুঝি পায়খানা হয়ে গেলো; বিছানা থেকে উঠে (বদনা ছাড়াই) দৌড়াতে হয়।
- মলদ্বার দিয়ে রস ঝরে।
- স্বাভাবিক পায়খানাও অজান্তে নির্গত হয়।
- আঙ্গুরের থোকার মতো করে অর্শ্ব নির্গত হয়, ঠান্ডা প্রয়োগে উপশম।
- পেলভিসে মনে হয় একটি গোঁজ লাগানো আছে।
- মাথার সমস্যা মাজাব্যথা বা পেটের সমস্যার সাথে পর্যায়ক্রমিকতায় দেখা দেয়।
- কথা বলার সময়, ঘুমের মাঝে অজান্তে অনিচ্ছাকৃতভাবে বায়ুর সাথে পায়খানা হয়ে যায়; এই সমস্যার কারণে রোগী রাগান্বিত ও লজ্জিত থাকে।
- ডায়রিয়া: ভোর ৫-৬ টায় বৃদ্ধি, বিছানা থেকে পায়খানার বেগে দৌড়তে হয় (Podo, Sulph); কাঁচা ফল, বিয়ার, ঝিনুক, অতিউত্তাপে, ঋতুস্রাবের আগে, বিরক্তিজনক মানসিক অবস্থায় ডায়রিয়া দেখা দেয়। দাঁড়ালে বৃদ্ধি পায়; উপুর হয়ে শুলে আরাম লাগে। পায়খানা জ্বালাকর, জেলির মতো পদার্থ থাকে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য।
- ধ্বজভঙ্গ
- কাশি- উপুর হয়ে শুলে কমে, বসা থেকে দাঁড়ালে বাড়ে।
কি-নোটস:
পায়খানায় স্বচ্ছ, জেলির মতো মিউকাসের দলা।
নিজের মলদ্বারের উপর আস্থা থাকে না- বিশেষ করে ভোরে।
কেটে নেয়া, খামচে ধরা, শূলের মতো ব্যথা।
পায়খানা কম- বায়ু বেশি।
মাজাব্যথা, অর্শ্ব ও মাথাব্যথা পরস্পর পর্যায়ক্রমিকতার সাথে দেখা দেয়।
প্রতি শীতে চুলকানি ও গরমে ডায়রিয়া দেখা দেবার প্রবণতা থাকে।
যে ক্ষেত্রগুলোর কথা বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে:
শিরাতে রক্তসঞ্চয়- মলদ্বারে পূর্ণতাবোধ, ভারীবোধ।
মলদ্বার বেরিয়ে আসে, অর্শ্ব, মনে হয়- মলদ্বার নিচের দিকে ঝুলে যাচ্ছে।
মলধারণ ক্ষমতার দুর্বলতা- বিছানা থেকে পায়খানার চাপে দৌড়ে পায়খানায় যেতে হয়।
মাজাব্যথা, অর্শ্ব ও মাথাব্যথা পরস্পর পর্যায়ক্রমিকতার সাথে দেখা দেয়।
নিশ্চিতকারী লক্ষণ:
- পায়খানার কারণে কাপড় নষ্ট করে ফেলার ভয়।
- পায়খানার আগে পেটে ভারীবোধ, ভুটভাট শব্দ।
- ডায়রিয়ার সময় ক্ষুধাবৃদ্ধি।
- পায়খানার পর দুর্বলতা।
- জেলির মতো মিউকাস।
- অর্শ্বের সাথে মাজাব্যথা পর্যায়ক্রমে দেখা দেয়- ঠান্ডা প্রয়োগে উপশম।
তুলনীয় ঔষধ: Lil-t, Pod, Sep, Sulph
সম্পূরক ঔষধ: Sulph
এন্টিডোট: Sulph, Opium
Discussion about this post